ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

কাঁঠালিয়ায় প্রধান শিক্ষককে কোপালেন ইউপি চেয়ারম্যান!

  ঝালকাঠি প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৬ অক্টোবর ২০১৮, ১৫:০৮

কাঁঠালিয়ায় প্রধান শিক্ষককে কোপালেন ইউপি চেয়ারম্যান!

ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার চেচরীরামপুর এমএল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন ফরাজী হামলায় নেতৃত্ব দেন।

বৃহস্পতিবারের এই ঘটনায় শুক্রবার বিকেলে প্রধান শিক্ষকের পক্ষে কাঁঠালিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। আহত প্রধান শিক্ষক মেহেদী হাসানকে (৪৮) পার্শ্ববর্তী পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সহকারী শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে প্রধান শিক্ষকের ওপর ইউপি চেয়ারম্যান ক্ষুব্ধ ছিলেন বলে জানা যায়।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে বিদ্যালয়ের শিক্ষক মিলনায়তনে বসা ছিলেন প্রধান শিক্ষক মেহেদী হাসান। এ সময় লোকজন নিয়ে ঢুকে পড়েন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জাকির হোসেন ফরাজী। কিছু বুঝে ওঠার আগেই প্রধান শিক্ষককে লাঠিসোঁটা দিয়ে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করা হয়। মাথায় রক্তাক্ত জখম অবস্থায় সহকর্মীরা তাঁকে উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

প্রধান শিক্ষক মেহেদী হাসান অভিযোগ করে বলেন, ‘বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি চেচরীরামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ক্ষমতার অপব্যবহার করে আসছেন। তিনি এবং তাঁর লোকজন আমার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করছেন। বিদ্যালয়ের রেজল্যুশন খাতা তিনি জোর করে নিয়ে গেছেন। বিদ্যালয়ের কোনো সভায় তিনি থাকেন না। শিক্ষকদের সঙ্গে সব সময় খারাপ আচরণ করেন। আমাকে অন্যায়ভাবে সাময়িক বরখাস্ত করেছিলেন, কিন্তু আদালত আমাকে বহাল রাখার নির্দেশ দেন। তিনি এ কারণে আমার ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন।’

প্রধান শিক্ষক আরো বলেন, ‘দুপুরে আকস্মিকভাবে বিদ্যালয়ে ঢুকে হামলা চালান জাকির চেয়ারম্যান, তাঁর ভাই জিয়া ফরাজী। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় আলমগীর হোসেন ও সিরাজ তালুকদার। আমাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করেছেন তাঁরা। আমি থানায় মামলা করার জন্য একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’

কাঁঠালিয়া থানার ওসি এম আর শওকত আনোয়ার ইসলাম বলেন, ‘থানায় ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেনসহ পাঁচজনের নামে লিখিত একটি অভিযোগ করেছেন শিক্ষক। আমরা পুলিশ পাঠিয়ে তদন্ত শুরু করেছি। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন ফরাজী বলেন, ‘আমি ওই শিক্ষককে মারধর করিনি। সে এখন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নেই। তার পরেও বিদ্যালয়ে আসার কারণে শিক্ষার্থীরা তাকে মারধর করেছে।’

জানা যায়, ২০১৬ সালে চেচরীরামপুর এমএল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শূন্যপদে সহকারী শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জাকির হোসেন ফরাজীর সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি হয় প্রধান শিক্ষক মেহেদী হাসানের। এ ঘটনায় ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করেন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। প্রধান শিক্ষক ঝালকাঠির সহকারী জজ আদালতে মামলা করেন। আদালত তাঁকে প্রধান শিক্ষক পদে বহাল রাখার নির্দেশ দেন। এর পর থেকেই ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও তাঁর লোকজন ক্ষিপ্ত হয় প্রধান শিক্ষকের ওপর।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত