ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

নিহত ব্যবসায়ীকে নিয়ে আওয়ামী লীগ-বিএনপির কাড়াকাড়ি!

  চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৪ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৬:১২  
আপডেট :
 ০৪ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৬:১৪

নিহত ব্যবসায়ীকে নিয়ে আওয়ামী লীগ-বিএনপির কাড়াকাড়ি!

চট্টগ্রাম মহানগরীর সদরঘাট থানার মাদারবাড়ির মরিচ্যাপাড়া এলাকায় নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে দূর্বৃত্তের গুলিতে নিহত পরিবহন ব্যবসায়ী হারুনকে (৪০) নিয়ে কাড়াকাড়ি করছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি নেতারা বলছেন, ব্যবসায়ী মো. হারুন সদরঘাট থানা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক। আর সদরঘাট ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসান মুরাদ বিপ্লব বলছেন, হারুন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।

রোববার সন্ধ্যা ৬ টার দিকে দূর্বৃত্তের ছোড়া গুলিতে গুরুতর আহত হওয়ার পর ব্যবসায়ী হারুন প্রায় দেড় ঘন্টা পর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে মারা যান। এ ঘটনার পর নিহত হারুন চট্টগ্রামের প্রয়াত বিএনপি নেতা দস্তগীর চৌধুরীর ভাই আলমগীর চৌধুরীর ছেলে বলে নিশ্চিত হলেও তার রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে থেকে যায় ধোঁয়াশা। তবে চট্টগ্রামসহ দেশের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে সদরঘাট থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসান মুরাদ বিপ্লবের উদ্ধৃতিতে ব্যবসায়ী হারুন স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত বলে প্র্রকাশ পায়। আর এরপর টনক নড়ে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক স¤পাদক মাহবুবর রহমান শামীম, মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন ও সাধারণ স¤পাদক আবুল হাসেম বক্কর দূর্বৃত্তের গুলিতে নিহত ব্যবসায়ী হারুনকে সদরঘাট থানা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক দাবী করে রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে বিবৃতি পাঠান।

বিবৃতিতে বলা হয়, ঠান্ডা মাথায় নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ঢুকে যুবদল নেতা হারুনকে গুলি করে হত্যা করেছে আওয়ামী লীগের লোকেরা। চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায় হারুনকে খুন করা হয়েছে বলে দাবি করেন তারা।

বিবৃতিতে তারা বলেন, কয়েকদিন আগে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কতিপয় চিহ্নিত সন্ত্রাসী চাঁদা চাইতে গিয়ে হারুনের বাঁধার সম্মুখীন হন। ফলে ক্ষিপ্ত হয়ে আওয়ামী লীগের লোকেরা যুবলীগ-ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী দিয়ে এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে।

আর সদরঘাট ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব বলেন, নিহত হারুন বর্তমানে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আগে কোন এক সময় বিএনপির রাজনীতিতে সম্পৃক্ত থাকলেও তিনি পরে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। সে হিসেবে গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার আনন্দ শোভাযাত্রায় অংশ নেন হারুন।

তিনি বলেন, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত আনন্দ শোভাযাত্রায় আমি অগ্রভাগে ছিলাম। শোভাযাত্রা শেষে সন্ধ্যা ৬টার দিকে পেছনে হঠাৎ গুলির শব্দ শুনতে পাই। ছুটে গিয়ে দেখি নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে রক্তাক্ত অবস্থায় হারুন মাটিতে লুটিয়ে পড়ছে। তাৎক্ষনিকভাবে পুলিশকে খবর দিয়ে আমরা হারুনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে জরুরী ভিত্তিতে অপারেশন থিয়েটারে চিকিৎসার সময় হারুনের মৃত্যু ঘটে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জহিরুল ইসলাম বলেন, হারুনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় চমেক হাসপাতালে আনা হয়। তার বুকে তিনটি গুলি লেগেছে। অপারেশন থিয়েটারে নেওয়ার পর তার মৃত্যু ঘটে।

হারুনের বড় ভাই হুমায়ন চৌধুরী বলেন, আমার ভাই বিএনপি করতো। সে আওয়ামী লীগে যোগদান করেছে কি না তা আমার জানা নেই। তবে কয়েকদিন আগে কিছু লোক শুভপুর বাসস্টেশনে চাঁদাবাজি করতে গিয়েছিল। সে চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায খুন হয়েছে হারুন। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে পুলিশকে অনুরোধ করেছি আমি।

পুলিশ চাঁদাবাজিকে বিশেষ গুরুত্ব না দিয়ে তিন কাউন্সিলরের উপস্থিতিতে শোভাযাত্রার পেছন থেকে গুলি ছোঁড়ার ঘটনায় রাজনৈতিক বিরোধ দেখছেন। সদরঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মর্জিনা আক্তার এ প্রসঙ্গে বলেন, হারুন বিএনপি ঘেঁষা। আবার দল পরিবর্তনও করেছেন। এতে রাজনৈতিক বিরোধ হতে পারে।

তিনি বলেন, হারুন প্রভাবশালী পরিবারের ছেলেও। প্রভাব-প্রতিপত্তি নিয়েও কারো সঙ্গে বিরোধ থাকতে পারে। ব্যবসায়িক বিরোধও হতে পারে। বিষয়টি খতিয়ে দেখছি আমরা। অস্ত্রধারী দূর্বৃত্তদের খুঁজছে পুলিশ।

/এসকে/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত