ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

প্রেমের টানে ভারতীয় তরুণী বাংলাদেশে, অতঃপর...

  কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ২১:৪১

প্রেমের টানে ভারতীয় তরুণী বাংলাদেশে, অতঃপর...

বাংলাদেশি যুবকের প্রেমে পড়ে দেশ ছেড়েছে এক ভারতীয় তরুণী। সীমান্তরক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তবর্তী এলাকায় যুবকের বাড়িতে ওঠে। ওই তরুণীর পরিবার তাকে ফেরত চেয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) মাধ্যমে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কাছে আকুতি জানিয়েছে। এ নিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবির মধ্যে পতাকা বৈঠকও হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামে। গ্রামটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবর্তী।

পালিয়ে আসা সঞ্জনা বিশ্বাস (১৯) ভারতের পশ্চিমবাংলার নদীয়া জেলার হোগলবাড়িয়া থানার চরমেঘনা গ্রামের বিশ্বজিত বিশ্বাসের মেয়ে । আর বাংলাদেশি যুবক লাবু মিয়া (২৪) কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের সীমান্তসংলগ্ন জামালপুর গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে।

বিজিবি সূত্র জানায়, একসময় জামালপুর গ্রামটি ভারতের অংশ ছিল। আর চর মেঘনা গ্রামটি ছিল বাংলাদেশের। চর মেঘনা গ্রামের পেছন দিয়ে ভারতীয় কাঁটাতারের বেড়া রয়েছে। তবে জামালপুর ও চর মেঘনা গ্রামের মাঝে মাথাভাঙ্গা নদী। ২০১৬ সালে সীমান্ত চুক্তির মাধ্যমে জামালপুর ভূখণ্ড বাংলাদেশের হয়; আর চর মেঘনা গ্রামটি ভারতীয় হয়ে যায়। চর মেঘনা এখন পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার হোগলবাড়িয়া থানার আওতাধীন।

স্থানীয় লোকজন ও বিজিবি সূত্র জানায়, সঞ্জনা বিশ্বাসের সঙ্গে কয়েক বছর আগে লাবু মিয়ার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কয়েক মাস আগে সঞ্জনা নদী পার হয়ে জামালপুরে এসেছিলেন। সে সময় লাবুর বাবা কৌশলে তাকে চর মেঘনা গ্রামে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। এরপর মোবাইলের মাধ্যমে দুজনের মধ্যে আবার যোগাযোগ হতে থাকে। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে সঞ্জনা নদী পার হয়ে আবারও জামালপুর চলে আসেন। এরপর থেকে লাবুও এলাকায় নেই। তারা বিয়ে করেছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে।

এ ঘটনায় মেয়েটিকে ফেরত চেয়ে বিএসএফ বিজিবিকে পত্র দেয়। পত্র পেয়ে বিজিবি জামালপুর গ্রামের ইদ্রিস আলীর বাড়ি গিয়ে ভারতীয় মেয়ের সন্ধান চাইলে পরিবারের লোকজন বিজিবিকে জানায় তারা বাড়ির কাউকে না জানিয়ে ঢাকায় চলে গেছে।

প্রাগপুর ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুজ্জামান মুকুল মাস্টার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছেন, প্রেমের সম্পর্কের টানে মেয়েটি ভারত থেকে বাংলাদেশে চলে আসে। জামালপুর গ্রামের লাবু মিয়ার সঙ্গে ঢাকায় চলে যায়। তার খোঁজে ছেলের আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।

এ ঘটনায় শনিবার সকালে জামালপুর সীমান্তে ১৫২/৬(এস) সীমান্ত পিলারসংলগ্ন নোম্যান্সল্যান্ডে বিজিবি ও বিএসএফ পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিএসএফের পক্ষে নেতৃত্ব দেন ভারতের চরমেঘনা ক্যাম্পের অধিনায়ক ইন্সপেক্টর বান কে সিং ও বিজিবির পক্ষে নেতৃত্ব দেন ৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়ন অধীনস্থ প্রাগপুর ক্যাম্পের অধিনায়ক নায়েক সুবেদার সুবোধ পাল। ৩০ মিনিটব্যাপী চলা বৈঠকে ভারতীয় তরুণী সন্ধান পেলে তাকে ফেরতের আশ্বাস দেয় বিজিবি।

জানতে চাইলে জামালপুর বিজিবি ক্যাম্পের ইনচার্জ আশরাফুল আলী বলেন, ওই তরুণীর খোঁজে বিজিবিসহ গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। ওই তরুণী এর আগেও একবার এসেছিলেন। তাকে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। আবার এসেছেন। পতাকা বৈঠকে বিএসএফের পক্ষ থেকে ওই তরুণীকে ফেরত চাওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত