ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

ফ্ল্যাট পাবেন সব সরকারি চাকরিজীবী

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৮ অক্টোবর ২০১৮, ১৪:০১  
আপডেট :
 ১৮ অক্টোবর ২০১৮, ১৪:৫৬

ফ্ল্যাট পাবেন সব সরকারি চাকরিজীবী

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শতভাগ আবাসিক সুবিধা দিতে যাচ্ছে সরকার। ইতোমধ্যে তা ২৫ ভাগে উন্নীত করা হয়েছে। বর্তমানে আরও বেশ কিছু প্রকল্প চালু রয়েছে। এগুলোর কাজ শেষ হলে শুধুমাত্র রাজধানীতেই দেড় লাখ সরকারি চাকরিজীবী আবসিক সুবিধার আওতায় আসবেন।

গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন জানান, সরকারি চাকরিজীবীদের আবাসিক সুবিধা নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীর সুনির্দিষ্ট নির্র্দেশনা রয়েছে। সে অনুযায়ী রাজধানী ছাড়াও জেলা পর্যায়ে অনেকগুলো প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, দশ বছর আগে সরকারি কর্মকর্তাদের আবাসন ব্যবস্থা ছিল মাত্র শতকরা ৮ ভাগ। বর্তমানে এর পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে শতকরা ২৫ ভাগ। ইতোমধ্যে বেশ কিছু হাউজিং প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ করছে রাজউক। প্রতিটি জেলা শহরে বিভিন্ন অফিস ভবন থেকে শুরু করে আবাসন ভবনও নির্মাণ করছে সরকারি এই সংস্থাটি। বর্তমানে বেশ কয়েকটি বড় প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। এগুলো বাস্তবায়ন হলে রাজধানীতে সরকারি দেড় লাখ চাকরিজীবীর আবাসন সমস্যা দূর হয়ে যাবে।

গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের জন্য বহুতল ভবন নির্মাণ দ্রুত শেষ করছে গণপূর্ত অধিদপ্তর। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে পাঁচটি ২০ তলা ভবনের কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি। ইতোমধ্যে তিনটি ২০ তলা ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। তিনটি ভবন সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে বুঝিয়ে দিয়েছে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। ভবনের গুণগত মান বজায় রাখা হয়েছে। কোন প্রকার ত্রুটি নেই। বর্তমান সরকারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে পারমাণবিক বিদ্যুত প্রকল্প। নির্ধারিত সময়ের ১ বছর আগেই আমরা তিনটি ২০ তলা ভবনের কাজ শেষ করে বিদ্যুত, গ্যাস ও অন্যান্য সংযোগসহ ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট দফতরকে বুঝিয়ে দিয়েছি। এ প্রকল্পের আরও ১৯টি ভবনের নির্মাণ কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে।

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, বিভিন্ন প্রকল্পের ভবন নির্মাণে সবকিছুই করা হয়েছে নিজস্ব প্রকৌশলীদের মাধ্যমে। ভবনগুলো নির্মাণে পরিবেশগত দিকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। বিএনবিসি কোড অনুযায়ী কাঠামোগত নক্সা, ভূমিকম্প প্রতিরোধ ক্ষমতা, সোলার প্যানেল স্থাপন, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বিদ্যুত ও পানির বিকল্প উৎস তৈরি করা হয়েছে। বড় বড় স্থাপনাগুলোতে সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, এসটিপির ব্যবস্থা রয়েছে। রাজধানীর রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, চন্দ্রিমা উদ্যানের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির জন্য একটি মাস্টার প্লান তৈরি করা হয়েছে। চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে নির্মাণ করা হয়েছে আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত জাম্বুরি পার্ক। বঙ্গভবন, জাতীয় সংসদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সুপ্রীম কোর্ট, সচিবালয়সহ জেলা পর্যায়ে সরকারি ভবনের রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের পাশাপাশি নতুন নতুন ভবন নির্মাণে প্রকল্প গ্রহণ হাতে নেয়া হয়েছে। সারাদেশে সরকারি অফিস, কর্মকর্তা কর্মচারীদের আবাসনের জন্য বহুতল ভবন নির্মাণে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য ২৩টি প্রকল্পের আওতায় ৯ হাজার ৭০২টি ফ্লাট নির্মাণ করা হয়েছে। বিচারপতি, জাতীয় সংসদ ভবনের কর্মকর্তা কর্মচারী, আজিমপুর এবং মতিঝিলে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য মোট ১ হাজার ৫১২টি ফ্লাট নির্মাণ শেষ হয়েছে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভবন গুলোর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন।

সূত্র জানিয়েছে, রাজধানীর পুরাতন ইস্কাটন রোডে নির্মাণাধীন তিনটি ২০ তলা ভবন নির্ধারিত সময়ের ৮ মাস আগে আগামী মাসে শেষ হবে। এই ভবনে গ্রেড-১ পদমর্যাদার সচিবদের আবাসন হবে। মিরপুরেও তিনটি প্রকল্পের আওতায় ১৯৬০টি ফ্লাট নির্মানের কাজ শেষ হয়েছে। এছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় ফ্লাট নির্মাণ চলছে। জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কমপ্লেক্স, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন কমপ্লেক্স, ফরেন সার্ভিস ট্রেনিং একাডেমি, শ্রম ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কনভেনশন সেন্টার, অনকোলরি ভবন, ডাক্তার ডরমেটরিও নির্মাণ শেষে উদ্বোধন করা হয়েছে। এর বাইরেও রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নিটোর ভবন, মহখালীতে এনআইডিডিআর ভবন, সার্কিট হাউস রোডে তথ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীনে গণপূর্ত অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, গণপূর্ত অধিদফতরের প্রকৌশলীসহ সব কর্মকর্তা কর্মচারীদের কঠোর পরিশ্রম ও সঠিক কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ এবং গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দিক নির্দেশনার কারণে এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে সম্ভব হয়েছে।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, রাজধানীর বাইরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মাগুরায় ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল নির্মাণ শেষে উদ্বোধন করা হয়েছে। ডিসেম্বরে উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে নওগাঁ, ভোলা, মাদারীপুর, চুয়াডাঙ্গা, নীলফামারী, বাগেরহাট, মুন্সীগঞ্জেরগুলো। কিশোরগঞ্জ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালও উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। ৩০টি মন্ত্রনালয়ের বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় জেলা পর্যায়ে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন, শিল্পকলা ও পাবলিক লাইব্রেরি ভবন, ইউনিয়ন ভূমি অফিস, ফায়ার স্টেশন, থানা, পুলিশ ও আনসারের বিভিন্ন অবকাঠামো, উপজেলা সাব রেজিস্ট্রি ভবনসহ বিভিন্ন বহুতল ভবনের নির্মাণ কাজের বাস্তবায়নে দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলে। আগে ভূমি অফিসগুলো টিনের ঘর ছিল। বর্তমানে ওই ঘরগুলো ভেঙ্গে দুই তলা ভবন করা হচ্ছে।

ডিপি/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত