ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

ঠাকুরগাঁও-১ : নৌকা প্রতীকে নতুন চমকের অপেক্ষায় তৃণমূল

  ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১২ নভেম্বর ২০১৮, ২০:৫৯  
আপডেট :
 ১২ নভেম্বর ২০১৮, ২১:২৫

ঠাকুরগাঁও-১ : নৌকা প্রতীকে নতুন চমকের অপেক্ষায় তৃণমূল

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এবারে আওয়ামী লীগে চমক আসতে পারে বলে মনে করছেন ঠাকুরগাঁও-১ আসনের প্রবীন ও তৃণমূল আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দরা। এই আসনে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের ১০ জন মনোনয়ন যুদ্ধে লড়ছেন।

এদের মধ্যে অনেকেই এখন মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ার পর আদাজল খেয়ে মাঠে নামবেন তারা। তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধি হিসেবে প্রয়াত এমপি খাদেমুল ইসলামের ছেলে সাবেক ছাত্রনেতা সাহেদুল ইসলামের প্রতি নজর ভোটারদের।

এর মধ্যে মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতারা সরকারের বিগত ১০ বছরের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরছেন নিজ এলাকার সাধারণ মানুষের কাছে। ঈদ-পূজা থেকে শুরু করে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গণসংযোগও চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।

নৌকার মনোনয়ন নিশ্চিত করতে অন্তত ১০ জন মনোনয়ন প্রত্যাশী কেন্দ্রীয় নেতাদের দ্বারে দ্বারে দৌড়ঝাঁপ চালিয়ে যাচ্ছেন। নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় নেতাদের নামে পাড়া-মহল্লায় লিফলেট বিতরণ এবং পোস্টার-ব্যানার-ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে হাট-বাজার-রাস্তাঘাট। ১০ জন নিজ নিজ অবস্থান থেকে নিজেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী উল্লেখ করে সাধারণ মানুষের কাছে ভোট চাইছেন দলীয় প্রতীকে।

নৌকার টিকিট পেতে ঠাকুরগাঁও-১ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন: বর্তমান এমপি ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন, ৩ বারের প্রয়াত এমপি খাদেমুল ইসলামের ছেলে কূটনীতিক সাহেদুল ইসলাম সাহেদ, প্রয়াত ভাষা সৈনিক ও সাবেক গর্ভনর ফজলুল করিমের ছেলে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাড. মকবুল হোসেন বাবু, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ সাদেক কুরাইশী, সাবেক যুবলীগের সভাপতি ও বর্তমান সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অরুনাংশু দত্ত টিটো, কেন্দ্রীয় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ কমিটির সহ-সম্পাদক রাজিউর রেজা খোকন চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পদাক ইন্দ্রনাথ রায়, সাবেক উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও যুব মহিলা লীগের সভাপতি তাহমিনা আক্তার মোল্লা, ঠাকুরগাঁও জেলা ছাত্র লীগের সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় ছাত্র লীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক কামরুল হাসান খোকন ও জেলা আওয়ামী লীগের বানিজ্য বিষয়ক সম্পাদক শামসুজ্জামান দুলাল।

রমেশ চন্দ্র সেন আওয়ামী লীগের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে ঠাকুরগাঁও-১ আসনে আবারও এমপি হতে মনোনয়নপত্র কিনেছেন রমেশ চন্দ্র সেন। ১৯৯৬ সালে দলের মনোনয়ন পেয়ে উপনির্বাচনের মাধ্যমে সাংসদ হন রমেশ চন্দ্র সেন। ২০০১ সালে তিনি মির্জা ফখরুলের কাছে হারলেও ২০০৮ সালে আসনটি উদ্ধার করেন। তারপরে সরকারের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও পান। ২০১৪ সালের নির্বাচনে ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী ইমরান হোসেন চৌধুরীকে হারিয়ে আবারও নির্বাচিত হন তিনি।

পরে রমেশ চন্দ্র সেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য দায়িত্বপান। ইতোপূর্বে রমেশ চন্দ্র সেন ঠাকুরগাঁও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

২০০৮ সালে রমেশ চন্দ্র সেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর ঠাকুরগাঁও-১ আসনের কিছু উন্নয়ন হয়েছে।

রমেশ চন্দ্র সেন বলেন, আমি সদর আসনের উন্নয়ন করার জন্য এমপি এবং মন্ত্রী হয়েছিলাম। আমি জনগণকে যেটুকু প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম তার চেয়ে কয়েকগুণ উন্নয়ন করেছি। সেসব উন্নয়ন দৃশ্যমান। খুব অল্প সময়ের মধ্যে ঠাকুরগাঁও সদর আসন একটি মডেল উপজেলা হবে। মডেল উপজেলা করতে হলে জনগণের ভোটের মাধ্যমে পুনরায় এমপি হতে হবে। তাই পুনরায় আমাকে এমপি করার জন্য নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

অরুনাংশু দত্ত টিটো ঠাকুরগাঁও পৌরসভার আশ্রম পাড়ায় ১৯৬৪ সালে জন্ম গ্রহণ করেন। দেশকে স্বাধীন করতে যুদ্ধে অংশগ্রহন করছেন বাবা মুক্তিযোদ্ধা হিমাংশু দত্ত। বাবার আদর্শে টিটো প্রথম রাজনৈতিক জীবনে পা রাখেন ১৯৯৭ সালে। তখন তিনি ঠাকুরগাঁও জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ২০০১ সালে সরকার পতনের পরে তিনি বিএনপি, জামাতের মিথ্যা মামলার কারণে ১১ মাস কারাগারে বন্দি ছিলেন। কারাগারে তাকে বিভিন্ন নির্যাতন ও করা হয়েছে। এরপরে তিনি আবার ২০০৫ সালে জেলা যুবলীগের সভাপতি হন। ২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসে তিনি সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন। তিনি জেলা পূর্জা উদযাপন কমিটির সভাপতির দায়িত্বেও রয়েছেন। টিটো দত্ত ২০১৪ সালের ১৬ই এপ্রিলে উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। তিনি দীর্ঘদিন থেকে রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত আছেন বলেই ঠাকুরগাঁও-১ আসনের মানুষের মনে ব্যাপক ভাবে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন।

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী বর্তমান সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অরুণাংশু দত্ত টিটো বলেন, তিনি ১৯৯৬ সালে জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ২০০৫ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২০১২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত তিনি সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি দাবি করেন, ২০১৪ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি দলের সমর্থনে প্রার্থী হয়েছিলেন। কিন্তু নিজ দলের কয়েকজন নেতা গোপনে তাঁর বিরোধিতা ও ষড়যন্ত্র করায় তিনি হেরে যান। নির্বাচনে ভোট পেয়েছিলেন ১ লক্ষ ১৯ হাজার ভোট।

টিটো আরো বলেন, আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে রাজপথে থেকে বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে নানা হয়রানির শিকার হতে হয়েছে তাঁকে। মিথ্যা অভিযোগে করা মামলায় তাঁকে সাত মাস ১১ দিন জেল খাটতে হয়েছিল। এই আসনের যুবক শ্রেণীর ৮০ শতাংশ সমর্থন তাঁর পক্ষে রয়েছে। মনোনয়নের ক্ষেত্রে জেলা পর্যায়ে তৃণমূলে নির্বাচনের ভিত্তিতে প্রার্থী বাছাই হলে তিনি বিপুল সমর্থন পাবেন। কারণ জনপ্রতিনিধি না হয়েও তিনি নিজ দল ও সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। মনোনয়ন পেলে তিনি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হবেন এবং বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে সব পদক্ষপ গ্রহণ করবেন।

মুহা. সাদেক কুরাইশী ছাত্রজীবন থেকেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে উজ্জীবিত তিনি। করেছেন ছাত্র রাজনীতি, দলকে সু-সংগঠিত করার পাশাপাশি কাক্ষিত লক্ষ্যেও নিয়ে গিয়েছেন। নজর কেড়েছেন দলের শীর্ষ নেতাসহ সভানেত্রী শেখ হাসিনার। তিনি আপাদমস্তক একজন রাজনীতিবিদ। জেলা আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের ছিলেন কান্ডারি।

ঠাকুরগাঁও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুহা সাদেক কুরাইশী সরকারি কলেজে পড়াকালে ছাত্র রাজনীতি করতেন। ১৯৭৭ সালে ছাত্রদের সুসংগঠিত করে সভা, সমাবেশ মিছিলসহ বিভিন্ন ধরনের আন্দোলন সংগ্রামেও লিপ্ত ছিলেন তিনি।

১৯৮২ থেকে ৮৩ সাল পর্যন্ত ঠাকুরগাঁও জেলা যুবলীগের আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। পরে ১৯৮৪-৮৬ সাল পর্যন্ত জেলা যুবলীগের সভাপতি ছিলেন। তার নেতৃত্বে যুবলীগ হয়ে ওঠে গঠনমূলক ও শক্তিশালী। তার দক্ষতা ও নেতৃত্বের অগ্রগতিতে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য পদ লাভ করেন তিনি। পরে চলে আসেন জেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে। ১৯৯১ সালে দায়িত্ব পান প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদকের। ১৯৯৪ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পান।

২০০১ সালে দলীয় কোন্দলে দল জড়িয়ে পড়ে। কেন্দ্র থেকে ভেঙ্গে দেয়া হয় কমিটি। সেই সময় ছিল দলের দুঃসময়। দলের দায়িত্ব পড়ে যায় তার কাঁধে। সাদেক কুরাইশী জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়কের পদে থেকে তিনি দলের কোন্দল দূর করে সুসংগঠিত করেছেন দলকে। দিনরাত শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত চষে বেড়িয়েছেন। ২০০৫ সালের দলীয় কাউন্সিলে ভোটের মাধ্যমে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন সাদেক কুরাইশী।

২০১১ সালের ডিসেম্বরে জেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্বের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জেলা পরিষদের প্রশাসক পদে নিয়োগ দেন সাদেক কুরাইশীকে। নিয়োগ প্রাপ্তির পর জেলা পরিষদ সম্পর্কে মানুষের নেতিবাচক ধারণা পাল্টিয়ে ইতিবাচকে নিয়ে এসেছেন। দক্ষতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে জেলার উন্নয়ন করে যাচ্ছেন নিরলসভাবে।

সর্বশেষ ২০১৫ সালের আওয়ামী লীগের সম্মেলনে ভোটের মাধ্যমে পুনরায় সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। একাদশ নির্বাচনে প্রার্থী হবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, দল যদি মনে করেন, দলীয় মনোনয়ন পেলেই নির্বাচন করবো।

অ্যাড. মকবুল হোসেন বাবু বাবা ফজলুল করিম ধারাবাহিক ভাবে রাজনৈতিকতার সঙ্গে জড়িত ছিলেন তারই অনুপ্রেরণায় জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাড. মকবুল হোসেন বাবু নৌকা মার্কার জন্য মনোনয়ন ক্রয় করে জমা দিয়েছেন। অ্যাড. মকবুল হোসেন বাবু ২০০৮ সালে ঠাকুরগাঁও জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

তার বাবা ১৯৭০ সালে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে জড়িত হয়ে দেশকে শত্রুমুক্ত করেন। ১৯৭৩ সালে ঠাকুরগাঁও-১ আসনে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে জেলা গভর্নর নির্বাচিত হন। তিনি রাজনীতির সঙ্গে সমাজকর্মী হিসেবে আত্মনিয়োগ করেন। ঠাকুরগাঁওয়ে ডায়াবেটিক হাসপাতাল স্থাপন ও সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন সহ বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। প্রথমে তিনি আইন পেশায় জড়িত থাকলেও সংসদ সদস্য হওয়ার পর এ পেশা ছেড়ে দেন।

অ্যাড. মকবুল হোসেন বাবু বলেন, বাবার অনুপ্রেরণায় আওয়ামী রাজনৈতিতে কাজ করছি। এবার নেত্রী মনোনয়ন দিলে ঠাকুরগাঁও সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করবো। জেলার উন্নয়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। আমার বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে নেত্রীর কাছে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছি।

ছাত্রনেতা সাহেদুল ইসলাম সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাহেদুল ইসলাম সাহেদের বাবা মরহুম খাদেমুল ইসলাম ছাত্র জীবনেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও তাঁর নেতৃত্বে আস্থাশীল হয়ে ছাত্র জীবনেই রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। পরবর্তীতে বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় অংশগ্রহনের ধারাবাহিকতায় মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যার পর সারাদেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপর যে জুলুম নির্যাতন নেমে আসে সেই রোষানল থেকে তিনিও মুক্তি পাননি। তাকে দশ মাস কারাগারে রাখা হয় ।

জেল থেকে মুক্তি পেয়ে তিনি আওয়ামী রাজনীতির সবচেয়ে সংকটাপন্ন সময়ে ঠাকুরগাঁও মহকুমা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহন করে দল কে সংগঠিত করেন। এরই ধারাবাহিকতায় পরবর্তী তে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও সভাপতি নির্বাচিত হন।

মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি সফলভাবে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৮৬, ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে ঠাকুরগাও-১ আসন হতে তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। অবশেষে ১৯৯৬ সালের ১৭-ই ডিসেম্বর সংসদ সদস্য থাকাকালীন হৃদযন্ত্রের ক্রীড়া বন্ধ হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই জননেতা। পরে উপ-নির্বাচনের মাধ্যমে বর্তমান এমপি রমেশ চন্দ্র সেন নৌকা প্রতিকে নির্বাচিত হোন।

