ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

পানি নিষ্কাশনে খাল খনন করায় ধানের বাম্পার ফলন

  মাদারীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৫ মে ২০১৮, ১৪:৩৭  
আপডেট :
 ২৫ মে ২০১৮, ১৪:৪১

পানি নিষ্কাশনে খাল খনন করায় ধানের বাম্পার ফলন

মাদারীপুরের কদমবাড়ি ইউনিয়নের আড়ুয়াকান্দি ও দীঘিরপাড় মৌজার এক হাজার বিঘা জলাবদ্ধ জমির পাশে স্বেচ্ছাশ্রমে একটি খাল খনন করেন স্থানীয়রা। ফলে চলতি বছর ওই অনাবাদী জমিতে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। তাই অনেক খুশি কৃষক। তবে তারা আশা করছেন, ধানের দাম ভালো পাওয়া গেলে কোটি টাকার ধান বিক্রি হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাদারীপুরের কদমবাড়ি ইউনিয়নের আড়ুয়াকান্দি ও দীঘিরপাড় মৌজার এক হাজার বিঘা জমি সারা বছরই পানিতে তলিয়ে থাকে। এই পানিবন্দি জমি থেকে পানি নিষ্কাশন করা সম্ভব হতো না। কিন্তু চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে এই গ্রামের কয়েকজন যুবক উদ্যোগে স্বেচছাশ্রমের ভিত্তিতে মাত্র ৭০০ ফুট দৈর্ঘ্যরে একটি খাল খনন করা হয়। ফলে সারা বছর জলাবদ্ধতার কারণে অনাবাদী পড়ে থাকা এক হাজার বিঘা জমিতে চলতি বছর ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকদের ধারণা, এক হাজার বিঘা জমিতে প্রায় ১৩শ’ ২০ টন ধান উৎপাদন হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিত গড়ে ৫০ মণ ধান পাওয়ায় কৃষকরা দারুণ খুশি।

এ নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এরপরে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারাও ওই এলাকায় পরিদর্শনে যান। পরে উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে অনাবাদী জমিতে ধানের ফলন বৃদ্ধিতে কৃষকদের পরামর্শসহ নানা ধরণের সহযোগিতা করা হয়।

দীঘিরপাড় গ্রামের কৃষক সুধাংশু মজুমদার বলেন, ‘বিলের মধ্যে আমার তিন বিঘা জমি সারা বছরই পানির নিচে তলিয়ে থাকতো। কিন্তু এবছর সবাই মিলে খাল কাটার ফলে ধান চাষ করতে পেরেছি। আমার বিঘা প্রতি ৪০-৫০ মণ ধান হয়েছে। এ ধান বিক্রি করে আমার ৫ মাসের সংসার খরচ চলে যাবে।

আরেক কৃষক দীপক দত্ত বলেন, ‘আমারও বিঘা প্রতি ৫৫ মণ করে ধান হয়েছে। এখন বাজারে ধানের দাম কম। কয়েক মাস পরে ধানের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার পরে বিক্রি করব। তাতে আমার প্রায় তিন বিঘা জমিতে দেড় লাখ টাকার ধান বিক্রি করতে পারবো বলে আশা রাখছি।

আড়ুয়াকান্দি গ্রামের কৃষক দিপু গাইন বলেন, ‘জন্মেও পর থেকে আমি এই বিলে সারা বছরই জল দেখেছি। কিন্তু এ বছর আমাদের সবার স্বেচ্ছাশ্রমে খাল খনন করায় সবার মুখে হাসি ফুটেছে। জমি থেকে পানি নেমে যাওয়ায় কৃষি বিভাগ থেকেও ধানের চারা রোপনসহ নানা বিষয়ে তারা আমাদের সহযোগিতা করেছে।

এ সম্পর্কে স্বেচ্ছাশ্রমে খাল খননের উদ্যোক্তা প্রণব কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘এই এলাকার প্রায় এক হাজার বিঘার ধান একটি ছোট খালের অভাবে বছরের পর বছর ধরে ধান চাষ করা বন্ধ ছিল। কারণ যখন ধান চাষের মৌসুম, দেখা যেত তখনো বিলের পানি মাজার উপরে থাকতো। তাই চলতি বছর আমরা কয়েকজন মিলে একটি খাল খনন করার উদ্যোগে নিয়ে তা বাস্তবায়ন করি।’

মাদারীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জিএমএ গফুর বলেন, ‘স্বেচ্ছাশ্রমে খাল খনন করা খুবই ভালো উদ্যোগ। পত্র-পত্রিকার সংবাদে এমন তথ্য জানতে পেরে আমাদের উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে আমরা নিয়মিত পরামর্শ নিয়েছি।

তিনি আরো বলেন, ‘বর্তমান বাজার মূল্যে এই বিলের এক হাজার বিঘা জমিতে কমপক্ষে দেড় কোটি টাকার ধান বিক্রি করা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, জেলার আরো বেশ কিছু জলাভূমি রয়েছে। সেগুলোকেও যদি ধান চাষের আওতায় নিয়ে আসা যায় তাহলে মাদারীপুর ধান উৎপাদনে আরো এগিয়ে যাবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত