ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

অবৈধ পার্কিং: প্রধানমন্ত্রীর পিএস পরিচয়দানকারী কে সেই ব্যক্তি?

অবৈধ পার্কিং: প্রধানমন্ত্রীর পিএস পরিচয়দানকারী কে সেই ব্যক্তি?

রাস্তায় অবৈধভাবে পার্কিং করে যানজট সৃষ্টির অভিযোগে একটি গাড়িকে মামলা করতে যান পুলিশ ইন্সপেক্টর তরিকুল ইসলাম সুমন। এ সময় গাড়িতে থাকা ব্যক্তিটি নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর পিএস পরিচয় দিয়ে কাগজপত্র না দেখিয়ে গাড়ি ছাড়িয়ে নিতে ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে ভয়ভীতি দেখান বলে অভিযোগ উঠে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই ব্যক্তিটি হলেন শ্রম মন্ত্রণালয়ের একজন উপসচিব। তিনি শ্রম মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মুজিবুল হকের একান্ত সচিব। নাম অমর চান বনিক। তবে ট্রাফিক পুলিশকে ভয়ভীতি দেখানোর কথা অস্বীকার করেছেন তিনি।

অমর চান বনিক বলেন, ‘আমি বলেছি শ্রম প্রতিমন্ত্রীর একান্ত সচিব। সে যদি প্রধানমন্ত্রীর পিএস শোনে, তাহলে আমার কী করার আছে? ’

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক দক্ষিণ বিভাগের পরিদর্শক তারিকুল আলম সুমন বৃহস্পতিবার রাতে নিজের ফেসবুকে এ বিষয়ে একটি স্ট্যাটাস দেন। দুটি ভিডিও এবং দুটি স্থিরচিত্রও দেন। যা ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়। তার কাজের প্রশংসা করেন অনেকে। তাকে সাহসী পুলিশ বলে আখ্যায়িত করেন।

আরো খবর: ‘আমার লাশ পড়লেও আপনাকে মামলা নিয়ে যেতে হবে’ (ভিডিও)

স্ট্যাটাসে তারিকুল ইসলাম সুমন লিখেন, ‘একটু আগের ঘটনা। বাচ্চাকে স্কুল থেকে পিক করার জন্য ৭/৮ নং গেটের কাছে আসলাম, দেখি প্রচণ্ড জ্যাম, কারণ গাড়িওলারা তিনলাইন করে পার্ক করে রাস্তা বন্ধ করে বসে আছে আর উনাদের বাচ্চারা স্কুল গেইটে কিছু খাচ্ছে অথবা স্কুলেই খেলায় মত্ব। এদিকে আমার মত রিক্সার যাত্রীরা অনবরত ট্রাফিক পুলিশকে গালি দিতে থাকল। মেজাজ ঠিক রাখতে না পেরে সিভিল ড্রেসে একাই ৩য় সারির দশটি গাড়ির কাগজ নিয়ে বেতার যন্ত্রের মাধ্যমে সার্জেন্টকে কল দিয়ে নিয়ে আসলাম মামলা করানোর জন্য।’

‘বিপত্তি বাঁধল এক সচিব স্যারকে নিয়ে। উনি নিজেকে পিএম এর পিএস বলে পরিচয় দিচ্ছেন, যদিও আমি তা যাচাই করে দেখিনি। উনি মামলা তো দূরের কথা, গাড়ির কাগজই দেবেন না, আমি যা পারলে করি। আমি উনাকে বারবার স্যার সম্বোধন করে বলি যে উনাকে আমি ছাড়লে সবাইকে ছাড়তে হবে, নইলে বাকী নয়জনের কাছে পরকালে হলেও জবাবদিহি করতে হবে, তাই উনাকে ছেড়ে দিয়ে সেই পাপের দায়ভার নিতে পারব না। উনি আমার উপর দিয়েই গাড়ি চালিয়ে যাবেন এই অবস্থা। আমিও নাছোড়বান্দা, বললাম আমার লাশ পড়লেও আপনাকে মামলা নিয়ে যেতে হবে।’

আরো খবর: বোকা ও অভিমানী ছেলেটাকে ভালোবেসে ফেলেছি, রনিকে প্রভাষ আমিন

‘উনি খুব গরম দেখাচ্ছিলেন, তাই আমি পথচারীকে ভিডিও করতে বলি, উনার গরম তখন পালালো, আমি নয়শ টাকা জরিমানা করলাম। উনি আমার নাম জানতে চাইলে আমি এক ডিগ্রি এগিয়ে নিজের ভিজিটিং কার্ড দিয়ে সালাম দিয়ে বললাম, Sir,you can transfer me anywhere of Bangladesh. আমি রাস্তার কামলা, কামলাই থেকে যাব, বেতন এক টাকাও কমবে না, আপনি যদি ভদ্রভাবে পরিচয় দিয়ে বলতেন, আমি পিএম এর পিএস, আজকের মত আমাদের সবাইকে ছেড়ে দেন, আর কোনদিন এভাবে গাড়ি রাখব না, আমি আপনাকেসহ সবাইকে স্বসন্মানে ছেড়ে দিতাম, কিন্তু আপনি ক্ষমতা দেখিয়ে শুধু আপনারটাই ছাড়াতে চাচ্ছেন, অন্য কারোটা নয়, অথচ আপনারা সবাই একই অপরাধে অপরাধী। বাকী সবাইকেও নয়শ টাকা করেই জরিমানা করেছি। এবার মনে হয় ঢাকার বাইরে পোস্টিংটা খুব দ্রুতই হবে.....!!!!!!’

‘আমি অমুক,আমি তমুক,এই পরিচয়ে এক্সট্রা প্রিভিলেজ পাওয়ার চিন্তাটা আমরা বাদ দেব কবে?কেন অপরাধ করে তার পানিশমেন্টটা আমরা নিতে চাই না..............?’

‘(বিঃদ্রঃ এই পোস্টগুলো সস্তা লাইক বা বাহবা পাওয়ার জন্য দেয়া হয় না, এগুলো দেয়া হয় আমার স্বজাতীয়দের ক্ষয়ে যাওয়া মেরুদণ্ড সোজা করার জন্য।)’

ভিডিও দেখুন...

জেডএইচ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত