ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

নির্বাচনের সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় নজরদারি চালাবে র‌্যাব

সোশ্যাল মিডিয়ায় নজরদারি চালাবে র‌্যাব
ফাইল ফটো

একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে-পরে চার মাস ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নজরদারি চালাতে র‌্যাবকে দায়িত্ব দিতে একটি প্রকল্প নিতে যাচ্ছে সরকার।

আগামী ডিসেম্বরে একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাসের পর সমালোচনার মধ্যেই সরকার ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পর্যবেক্ষণ’ শীর্ষক এই প্রকল্প গ্রহণের দিকে এগোচ্ছে।

এই প্রকল্পের অধীনে ভোটের আগে দুই মাস ও পরে দুই মাস ফেইসবুক, ইউটিউব, ভাইবার ও হোয়াটসঅ্যাপসহ ইন্টারনেটে সব ধরনের যোগাযোগ মাধ্যমে রাষ্ট্রবিরোধী প্রচার, গুজব, মিথ্যা তথ্য, উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করবে র‌্যাব।

রবিবার পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের প্রাক মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভায় ১২১ কোটি ৪০ লাখ টাকার এ প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি উপস্থাপন করা হবে।

গত বৃহস্পতিবার একনেক সভার পর সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, নির্বাচনের আগে ‘জরুরি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য’ আরও দুটি একনেক বৈঠক হতে পারে।

এই প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, চার মাসের এ প্রকল্পটি নভেম্বরে শুরু হয়ে আগামী ফেব্রুয়ারিতে শেষ হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের উদ্যোগে নেওয়া প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকবে র‌্যাব।

প্রকল্পটির প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত প্রকল্পটি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের এডিপিতে বরাদ্দবিহীন অননুমোদিত নতুন প্রকল্প তালিকা বহির্ভূত। তবে প্রকল্পটি প্রক্রিয়াকরণে পরিকল্পনামন্ত্রীর সম্মতি রয়েছে।

এ প্রকল্পের মাধ্যমে যে উদ্দেশ্যগুলো পূরণের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে, সেগুলো হল:

রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন ধরনের অপপ্রচার, গুজব, মিথ্যা তথ্য, উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে যারা জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করবে, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা।

বিভিন্ন রকম গুজব, বিদ্বেষ, ও বিভ্রান্তিমূলক পোস্ট ‘রিয়েল টাইম মনিটরিং’র মাধ্যমে তাৎক্ষণিক সত্য ঘটনা জনগণের সামনে তুলে ধরে বিভ্রান্তি দূর করা।

যে সমস্ত পেইজ ও আইডি থেকে বিভ্রান্তিমূলক অপপ্রচার চালানো হবে, সেগুলোর বিরুদ্ধে রিপোর্ট করাসহ সেগুলো বন্ধের ব্যবস্থা করা।

বিদেশি রাষ্ট্র, উন্নয়ন সহযোগী, প্রতিষ্ঠান এবং বিদেশি জনগণের মাঝে গুজব ও মিথ্যা তথ্য প্রচার বন্ধ করে ভাবমূর্তি রক্ষা।

সাধারণ জনগণকে বিভ্রান্তি থেকে বাঁচাতে সরকারের ইতিবাচক দিকগুলো বিভিন্ন গণমাধ্যমে তুলে ধরা।

১২১ কোটি টাকার এই প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন মিডিয়া কনটেন্ট তৈরি করা হবে। এছাড়া বিভিন্ন সফটওয়্যার প্রণয়ন এবং বিভিন্ন রকম যন্ত্রপাতি কেনা হবে।

তবে কোনো ক্রয় দরপত্রের মাধ্যমে হবে না। ক্রয় কাজ সরাসরি ক্রয় পদ্ধতির মাধ্যমে বাস্তবায়নের প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রকল্পটি নেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে প্রস্তাবে ফেইসবুককেন্দ্রিক সাম্প্রতিক কয়েকটি অপপ্রচারের কথা বলা হয়।

এতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে সম্প্রতি বিভিন্ন প্রকার আন্দোলনকে পুঁজি করে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল ফেইসবুক এবং অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন ধরনের নেতিবাচক তথ্য প্রচার করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপপ্রয়াসে লিপ্ত হয়েছিল।

‘একটি বিশেষ গোষ্ঠীর অনুগত থাকা স্বার্থান্বেষী মহল দেশ ও বিদেশ থেকে সমান তালে এ ধরনের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করেছে। এছাড়া এই গোষ্ঠীর সদস্যরা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন, সরকারি, বেসরকারি দপ্তরগুলোতে মিথ্যা তথ্য পরিবেশনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশকে কোনঠাসা করার অপপ্রয়াস চালিয়েছে।’

রাষ্ট্রবিরোধী গোষ্ঠীর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো চিহ্নিত করা গেলেও অনেক সময় তাদের ব্যক্তি পরিচয় নিরূপণ সম্ভবপর হয় না বলে র‌্যাবের মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের প্রস্তাব করা হয়েছে।

সূত্র: বিডিনিউজ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত