ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ মিনিট আগে
শিরোনাম

‘স্যার’ না বলায় সাংবাদিকের ওপর চটলেন ইউএনও

  খুলনা প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ২০:৪৫

‘স্যার’ না বলায় সাংবাদিকের ওপর চটলেন ইউএনও

‘স্যার’ বলে সম্বোধন না করায় জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মল্লিক সুধাংশুর সাথে অসৌজন্যমূলক ও অশালীন আচরণ করেছেন খুলনার তেরখাদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. লিটন আলী। বিষয়টি নিয়ে খুলনার সাংবাদিক সমাজের মধ্যে ক্ষোভ ও তীব্র নিন্দার ঝড় উঠেছে। ইউএনওকে অপসারণের দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিকরা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মল্লিক সুধাংশুর সঙ্গে তিনি অশালীন আচরণ করেন। তবে তেরখাদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. লিটন আলী বলেন, ‘আমি ওই সাংবাদিককে ব্যক্তিগতভাবে চিনি না। আমি তাকে বলেছি, যেহেতু আপনার সাথে আমার কখনো দেখা হয়নি, কথাও হয়নি। আপনি আমাকে ভাই বলতে পারেন না।’

এদিকে ঘটনা সামাল দিতে শুক্রবার সন্ধ্যায় খুলনা জেলা প্রশাসক মো. আমিন-উল আহসান ওই ইউএনও’র সাথে জরুরি বৈঠক করেছেন। বৈঠকে সাংবাদিক নেতাদের ডাকা হলেও তারা কেউ উপস্থিত হননি।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় খুলনা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মল্লিক সুধাংশু’র সাথে তেরখাদা উপজেলার বিআরবি আজগড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একটি বিষয় নিয়ে ইউএনও মুঠোফোনে কথা বলেন। এসময় তাকে ‘স্যার’ না বলে ‘ভাই’ বলায় অশালীন আচরণ করেন ইউএনও। মল্লিক সুধাংশু ওই বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি।

মল্লিক সুধাংশু বলেন, ‘তেরখাদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিটন আলী মোবাইল ফোনে কল করে আমাকে বিদ্যালয়ের বিষয়ে কথা বলেন। কথোপকথনের একপর্যায়ে তিনি অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। ফোনালাপে তাকে স্যার না বলে ভাই বলায় তিনি ক্ষেপে যান এবং অশোভন বাক্য ব্যবহার করেন।’ তিনি বলেন, আর কোন স্কুলের সভাপতির সাথে যেন ইউএনও এই ধরনের ব্যবহার না করে তার ব্যবস্থা করা জরুরি।

ইউএনও মো. লিটন আলী বলেন, ‘ওই স্কুলে একটি মেয়ের সাথে অশালীন আচরণের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু স্কুলের সভাপতি মল্লিক সুধাংশু বিচার না করে সময়ক্ষেপণ করছেন। এ নিয়ে কথা বলার সময় এ ঘটনা ঘটে।’

এদিকে মল্লিক সুধাংশুর উপস্থিতিতে বিদ্যালয়ের ঘটনায় শুক্রবার বিকালে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ৩ কার্যদিবসের মধ্যে কমিটি প্রতিবেদন জমা দেবে।

খুলনার জেলা প্রশাসক মো. আমিন উল আহসান বলেন, ‘আসলে ইভটেজিংয়ের ঘটনাগুলোতে আমরা খুব চাপের মধ্যে থাকি। তবে তুচ্ছ ঘটনায় ইউএনও এবং সাংবাদিকের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। আমরা বিষয়টির মীমাংসার চেষ্টা করছি।’

খুলনা প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফারুক আহমেদ বলেন, একজন সরকারি কর্মকর্তার এ ধরনের আচরণ করা ঠিক না। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি এসএম জাহিদ হোসেন এ ধরনের আচরণের তীব্র নিন্দা ও তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন (এমইউজে) খুলনার সাধারণ সম্পাদক হাসান আহমেদ মোল্লা বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ফোনালাপে স্কুল কমিটির সভাপতি ও প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদককে তুচ্ছ করা মানহানিকর। এটা সাংবাদিক সমাজ কোনভাবেই মেনে নেবে না। তদন্ত সাপেক্ষে ইউএনওর বিচার দাবি করেন তিনি।

বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন খুলনা জেলা শাখার সভাপতি বাপ্পী খান তেরখাদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অপসারণ ও শাস্তির দাবি জানান।

/এসকে/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত