ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

শিক্ষার্থীদের ঘরে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানালেন ডিএমপি কমিশনার

শিক্ষার্থীদের ঘরে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানালেন ডিএমপি কমিশনার

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ঘরে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)’র অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার (২ আগস্ট) ডিএমপির এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই আহ্বান জানান।

মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করছি। তারা যেন কারও উস্কানিতে কান না দেয়। সবাইকে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে, নিজ নিজ ঘরে ফিরে যাবার অনুরোধ করছি। কোমলমতি শিশুরা যেন কোনও অপপ্রচারে কান না দেয়, বিভ্রান্ত না হয়। আমরা তাদের সব দাবি বাস্তবায়নের চেষ্টা করছি। ইতোমধ্যে তাদের দাবি বাস্তবায়নে কাজ শুরু হয়েছে।’

মনিরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘গতকাল (বুধবার) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠক করেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইতোমধ্যে সব দাবি মেনে নেওয়ার কথা বলেছেন। সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। ট্রাফিক পুলিশ তৎপর রয়েছে। সড়কে যানবাহন কয়েকবার করে চেকিং করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘গাড়ি চেকিংয়ের কারণে দুর্ভোগ তৈরি হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা গাড়ি চেকিংয়ের নামে যা করছে তা কাম্য নয়। দুর্ভোগ হচ্ছে বিশেষ করে যারা হজযাত্রী এবং রোগীদের। তাদের গাড়ি আটকানোর কারণে তারা বিপদে পড়ছেন। শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করবো, যেন তারা স্ব-স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরে যায়। তারা যেন ঘরে ফিরে যায়। পর্যায়ক্রমে দাবিগুলো মেনে নেওয়া হবে। পাশাপাশি অভিভাককদেরও অনুরোধ করবো, আপনারা আপনাদের সন্তানদের ঘরে নিয়ে যান। সঙ্গে শিক্ষকদেরও অনুরোধ করবো তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য। আর পরিবহনে যে সমস্যা তা তো রাতারাতি সমাধান হবে না। আমরা শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি।’

শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনকে মানবিক ও সহানুভূতির সঙ্গে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা এখনও তাদের ওপর কোনো অস্ত্র প্রয়োগ করিনি।

পুলিশের নিজেদের ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকার অভিযোগ নাকচ করে দেন তিনি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পুলিশের যারা গাড়িচালক হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন তাদের প্রত্যেকের লাইসেন্স রয়েছে। অনেক সময় আমাদের এমটি (মোটর ট্রন্সপোর্ট) বিভাগ বদলি বা চালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার জন্য লাইসেন্স অফিসে রাখা হয়। এজন্য অনেকের সঙ্গে লাইসেন্স পাওয়া যায়নি। আমরা ভবিষ্যতে পুলিশের চালকদের লাইসেন্স অফিসে জমা না রেখে সঙ্গে রাখার ব্যবস্থা করবো।

উস্কানিদাতাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন মনিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘কোমলমতি শিশুদের আন্দোলনে নামার পর একটি স্বার্থনেষী মহল এর সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে। এই আন্দোলনের নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কিছু গ্রুপ বা পেজ খুলে উস্কানি ছড়ানো হচ্ছে। এই সুযোগ সন্ধাণীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। তারা ধরা পড়লে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।’

মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘শিশু কিশোরদের আন্দোলনে আমাদের সহানুভূতি রয়েছে। কিন্তু গত কয়েকদিনের আন্দোলনে ৩০০ গাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে। এছাড়াও ৮টি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। পুলিশের ৫টি গাড়িতে ভাঙচুর করা হয়েছে। যারা গাড়ি ভাঙচুর করছেন তারা ছাত্র হতে পারে না। এ কারণে তাদের থেকে শিক্ষার্থীদের সাবধান থাকার অনুরোধ করবো।’

উল্লেখ্য, গত রবিবার দুপুরে বিমানবন্দর সড়কের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী আব্দুর করিম রাজীব ও দিয়া আক্তার মিম নিহত হয়। তারা দুজনই শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থী ছিল। এই ঘটনার জের ধরে গত পাঁচ দিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করে আসছে শিক্ষার্থীরা।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত