‘বন্দুকযুদ্ধে’ ৭ মাদক ব্যবসায়ী নিহত
জার্নাল ডেস্ক
প্রকাশ : ২৭ মে ২০১৮, ০৭:৪১ আপডেট : ২৭ মে ২০১৮, ০৮:১০
চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে দেশের বিভিন্নস্থানে র্যাব ও পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ৭ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এসব বন্দুকযুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
শনিবার দিবাগত রাত ১২ থেকে সাড়ে ৩টার মধ্যে এসব বন্দুকযুদ্ধ হয়।
বাংলাদেশ জার্নাল প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
টেকনাফ: শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টায় টেকনাফ সদর ইউনিয়নের নোয়াখালিয়াপাড়া এলাকায় র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন মো. একরামুল হক (৪৬) নামের এক মাদক ব্যবসায়ী। তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী বলে র্যাব কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, রাত দেড়টার দিকে মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে পর ঘটনাস্থলে টেকনাফ পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর একরামুলের মৃতদহে পাওয়া যায়।
সীতাকুণ্ড: এদিকে রাত ১টার দিকে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে একজন রায়হান উদ্দিন (২৮) নামের এক মাদকব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন।
নিহত রায়হানের বিরুদ্ধে খুন, ডাকাতি ও মাদকের সাতটি মামলা রয়েছে বলে সীতাকুণ্ড থানার ওসি সৈয়দ ইফতেখার হাসান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, 'ইয়াবাপাচারের খবরে পুলিশের একটি দল রাত ১টার দিকে সীতাকুণ্ডের নড়ালিয়া বেড়িবাঁধ এলাকায় অভিযানে যায়। সেখানে ইয়াবা পাচারকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এক পর্যায়ে পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। পরে সেখানে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রায়হানের মৃতদেহ পাওয়া যায়।'
চাঁদপুর: চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে সেলিম (৩৭) নামের এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। শনিবার রাত ৩টার দিকে মতলব দক্ষিণ উপজেলার হাজীর ডোন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মাদক ব্যবসায়ী সেলিমের বাড়ি মতলব দক্ষিণ উপজেলার উপাদী ইউনিয়নে।
মতলব দক্ষিণ থানা পুলিশ জানায়, থানা ও ডিবি পুলিশ যৌথ মতলব সড়কের হাজীর ডোন এলাকায় অভিযান চালায়। এসময় ৭ মাদক মামলার আসামি সেলিমকে আটক করে। সেলিমকে থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় তার সহযোগীরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এতে সেলিম গুলিবিদ্ধ হন। আহত অবস্থায় মতলব স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নোয়াখালী: নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী মো. হাছান প্রকাশ ইয়াবা হাছান (৩৫) নিহত হয়েছেন। এসময় ৩ পুলিশ সদস্য আহত হন। ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র, গুলি ও ইয়াবা উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শনিবার (২৬ মে) দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার পৌর এলাকার বগাদিয়া ইজতেমা মাঠে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। নিহত হাছান সোনাইমুড়ি পৌরসভার বগাদিয়া মিয়া বাড়ীর হানিফ মিয়ার ছেলে। আহতরা হলেন, পুলিশ কনেস্টবল সোহাগ, জহির মজুমদার ও গোলাম সামদানি।
পুলিশ জানায়, শনিবার সকাল ১১টার দিকে সোনাইমুড়ি বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে ইয়াবা হাছানকে আটক করা হয়। পরে রাতে হাসানের দেওয়া তথ্য মতে তাকে সাথে নিয়ে অস্ত্র ও ইয়াবা উদ্ধারের জন্য বগাদিয়া ইজতেমা মাঠ এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। এসময় আগে থেকে ওৎপেতে থাকা হাছানের সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে পুলিশ আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছুঁড়লে উভয় পক্ষের মধ্যে কয়েক রাউন্ড গুলি বিনিময় হয়। একপর্যায় ইয়াবা হাছান গুলিবিদ্ধ ও তিন পুলিশ সদস্য আহত হন।
মেহেরপুর: মেহেরপুরের গাংনীতে দু’দল মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে হাফিজুল ইসলাম ওরফে হাফি (৪৫) নামের এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। নিহত হাফিজুল ইসলাম গাংনী ডিগ্রি কলেজপাড়া এলাকার শহীদ মুক্তিযোদ্ধা হারেজ উদ্দীনের ছেলে।
শনিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে গাংনী উপজেলার কাথুলি ইউনিয়নের গাঁড়াবাড়িয়া বাথান মাঠ এলাকার জনৈক আমজাদ হোসেনের কচুক্ষেতে এ বন্দুক যুদ্ধের ঘটনা ঘটে। গাংনী থানার ওসি হরেন্দনাথ সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মাদক ব্যবসায়ী হালিম মন্ডল (৩৫) নিহত হয়েছেন। পুলিশের দাবি এ ঘটনায় তাদের ৪ সদস্য আহত হয়েছেন।
শনিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে শহরের হাউসিং ডি ব্লক মাঠে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি নাসির উদ্দিন জানান, মাদক দ্রব্য ক্রয় বিক্রয়ের উদ্দেশে একদল মাদক ব্যবসায়ী শহরের হাউসিং ডি ব্লক মাঠে অবস্থান করছে এমন গোপন সংবাদ পেয়ে মডেল থানা পুলিশের একটি টহল দল ঘটনাস্থলে অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। জবাবে পুলিশ ও পাল্টা গুলি চালালে বন্দুকযুদ্ধে একজন গুলিবিদ্ধ হলে তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। শনিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে নগরীর মরাখোলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কনস্টেবল হুমায়ুন ও কনস্টেবল আমির হামজা মারাত্মক আহত হন। তাদেরকে স্থানীয় পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: আশিকুর রহমান এ অভিযানের নেতৃত্ব দেন। তিনি জানান, পুলিশের কাছে খবর আসে ওই এলাকায় কতিপয় মাদক ব্যবসায়ী মাদক ভাগাভাগি করছে। এমন সংবাদ পেয়ে সেখানে অভিযান পরিচালনা করা হলে মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট, পাটকেল নিক্ষেপ ও গুলি ছোড়ে। পরে আত্মরক্ষার জন্য পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে।
উভয়ের মধ্যে গুলি বিনিময়ের এক পর্যায়ে আসামিরা পালিয়ে যায়। পরে এলাকা তল্লাশি করে গুলিবিদ্ধ এক মাদক ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত যুবকের পরিচয় জানা যায়নি।
জেডআই
