ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

ভোটের জন্য প্রস্তুত ইসি

ভোটের জন্য প্রস্তুত ইসি

একাদশ সংসদ নির্বাচনের লক্ষ্যে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা এবং ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে ভোট গ্রহণের দিন নির্ধারণ করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সেই লক্ষ্যে যাবতীয় প্রস্তুতিও সারছে নির্বাচন কমিশন। ইসি সূত্রে জানা গেছে, ভোট গ্রহণে সারদেশের ৪০ হাজার ভোটকেন্দ্রের জন্য প্রায় সাড়ে সাত লাখ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার তালিকা তৈরির কাজ চলছে। আগামী ৮ নভেম্বরের মধ্যে তালিকা তৈরি করার জন্য মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশও দিয়েছে ইসি।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই তৎকালীন রকিবউদ্দীন কমিশনের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট। তবে এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচনকালীন সরকার পদ্ধতি নিয়ে তাদের নানা দাবি-দাওয়া থাকলেও নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা এখনও আসেনি। উল্টো এবার বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, আন্দোলন প্রস্তুতির পাশাপাশি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতিও তাদের রয়েছে।

যদিও নির্বাচনকালীন সরকারে কে থাকবে- তা নিয়ে বিভক্ত দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী। তবে নতুন আত্মপ্রকাশিত রাজনৈতিক জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ভাবগতি নির্বাচনমুখী। শেষ পর্যন্ত তারা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আন্তবর্তীকালীন সরকারের অধীনেই নির্বাচনে যাবেন বলে মনে করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য সংবিধান অনুযায়ী ৩০ অক্টোবর থেকে ২৮ জানুয়ারির মধ্যে সংসদ নির্বাচনের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তফসিল ঘোষণার আগে ২৮ থেকে ৩০ অক্টোবরের মধ্যে রাষ্ট্রপতির সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবে কে. এম. নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন ইসি। এর আগে আগামী রোববার কমিশন সভা বসতে যাচ্ছে।

ইসি-সংশ্নিষ্টরা জানিয়েছেন, একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে নানা প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আগামী ৩০ অক্টোবরের মধ্যে মনোনয়নপত্র দাখিল সংশ্নিষ্ট ফরম ও প্যাকেটসহ প্রয়োজনীয় দ্রব্য মাঠ পর্যায়ে পাঠানো হচ্ছে। নির্বাচন পরিচালনা সংক্রান্ত ম্যানুয়েল ছাপার কাজ ৫ নভেম্বরের মধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হবে। ইসির অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমান জানিয়েছেন, তফসিলের আগে মাঠ পর্যায়ে মনোনয়নপত্র, ভোটার তালিকার সিডিসহ সব ধরনের সামগ্রী পাঠানো হবে। ডিসেম্বরের মধ্যে ভোট করতে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই সবকিছু প্রস্তুত থাকবে।

সূত্র জানায়, সংসদ নির্বাচনের ৪০ হাজার ভোটকেন্দ্রের ২০ লাখের অধিক ভোটকক্ষের জন্য প্রায় সাড়ে সাত লাখ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা প্রস্তুত করবে ইসি। এ লক্ষ্যে ইসির উপসচিব আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত একটি চিঠি দেয়া হয়েছে মাঠকর্মকর্তাদের। এ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা প্রয়োজন হবে সাত থেকে সাড়ে সাত লাখ। তফসিল ঘোষণার পরপরই ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল তৈরির বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া হবে। ভোটের অন্তত ২৫ দিন আগে ভোটকেন্দ্রের গেজেট প্রকাশ হবে। তারপর প্যানেল থেকে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের তালিকা চূড়ান্ত করা হবে।

সর্বশেষ দশম সংসদ নির্বাচনে ৯ কোটি ১৯ লাখের বেশি ভোটারের জন্য কেন্দ্র ছিল ৩৭ হাজার ৭০৭টি; ভোটকক্ষ ছিল এক লাখ ৮৯ হাজার ৭৮টি। সে সময় ৬৬ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা, ৫৭৭ জন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করেন।

সংসদ নির্বাচনে বরাবরই বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসকদের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। এবার কাদের দায়িত্ব দেয়া হবে- সে সিদ্ধান্ত কমিশন সভায় নেয়া হবে।

এদিকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার সূচিতে পরিবর্তন এনেছে সরকার। ১১-১৮ ডিসেম্বর এই পরীক্ষা হওয়ার কথা থাকলেও এখন ২৯ নভেম্বর থেকে ৬ ডিসেম্বরের মধ্যে তা শেষ করতে বৃহস্পতিবার আদেশ জারি করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। ধারণা করা হচ্ছে ভোটের কারণেই এই সূচি এগিয়ে আনা হয়েছে।

এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক এবং প্রাথমিক শিক্ষার সঙ্গে সম্পৃক্ত সব শিক্ষা কর্মকর্তাদের আদেশের অনুলিপি পাঠানো হয়েছে। তবে মন্ত্রণালয়ের আদেশে বার্ষিক পরীক্ষার সূচিতে পরিবর্তন আনার বিষয়ে কোনো কারণ উল্লেখ করা হয়নি।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত