ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

চুরির অপবাদে যুবককে ন্যাড়া করলো কাউন্সিলর

  কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০২:০৯  
আপডেট :
 ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০২:১৫

চুরির অপবাদে যুবককে ন্যাড়া করলো কাউন্সিলর

কক্সবাজারের চকরিয়ায় এক যুবককে মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে জোরপূর্বক মাথা ন্যাড়া করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে চকরিয়া পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মুজিবুল হকের বিরুদ্ধে।

বুধবার দুপুর ১২টার দিকে পৌরশহর চিরিঙ্গার এস আর প্লাজার সামনে থেকে ওই যুবককে ধরে বায়তুশ শরফ সড়কের একটি সেলুনে নিয়ে গিয়ে মাথা ন্যাড়া করা হয়। এ সময় সেলুনের এক কর্মচারিকে বাধ্য করা হয় ওই যুবকের মাথা ন্যাড়া করে দিতে। ওই জনপ্রতিনিধির নির্দেশমতে সেলুন কর্মচারি ওই যুবককে ন্যাড়া করে দেয়। ঘটনাটি গতকাল দুপুরের পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে। অনেকে এই ঘটনাটিকে আইন নিজের হাতে তুলে নেয়ার সামিল হিসেবে গণ্য করেছেন। আবার অনেকে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ঘটনায় জড়িত কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ারও অনুরোধ করেন।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, যুবককে ধরে নিয়ে মাথা ন্যাড়া করে দেয়ার ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়েছেন চকরিয়া পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মুজিবুল হক।

ঘটনার শিকার যুবকের নাম মো. ইব্রাহিম নয়ন (২৫)। সে চকরিয়া পৌরসভার ফুলতলা গ্রামের আবদুল মালেকের পুত্র। তবে কয়েকমাস আগে সে উপজেলার কাকারা ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের পাহাড়িয়া পাড়ায় বসবাস করতো।

ঘটনার শিকার যুবক মো. ইব্রাহিম নয়ন দাবি করেন, গতকাল দুপুর বারোটার দিকে পৌর শহরের চিরিঙ্গা কাঁচাবাজার এলাকায় এক নারীকে উত্ত্যক্ত করে অপর এক বখাটে। এ সময় ওই নারীর পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন ইব্রাহিম নয়ন। তখন উত্ত্যক্ত করার ঘটনায় ওই বখাটেকে ধরতে ওই নারী অনুরোধ করেন ইব্রাহিম নয়নকে। মূহুর্তের মধ্যে বখাটের ফোনে আরও কয়েকজন বখাটে উপস্থিত হয় পৌরশহরের এস আর প্লাজার সামনে।

এ সময় ওই স্থান থেকে ইব্রাহিম নয়নকে ধরে নিয়ে যায় পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মুজিবুল হকের কার্যালয়ে। সেখানে তাকে শারিরিকভাবে মারধরের পর নিয়ে যাওয়া হয় সেলুনে। এর পর কাউন্সিলরের নির্দেশমতে ন্যাড়া করে দেয়া হয় তার মাথা।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত চকরিয়া পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতা মুজিবুল হক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, যুবকটি মূলত মোবাইল চোর। সে পৌরসভার সওদাগরঘোনা এলাকার এক ব্যবসায়ীর মোবাইল ছিনতাই করে পালিয়ে যাওয়ার সময় প্রত্যক্ষদর্শীরা ধাওয়া দেয়। এ সময় সে আমার সামনে পড়ে গেলে তার কাছ থেকে একটি মোবাইলও উদ্ধার করে ছিনতাইয়ের শিকার ব্যবসায়ীকে ফেরত দিই। পরে স্থানীয় জনতার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সেলুনে নিয়ে গিয়ে মাথা ন্যাড়া করে দিই।’

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘ওই যুবক যদি কোন অপরাধও করে থাকে, তাহলে তাকে ধরে পুলিশের কাছে সোপর্দ করাটাই আইনী প্রক্রিয়া। জনপ্রতিনিধি হলেও কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেয়ার অধিকার আইন সমর্থন করে না। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত