ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

মাদারীপুরে ৩ টাকার আলু বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকায়

  মাদারীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৭ জানুয়ারি ২০১৮, ১৩:৩০

মাদারীপুরে ৩ টাকার আলু বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকায়

মাদারীপুর কোল্ড স্টোরেজে আলু বিক্রি হচ্ছে ২-৩ টাকা কেজি দরে। কিন্তু ক্রেতারা এই দামে পাচ্ছেন না। পড়ে আছে ১০ হাজার বস্তা আলু। প্রতি বস্তায় ৮০ কেজি। প্রতিবস্তা আলুর কোল্ডস্টোরেজের ভাড়া ৩’শ টাকা। তাই কোল্ডস্টোরেজের ভাড়া মেটাতে কৃষক বাধ্য হচ্ছে পুরো আলু দিয়ে দিতে। কোল্ডস্টোরেজ থেকে প্রতি কেজি আলু ২- ৩ টাকায় টাকায় বিক্রি হলেও খুচরা বাজারেই সেই আলুর দাম ১০-১৫ টাকা। আলুর এই অবস্থার জন্য অতিরিক্ত মজুদ, জেলার বাইরে থেকে আলু আমদানি ও বাজার মনিটরিংকে দায়ী করছেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা।

কৃষক ও ব্যবসায়ীরা জানান, বছরের শুরুতে আলুর বাম্পার ফলনে খুশি ছিলেন তারা। তাই মৌসুমে আলুর দাম কম থাকায় প্রায় ৬৫ হাজার বস্তা আলু মাদারীপুর কোল্ড স্টোরেজে মজুদ করে রাখে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। কিন্তু সেই আলুই এখন পথে বসিয়ে দিয়েছে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের। আলু মজুদ রাখার পর হতেই মূল্য বৃদ্ধির আশায় কোল্ডস্টোরেজে রেখে অপেক্ষা করতে থাকে তারা। কিন্তু আলুর দাম না বেড়ে দিন দিন আরও কমেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, যাদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও অর্থ ব্যয়ে ফসল ফলে, সেই কৃষকরা ন্যায্য মূল্য না পেলেও লাভবান হচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীরা। বাজার মনিটরিং না থাকায় নিঃস্ব হচ্ছেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। সরকারি কর্তৃপক্ষের কাছে কৃষকদের প্রত্যাশা, যথাযথ বাজার মনিটরিং এর মাধ্যমে মূল্য নির্ধারণ।

স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলা তারা জানান, '৬ মাসের জন্য আমরা কোল্ড স্টোরেজে আলু রাখি। এখানে আলু রাখতে আমাদের প্রতি বস্তা ৩ শত টাকা দিতে হয়। তাছাড়া ১ হাজার টাকা বস্তা, লেবার খরচ ১শ টাকা, ঘাটতি থাকে ১ শ টাকা। কয়েক বস্তা আলু বিক্রি করেছি ৮-৯ শ টাকা দরে। তাছাড়া বেশীর ভাগ আলু বিক্রি করতে হয়েছে ২-৩ শ টাকা দরে। সরকারি মনিটরিং না থাকায় আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।

আলু ব্যবসায়ী সাদ্দাম, রতন, পরিমল, সাইদুল জানান, পচা ও ছোট আলু বাছাইয়ে গুনতে হচ্ছে আরও টাকা। এতে লোকসানের মাত্রা আরও বাড়ছে আমাদের। তারপরও কিছু আলু বিক্রির আশায় আলু বাছাই করছে এই শ্রমিকরা। আড়ৎদার কোল্ডস্টোরেজ থেকে প্রতি কেজি আলু আড়াই টাকা থেকে ৩ টাকায় বিক্রি হলেও আড়তে আলু বিক্রি হচ্ছে ৬.৫০ টাকা থেকে ৭ টাকায়। আলু খুচরা বাজারে সাধারণ ভোক্তাদের মাঝে বিক্রি হচ্ছে ১০-১২ টাকায়। কিন্তু আমরা তুলতে পাচ্ছি না খরচের টাকাও। প্রতি বস্তা আলুতে প্রায় হাজার টাকা লোকসানে বিক্রি করতে হচ্ছে।

মাদারীপুর কোল্ডস্টোরেজের ম্যানেজার আব্দূল করিম জানান, আলু চাষী ও ব্যবসায়ীদের দুর্দশার জন্য অতিরিক্ত মজুত, জেলার বাইরে থেকে আলু আমদানী ও ঠিকমতো বাজার মনিটরিং না করা। তবে সরকারে উচিত এদিকে নজরদারী বাড়ানো।

মাদারীপুর জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুল ইসলাম জানান, বাজার মনিটরিং জোরদারের পাশাপাশি মাদারীপুরের মস্তফাপুর একটি কৃষক মার্কেট করা হবে। এমন সমস্যা যাতে কৃষকদের না পড়তে হয়। তবে অনেক সময় দেখা যায় কৃষকরা সঠিক মূল্য পায় না, ব্যবসায়ীরা অধিক মূল্য পেয়ে থাকে।

এসএস

  • সর্বশেষ
  • পঠিত