ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

বাবুগঞ্জে প্রধান শিক্ষকের নির্যাতনে শিক্ষার্থী অজ্ঞান!

  বরিশাল প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ২০:১৩  
আপডেট :
 ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ২০:২০

বাবুগঞ্জে প্রধান শিক্ষকের নির্যাতনে শিক্ষার্থী অজ্ঞান!

ফের বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার বাবুগঞ্জ সরকারি পাইলট স্কুলের প্রধান শিক্ষক রণজিৎ কুমার বাড়ৈর বিরুদ্ধে। বুধবার তার প্রহারে স্কুলের ভেতরেই জ্ঞান হারিয়েছে নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী।

রণজিৎ কুমার বাড়ৈর এমন অশোভন আচরণের প্রতিবাদে বুধবার বিদ্যালয়ের পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী বিক্ষোভ করে ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দেয়। পরে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আক্তার উজ-জামান মিলনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। সহপাঠিরা আহত শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করেছে।

ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাবুগঞ্জ সরকারি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল শাখার মেকানিক্যাল বিভাগের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী রিয়াজ বেপারী (১৪) ক্লাসের ফাঁকে পানি পান করতে যায়। এ সময় প্রধান শিক্ষক রনজিৎ কুমার বাড়ৈ ওই ছাত্রকে ক্লাসের বাইরে দেখে উত্তেজিত হয়ে প্রকাশ্যে বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে কিল, ঘুষি মারে এবং এক পর্যায়ে ওই ছাত্রের বুকে লাথি মারলে অজ্ঞান হয়ে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।

আহত ছাত্র মোঃ রিয়াজ উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামে মোঃ মাজেদ বেপারীর ছেলে।

প্রধান শিক্ষক রনজিৎ কুমার বাড়ৈ’র এমন কাণ্ডে শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে তাৎক্ষণিক ক্লাস বর্জন করে তার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করে।

এদিকে, শিক্ষার্থীদের ওপর রনজিৎ কুমার বাড়ৈর নির্মম নির্যাতনের খবর ছড়িয়ে পড়লে বিদ্যালয়ে ছুটে আসেন অন্যান্য শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরাও। তখন নিজের ভুল স্বীকার না করে থানায় গিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নামে মামলার প্রস্তুতি নেন রণজিৎ।

এরপর বিক্ষোভে ফেটে পড়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রণজিৎকে নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসা হয়। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বীথিকা সরকার, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ করিম লাবুর সমন্বয়ে বৈঠকে নেতৃত্ব দেন ছাত্রলীগের সভাপতি মৃধা মু. আক্তার উজ জামান মিলন। সেখানে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক নির্মম নির্যাতনের বিষয়টি অস্বীকার করলেও চড়-থাপ্পরের কথা স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করেন।

প্রসঙ্গত, এর আগেও একাধিকবার রণজিৎ এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিদ্যালয়টির সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, প্রায়ই ছাত্রদের মারধর ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন তিনি।

মারধরের বিষয়টি স্বীকার করে প্রধান শিক্ষক রনজিৎ কুমার বাড়ৈ সাংবাদিকদের বলেন, বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে শিক্ষকদের মিটিং চলাকালীন নবম শ্রেণির ভোকেশনাল শাখার মেকানিক্যাল বিভাগের শিক্ষার্থীরা গোলমাল করছিল। এ সময় ওই ছাত্রকে ছাত্রকে দু-একটা চড় থাপ্পর দিয়েছি। এর বেশি কিছু না।

উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান মিলন বলেন, প্রধান শিক্ষক কর্তৃক ছাত্র নির্যাতনের খবর পেয়ে দ্রুত বিদ্যালয়ে গিয়ে ছাত্র ছাত্রীদের বিক্ষুব্ধ পরিস্থিতি থেকে শান্ত করেছি।

বাবুগঞ্জ থানার ওসি দিবাকর চন্দ্র দাস বলেন, শিক্ষার্থী নির্যাতনের সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিক বিদ্যালয়ে ছুটে যাই এবং শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করি।

তবে বিদ্যালয়ে এমন তুলকালাম পরিস্থিতি ঘটলেও সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ২টা ৩০মিনিট পর্যন্ত বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অধ্যাপক গোলাম হোসেন ঘটনাস্থলে যাননি।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসএস

  • সর্বশেষ
  • পঠিত