ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

রাবি শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগের মারধর

  রাবি প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৩:১৬  
আপডেট :
 ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৩:৪৩

রাবি শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগের মারধর
মারধরের শিকার রাবি শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বেধড়ক মারধর করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত আটকে রেখে তাকে নির্যাতন করে রক্তাক্ত করা হয়। পরে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। শনিবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি জানাজানি হয়।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম আব্দুর রহমান। সে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। পড়ালেখার পাশাপাশি তিনি রাজশাহীর একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন। মারধরে ওই শিক্ষার্থীর চোখে গুরুতর জখম হয়েছে। তার চোখে চারটি সেলাই লেগেছে।

অপরদিকে অভিযুক্তরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক আব্দুল্লাহিল কাফি, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক আসাদুল্লাহিল গালিব ও ছাত্রলীগ কর্মী শুভ্র দেব। বাকিদের পরিচয় জানা যায়নি। তাদের দাবি, আব্দুর রহমান গাঁজা সেবন করে পালাতে গিয়ে সিঁড়ি থেকে পড়ে আঘাত পেয়েছে।

হল সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মাদার বখশ হলে আব্দুর রহমান তার একই বিভাগের এক বড় ভাইয়ের কাছে পরীক্ষার নোট আনতে যান। নোট নিয়ে আসার সময় হলের গেটে পৌঁছালে কাফি, গালিব, শুভ্রসহ কয়েকজন আবদুর রহমান কোথায় গিয়েছিলো তা জানতে চায়। আবদুর নোট নিতে এসেছিলো বলার পর তাকে চলে যেতে বলে পেছন থেকে কোমড়ে লাথি মারে। পরে তাকে হলের অতিথি কক্ষে নিয়ে গিয়ে ব্যাপক মারধর করা হয়। একপর্যায়ে তাকে হলের ওয়াশরুমে নিয়ে রড ও স্ট্যাম্প দিয়ে পেটানো হয়। এ সময় আব্দুর রহমানকে গাঁজা সেবন করেছি মর্মে স্বীকারোক্তি দিতে বলে মারধরকারীরা।

হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলছেন, ছাত্রলীগের কিছু নেতারা প্রায়ই ক্যাম্পাসে এ ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে। কোন শিক্ষার্থী যদি মাদক সেবন করে তাহলে তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে। কাউকে এভাবে মারধর করার অধিকার নেই কোন নেতাকর্মীর।

ভুক্তভোগী আব্দুর রহমান বলেন, যতোবারই আমি মাদক সেবন করিনি বলেছি ততোবারই তারা আমার ওপর চড়াও হয়েছে। আমাকে স্ট্যাম্প ও রড দিয়ে এলোপাথাড়ি আঘাত করে এবং আমার কাছে থাকা কোম্পানির পাঁচ হাজার টাকা কেড়ে নেয়। গাঁজা সেবনের বিষয়টি স্বীকার না করলে আমাকে প্রাণনাশের হুমকিও দেয়া হয়। ভয়ে আমি বিষয়টি স্বীকার করলে তারা সেটি ভিডিও করে। পরে তারা আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে রেখে চলে যায়।

আবদুর রহমানকে মারধর বা কোন ধরনের ভিডিও করা হয়নি বলে দাবি করেন গালিব, কাফি ও শুভ্র। তারা বলেন, ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে রাতে হলে মাদকবিরোধী অভিযান চলছিলো। হলের ছাদে মাদক সেবন করতে দেখে দলের জুনিয়র কয়েকজন কর্মী তাদের ধাওয়া দেয়। এ সময় পালাতে গিয়ে আব্দুর সিঁড়ি থেকে পড়ে চোখে আঘাত পায়। পরে আমরা তাকে আটক করে চড়-থাপ্পড় দিয়ে হল কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিয়েছি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, মারধরের কোন ঘটনা ঘটেনি। বহিরাগতসহ কয়েকজন হলের ছাদে গাঁজা সেবন করছিলো। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের আটক করে হল কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেয়।

জানতে চাইলে হল প্রাধ্যক্ষ আ. আলীম বলেন, এক শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়েছে শুনে আমি হাসপাতালে তাকে দেখতে গিয়েছিলাম। আমি খোঁজ-খবর নিচ্ছি। যারা দোষী তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবো।

বাংলাদেশ জার্নাল/কে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত