ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১১ মিনিট আগে
শিরোনাম

এই বর্ষায় ঘুরে আসুন নেত্রকোনার হাওড়ে

  নেত্রকোনা প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১০:০২

এই বর্ষায় ঘুরে আসুন নেত্রকোনার হাওড়ে

হাওর বেষ্টিত নেত্রকোনার মদন, মোহনগঞ্জ খালিয়াজুরী উপজেলায় শুকনো মৌসুমে এক রূপ আর বর্ষায় তার ভিন্ন রূপ। আষাঢ়-শ্রাবণ দুই মাস বর্ষাকাল। বর্ষা আসতে না আসতেই হাওড়ের চতুর্দিক কানায় কানায় ভরে যায় অথৈই জলরাশিতে। আর এই মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখতে প্রতিদিনই হাওরে দর্শনার্থীর ভীড় চোখে পড়ার মত। তবে তাদের নিরাপত্তার পাশাপাশি পর্যটন এলাকার জন্য ইতোমধ্যে জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানায় প্রশাসন।

সমুদ্র নয়, সমুদ্রের মতোই বিশাল জলরাশি। মাঠ-ঘাট সব পানিতে একাকার। তার ওপর ছোট ছোট দ্বীপের মতো একেকটি গ্রাম। বর্ষা মৌসুমে এমন দৃশ্যপটের দেখা মিলে নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলার হাওর জনপদে।

নেত্রকোনার মদন উপজেলার উচিতপুর ট্রলার ঘাট এখন মিনি সমুদ্র সৈকতে পরিণত হয়েছে। ফেইসবুক গণমাধ্যমগুলোতে খবর প্রচারের পর থেকে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা দর্শনার্থীদের ভীড় চোখে পড়ার মত। ছোট বড় সকলেই পানিতে নেমে সাতার কেঁটে তাদের আনন্দ উপভোগ করছে। দেখতে মনে হয় যেন মানুষের মিলন মেলা।

এছাড়াও উচিতপুর ট্রলার ঘাট থেকে ট্রলারযোগে কিছুদুর গেলেই বালই ব্রীজ। বর্ষাকালে ব্রীজের চারদিকে পানি দর্শানার্থীরা ট্রলারযোগে ব্রীজে গিয়ে নির্মল বাতাস অনুভব করে। ছোট বড় নারী পুরুষ অনেকেই ব্রীজের উপর উঠে মুঠোফোন বা ক্যামেরায় ছবি তুলে তাদের স্মৃতি ধরে রাখে। যেন এক বিচিত্র অনুভূতি।

বর্ষায় এখানে সামান্য বাতাস এলেই জলরাশি থেকে ভেসে বেড়ায় ঢেউয়ের ছলাৎ ছলাৎ শব্দ। সূর্যাস্তের মূহুতটিতে পরিস্কার আকাশ ঘেরা সূর্যের আলোয় স্বচ্ছ সমুদ্রসম জল ধারণ করে সোনালী আভা। রাতের জ্যোৎস্নায় চিক চিক করে বিস্তীর্ণ জলরাশি। জৈষ্ঠ থেকে আশ্বিন পর্যন্ত হাওরাঞ্চলটকে অনেকটাই সমুদ্রের মতো দেখা যায় বলে এখানে রয়েছে বিচিত্র এক আকর্ষণ।

হাওর জনপদের মধ্য ভাগে গড়ে উঠা খালিয়াজুরী এলাকার এমন মায়াবিনী আর আকর্ষণীয় রূপ দেখে ইতোমধ্যে মুগ্ধতা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ। তারা এখানটিকে হোটেল-মোটেলের মাধ্যমে সাজিয়ে পর্যটন কেন্দ্র করতে প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যায় বরাদ্দ ধরে একটি প্রকল্প প্রস্তাব পাঠিয়েছে বেসরকারি বিমান পর্যটন মন্ত্রণালয়ে।

খালিয়াজুরী সদরের কলেজ রোড এলাকাকে ঘিরে এখন গড়ে উঠেছে পিকনিক স্পট। বর্ষা মৌসুমে সু-সজ্জিত নৌকাযোগে প্রতিদিন এখানে আসে একাধিক পিকনিক পার্টি। সিসি ব্লক দিয়ে মোড়ানো ওই রোডের এক পাশে আছে সারি সারি গাছ আর অন্য পাশে বিশাল জলরাশি। রোডের অদূরেও আছে সমুদ্রের মতো পানির প্রভাব। পানিতে আছে বালুচর। এখানে রয়েছে অত্যাধুনিক ডাকবাংলো আর হাসপাতাল চত্ত্বর জুড়ে রয়েছে বৃক্ষ কানন।

খালিয়াজুরীর সৌন্দর্য্য আর ঐতিহ্যগুলোকে ভিত্তি করে এখানে গড়ে তোলা যেতে পারে পর্যটন কেন্দ্র। এখানে প্রায় নিয়মিতই ঘুরতে আসেন দেশি-বিদেশি অসংখ্য পর্যটক। চীনের বিখ্যাত পর্যটক হিউয়েন সাং এর মতো পর্যটকও হাওরের জলধারায় পা ভিজিয়েছেন। এখানে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে না উঠায় পর্যটকদের পড়তে হয় থাকা-খাওয়াসহ নানামুখী বিড়ম্বনায়।

নেত্রকোনা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আরিফুল ইসলাম জানান, ইতোমধ্যে খালিয়াজুরী মৌজার হেমনগর কান্দার ৩৩৩৩ দাগের ২৬ একর খাস জমি পর্যটন কেন্দ্রের জন্য সনাক্ত করা হয়েছে। ভূমি প্রশাসনের মাধ্যমে খুব দ্রুতই জমি প্রতিকি মূল্যে হস্তান্তর করা হবে পর্যটনের নামে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসএস

  • সর্বশেষ
  • পঠিত