ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

সহিংসতা সৃষ্টিকারীদের আনাগোনা শুরু হয়েছে: হাছান মাহমুদ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ২০:৪৬

সহিংসতা সৃষ্টিকারীদের আনাগোনা শুরু হয়েছে: হাছান মাহমুদ

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বচানকে সামনে রেখে সহিংসতা সৃষ্টিকারীদের আনাগোনা আবরো শুরু হয়েছে বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

শনিবার বিকালে রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি করেন তিনি।

হাছান মাহমুদ বলেন, এখনো বিএনপি আগামী নির্বাচনকে নিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তাদের নেতাকর্মীরা যারা বিভিন্ন মামলার আসামি ছিল, যারা পেট্রোল বোমা হামলার মত নাশকতা মামলার আসামি ছিল, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে তারা এলাকায় আবার আনাগোনা শুরু করেছে। পুলিশ তাদের কোনো কোনো জায়গায় গ্রেপ্তার করছে। যারা গ্রেপ্তার হয়েছে আমরা বিএনপিকে বলবো তাদের অতীতের কর্মকাণ্ডগুলো একটু খতিয়ে দেখার জন্য।

দেশের বাহিরে বিএনপির পক্ষ থেকে লবিস্ট নিয়োগের বিষয়ে আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, বিএনপি রাজনৈতিক দল হিসেবে লবিস্ট নিয়োগ করেছেন। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে আমরা খবর পেয়েছি প্রতি মাসে ৩৫ হাজার করে ডলার তাদের দিতে হয়। বিএনপির এই টাকার উৎস খুজে বের করা প্রয়োজন। বিএনপি রাজনৈতিক দল হচ্ছে বাংলাদেশের আর লবিস্ট নিয়োগ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। এই টাকার উৎস কি আর এই টাকা সেখানে গেল কিভাবে এটা তদন্ত করে দেখা প্রয়োজন। একই সাথে সেই মোতাবেক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।

বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম জিয়ার চিকিৎসা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর থেকে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে বেগম জিয়া গুরত্বর অসুস্থ। এই যে অসুস্থতার কথা বলা হচ্ছে সেটা বহু বছরের পুরনো। এই সমস্যা নিয়েই তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন, একই সমস্যা নিয়ে তিনি বিরোধী দলের নেতা ছিলেন, বিএনপির চেয়ারপার্সনের দায়িত্ব পালন করেছেন।

তিনি বলেন, কারাগারে যাওয়ার পর থেকে এই সমস্যা নিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে এমনভাবে কথা বলা হচ্ছে যেন বেগম জিয়া মরণাপন্ন। এখন চিকিৎসা দেয়া হলে তার জীবনহানির সম্ভবনা রয়েছে, এই ভাবে তারা ক্রমাগত মিথ্যাচার করে আসছে। আমি তাদের কাছে অনুরোধ জানাবো বেগম জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে জনগণের কাছে বিভ্রান্ত না ছড়িয়ে, বেগম জিয়ার আইনি লড়াইয়ে মনোযোগী হন।

কারাগারে খালেদার দেয়া সুযোগ সুবিধার কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগের এই মুখপাত্র বলেন, খালেদা জিয়াকে কারাগারে যে ধরণের সুযোগ সুবিধা দেয়া হচ্ছে দেশ বিভাগের পর ৭০/৭১ বছরের ইতিহাসে এই জনপদে কোনো কারাবন্দী এই সুযোগ সুবিধা পাননি, কোনো রাজবন্দীও এই সুযোগ সুবিধা পাননি। তিনি তো রাজবন্দী নন, তিনি দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামী। তাকে তার পছন্দের গৃহপরিচারিকা দেয়া হয়েছে, শীততাপ কক্ষে রাখা হয়েছে, তার জন্য সার্বক্ষনিক একজন পাচক রয়েছেন, একজন নার্স রয়েছেন। প্রতিদিন সরকারি ডাক্তার তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। সময়ে সময়ে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা মাঝে মাঝে গিয়ে দেখে আসেন। তাকে নিয়মিত ফিজিওথেরাপি দেয়া হয়।

তিনি বলেন, সম্প্রতি বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে দেখা করেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাদের বলেছিলেন সহসা একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হবে। সেই মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের ডাক্তারদের সমন্বয়ে গঠন করা হয়েছে। এখন বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে কেন তাদের দলের ডাক্তারদের দিয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হলো না। ডাক্তাররা তো কোনো দলের হতে পারে না। ডাক্তার আর রোগীর সম্পর্ক হলো রোগী এবং চিকিৎসক। তারা মেডিকেল বোর্ডকেও দলীয়করণ করার চেষ্টা করছেন। মেডিকেল বোর্ডকে ডিসক্রেডিটেড করা চেষ্টা করছেন।

তিনি আরো বলেন, প্রকৃতপক্ষে যে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে সেটা সরকারি ডাক্তারদের সমন্বয়ে গঠন করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে যাদের নাম বলা হয়েছে তারা কেউ সরকারি ডাক্তার নয়। যে পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে সেই বোর্ডে খালেদা জিয়ার যে সমস্ত সমস্যা রয়েছে সেই সমস্ত রোগের বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে এও বলা হয়েছে খালেদার ডাক্তারা পরামর্শ দিতে পারবেন ও মেডিকেল বোর্ডের সাথে যোগাযোগ করে খালেদা জিয়াকে দেখতে পারবেন।

বিএনপি চেয়ারপার্সনের অসুস্থতা নিয়ে বিএনপি অসুস্থ রাজনীতি করছে দাবি করে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া আটকের পর থেকে তাদের পক্ষ থেকে যে সমস্ত কথা বলা হচ্ছে তাতে বোঝা যাচ্ছে তাদের আসল উদ্দেশ্য খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নয়, তাদের আসল উদ্দেশ্য খালেদাকে অসুস্থ বানিয়ে এবং দেখিয়ে রাজনীতি করা। বেগম জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে তারা অসুস্থ রাজনীতির খেলায় মেতেছেন। এটি বেগম জিয়া ও তার পরিবারের জন্য অত্যন্ত অনভিপ্রেত।

বিএনপি গণতন্ত্রের জন্যে বড় বাধা এমন দাবি করে আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি বিএনপি নির্বাচনকে ভন্ডুল করার অপচেষ্টা করেছে। নির্বাচনে আসা না আসার সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের অধিকার। কিন্তু আমি নির্বাচনে অংশ নেব না নির্বাচন হতেও দেব না এই লক্ষে বিএনপি শত শত মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছে। ৫০০ স্কুল ও বই পত্র জ্বালিয়ে দিয়েছে। তারা নির্বাচনকে ভন্ডুল করে এই গণতন্ত্রকে হত্যা করতে চেষ্টা করেছে। এখন গণতন্ত্রের হত্যাকারীরা গণতন্ত্র নিয়ে আমাদের নেত্রী সম্পর্কে যে কথা গুলো বলছেন সেটি তাদের বেলায় প্রযোজ্য। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে, অভিযাত্রার পথে বিএনপিই সবচেয়ে বড় বাধা। এটি তারা তাদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বার বার প্রমাণ করেছে।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলি, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রফিকুর রহমান ও রেমন্ড আরেং প্রমুখ।

জেডআই

  • সর্বশেষ
  • পঠিত