ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪১ মিনিট আগে
শিরোনাম

বিধ্বস্ত বিমানে ছিলেন রাগিব রাবেয়া মেডিকেল কলেজের অনেক শিক্ষার্থী

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ১২ মার্চ ২০১৮, ১৮:২৫  
আপডেট :
 ১২ মার্চ ২০১৮, ১৯:২৪

বিধ্বস্ত বিমানে ছিলেন রাগিব রাবেয়া মেডিকেল কলেজের অনেক শিক্ষার্থী

নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে কমপক্ষে দশজন ছিলেন সিলেটের জালালাবাদ রাগিব রাবেয়া মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী। এ বিষয়ে জালালাবাদ রাগিব রাবেয়া মেডিকেল কলেজের সহকারি পরিচালক ডাক্তার আরমান আহমদ শিপলু বলেন, ‘প্রাথমিক অবস্থায় আমরা ১০ থেকে ১২ জনের কথা জানতে পেরেছি, যারা জালালাবাদ রাগিব রাবেয়া মেডিকেল কলেজে অধ্যয়নরত।’

ডাক্তার আরমান আরো বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা ছুটি না নিয়েই নেপালে গিয়েছিলেন। এজন্য সঠিক হিসেব পাওয়া যাচ্ছে না। সন্ধ্যার পর খোঁজ নিয়ে সঠিক সংখ্যা জানাতে পারবো।’

‘এখন দায়িত্বশীল সবাই মেডিকেলে অবস্থান করছেন এবং হলে খোঁজ নিচ্ছেন কারা কারা অনুপস্থিত আছেন। এ বিষয়ে নেপালের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে,’ জানান তিনি।

এস২-এডিইউ মডেলের ৭৮ আসনের টুইন টার্বো প্রোপ বিমানটি ঢাকা থেকে কাঠমান্ডুতে পৌঁছানোর পর অবতরণের সময় রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে। এরপর পাশের একটি ফুটবল মাঠে বিধ্বস্ত হয়। এ ঘটনায় অন্তত অর্ধশত নিহত হয়েছে।

ইউএস-বাংলা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ৭৮ আসনের বিমানটিতে ৬৭ জন যাত্রী এবং ৪ জন ক্রু মেম্বার ছিলেন। ভুবন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এদের মধ্যে ৩৭ জন পুরুষ, ২৭ জন নারীর সঙ্গে ছিল দুই শিশুও।

ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মুখপাত্র প্রেম নাথ ঠাকুরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ৭৮ আসনের বোম্বার্ডিয়ার ড্যাশ ৮ কিউ-৪০০ মডেলের উড়োজাহাজটি স্থানীয় সময় ২:২০ মিনিটে বিধ্বস্ত হয়। এসটু-এইউজি নামে নিবন্ধিত ফ্লাইটটি ঢাকা ছেড়েছিলো দুপুর ১:৪৩ মিনিটে।

বিমানবন্দরের আরেক মুখপাত্র বীরেন্দ্র প্রসাদ শ্রেষ্ট জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে বিধ্বস্ত বিমানের আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় আছেন তারা।

ইউএস-বাংলা এয়ারের বিএস-২১১ ফ্লাইটের যাত্রীদের তালিকা পাওয়া গেছে। যাত্রীদের মধ্যে ৬২ জনের নাম:

রিজনা আব্দুল্লাহ, ফয়সাল আহম্মেদ, শামরিন আহম্মেদ, ইয়াকুব আলী, আলিফুজ্জামান, আলমুন নাহার অ্যানি, বিলকিস আরা, শিলা বসগেইন, নুরুন্নাহার বেগম, আলজিনা বরাল, চরু বরাল, আক্তারা বেগম, শাহীন ব্যাপারী, সোভিন্দ্র বোহারা, বসন্ত বোহারা, সামিরা বাজানকার, প্রবীণ চিত্রকর, নাজিয়া চৌধুরী, সাজেনা দেবকোটা, প্রিন্সি ধামী, গয়োন্ত গ্রুঙ, রেজোয়ানুল হক, রকিবুল হাসান, মেহেদী হাসান , মো. কবির হোসেন, দিনেশ হুমাগাইন, সানজিদা হক, হাসান ইমাম, মো. নজরুল ইসলাম, শ্রেয়া ঝা, পূর্নীমা লোহানী, মিলি মহারাজন, নিগা মহারাজন, সঞ্জয় মহারাজন, ঝাং মিং, আখি মনি, মিনহাজ বিন নাসির, শেকব পান্ডে, প্রশন্ন পান্ডে, বিনোদ রাজ পাডোয়াল, শঙ্কর হরি পাডোয়াল, সঞ্জয় পাডোয়াল, এফএইচ প্রতিক, তামারা প্রিয়ন্ময়ী, মতিউর রহমান, শেখ রুবায়াত, কৃষ্ণ কুমার শাহানী, উম্মে সালমা, আসেনা শাকিয়া, সানাম শাকিয়া, অঞ্জিলা শ্রেষ্ঠা, সারোনা শ্রেষ্ঠা, সত্য শর্মা, হরিপ্রশাদ সুবেদি, দয়ারাম তাম্রকার, বাল কৃষ্ণ থাপা, সেতা থাপা, কিশোর ত্রিপাঠি, অবদেশ কুমার যাদব, অনিরুদ্ধ জামান নুরুজ্জামান, রফিক জামান।

রাজধানীর শুক্রবাদের বাসিন্দা এনজিও কর্মকর্তা রফিক জামান রিমু ও তার স্ত্রী সানজিদা হক বিপাশা এই ফ্লাইটে নেপাল যান। তাদের সঙ্গে ছিল সাড়ে সাত বছর বয়সী ছেলে অনিরুদ্ধ। বিপাশার স্বজনরা জানান, সকাল সাড়ে ১০টায় তারা হযরত শাহজালাল বিমান বন্দরের উদ্দেশে রওয়ানা হন। ফ্লাইট ছাড়ার আগে বাসায় মোবাইল ফোনে জানান, ‘নেপালে নেমেই আমরা ফোন করবো’। তাদের নেপালের সিমও ছিল। এখন পর্যন্ত তাদের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

বিপাশার বোন ঋতু জানান, ইউএস-বাংলা কর্তৃপক্ষ কিছু জানায়নি। কারও সঙ্গেই যোগাযোগ করা যাচ্ছে না।

এদিকে বিমানটির দুজন যাত্রীর পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সিনিয়র সহকারী প্রধান উম্মে সালমা ও নাজিয়া আফরিন চৌধুরী। সরকারি এক সেমিনারে অংশ নিতে তারা নেপালে যাচ্ছিলেন।

উম্মে সালমা রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকার বাসিন্দা। তিনদিনের দাফতরিক সফরে (অফিসিয়াল ট্রিপে) সোমবার ইউএস বাংলার বিমানে কাঠমান্ডু রওনা দিয়েছেন তিনি। এরপরই আসে বিমান দুর্ঘটনার খবর। সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীর বারিধারারা ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের অফিসে ছুটে আসেন তার বড় ভাই আবুল কালাম আজাদ। বোনের জন্য আহাজারি করতে থাকনে তিনি। বোনকে জীবিত ফিরে পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় আছেন তিনি। শোক যেন তাকে নির্বাক করেছে।

পরিকল্পনা বিভাগের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য ড. শামসুল আলম বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা খোঁজ-খবর রাখছি। নেপাল দূতাবাসে খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে। কিন্তু দূতাবাস এখন পর্যন্ত কিছুই বলতে পারছে না।

তিনি আরো বলেন, সবশেষ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছিল। মূলত ওই সেমিনারে আমার যোগ দেয়ার কথা ছিল। আমি যেতে পারি নাই বলে ওদের পাঠিয়েছি।

/এসকে/

আরও পড়ুন :

বিমান বিধ্বস্ত, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শোক

নেপালে বিমান বিধ্বস্তে নিহত অন্তত ৫০

  • সর্বশেষ
  • পঠিত