খাদেমুল ইসলামের মৃত্যুর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে সদ্য এমএ পাশ করা সাহেদুল ইসলাম কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপানে বাংলাদেশী হাইকমিশনের কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেন।

পরবর্তীতে ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠনের পর পুনরায় সাহেদুল ইসলাম কে নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট অফিসের ডেপুটি কনসাল জেনারেল নিযুক্ত করেন নেত্রী। যার দায়িত্ব সাহেদ সফলতার সাথে পালন করছেন।

তাহমিনা মোল্লা ঠাকুরগাঁওয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কখনও কোনও মহিলা সরাসরি প্রতিদ্বদ্বিতা করেননি। কিন্তু এবার সেই ইতিহাস ভাঙতে চান তাহমিনা আখতার মোল্লা। ঠাকুরগাঁও-১ আসন থেকে অধ্যক্ষ তাহমিনা আখতার মোল্লা সরাসরি প্রতিদ্বন্ধিতার জন্য দলের কাছে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন।

তাহমিনা আক্তার মোল্লা তৃণমূল পর্যায় থেকে রাজনীতি শুরু করেছেন। বিগত পৌরসভা নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ছোট ভাই, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মির্জা ফয়সাল আমিনের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে হেরেছেন। তবে নির্বাচনে তার পরাজয়ের পেছনে দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলকে দায়ী করেন কেউ কেউ। তার আগে তিনি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন তাহমিনা।

কম বয়সে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল পরিবার তারই প্রতিবাদে ঘর ছেড়েছিলেন তিনি। তাঁর চলার পথে ছিল না কোনও পারিবারিক পরিচয়। যুব মহিলা লীগকে ঠাকুরগাঁওয়ে শক্তিশালী করতে কাজ করছেন। প্রতিষ্ঠা করেছেন অটিস্টিক শিশুদের একটি স্কুল। ঠাকুরগাঁওয়ের একমাত্র ল’ কলেজটির প্রতিষ্ঠাতা তিনি। সেই কলেজের অধ্যক্ষও তিনি।

রাজিউর রেজা খোকন চৌধুরী ঠাকুরগাঁও-১ আসন থেকে মনোনয়ন ফরম কিনেছেন ঠাকুরগাঁওয়ের সন্তান ও বাংলাদেশ আওয়াামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ কমিটির সহ-সম্পাদক রাজিউর রেজা খোকন চৌধুরী। তিনি ছাত্র জীবন থেকেই ছাত্রলীগের রাজনৈতির সাথে জড়িতে। ঢাকা কলেজে পড়ার সময় সিনিয়র সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন ও পরে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য নির্বাচিত হোন তিনি।

রাজিউর রেজা খোকন চৌধুরী বলেন, আমি আশাবাদী জননেত্রী ও দেশরত্ন শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন দিয়ে জনগণের সেবা করার সুযোগ করে দিবেন। আমার মনোনয়ন ক্রয়কে কেন্দ্র করে উচ্ছ্বসিত নবীন ও প্রবীণ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

এ অবস্থায় ঠাকুরগাঁওয়ের এই আসনটি আবারো পুনরুদ্ধার করতে তরুন কোন শিক্ষিত, মার্জিত, ধনাঢ্য এবং মানবহিতৈষী প্রার্থী প্রয়োজন বলে মনে করেন এলাকাবাসী।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এবার আওয়ামী লীগের নতুন কোন প্রার্থী হলে দলের পাশাপাশি নিরপেক্ষ ভোটারসহ বিএনপির ঘরানার লোকজনের ভোটও পাবেন বলে মনে করছেন প্রবীণ রাজনৈতিক ব্যাক্তিরা। কারণ নতুন মনোনয়ন প্রত্যাশীদের কাছে সমাজহিতৈষী কর্মকান্ডে অগণিত মানুষ উপকৃত হয়েছেন। তা ছাড়া ভোটারদের কাছে একটি বিষয় স্পষ্ট ডিজিটাল যুগে নতুন প্রার্থী নিজের ভাগ্যের উন্নয়নের জন্য রাজনীতি করেন না। নতুন কোন প্রার্থী নৌকা প্রতীক নিয়ে এমপি নির্বাচিত হলে এলাকার মানুষের ভাগ্যো উন্নয়নে কাজ করবেন এমনটাই আশা করছে ঠাকুরগাঁওয়ের সাধারণ মানুষ।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত