ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

পঞ্চগড়ে শ্বাসরোধে গৃহবধূকে হত্যা

  পঞ্চগড় প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৫ নভেম্বর ২০১৮, ১৬:৫৫

পঞ্চগড়ে শ্বাসরোধে গৃহবধূকে হত্যা

পঞ্চগড়ের বোদায় শ্বাসরোধে লিলি আক্তার (৩২) নামে এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামীর বিরুদ্ধে। নিহত গৃহবধূর পরিবারের দাবি শ্বাসরোধে হত্যার পর মুখে বিষ ঢেলে দিলে তা আত্মহত্যা বলে প্রচারের চেষ্টা করা হয়। ঘটনার পর থেকেই ওই গৃহবধূর স্বামী বাবুল হোসেন পালিয়ে যায়।

বুধবার গভীর রাতে বোদা উপজেলার ময়দান দিঘি ইউনিয়নের কইমারি কাদেরপুর এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। বৃহস্পতিবার সকালে ওই নারীর মরদেহ সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠনো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

স্থানীয়রা জানায়, প্রায় ১২ বছর আগে বোদা উপজেলার ময়দান দিঘি ইউনিয়নের কইমারি কাদেরপুর এলাকার হাসেম উদ্দিনের ছেলে বাবুল হোসেনের সাথে একই উপজেলার ঝলই শালশিরি ইউনিয়নের বড়ুয়াপাড়া এলাকার সিরাজুল ইসলামের মেয়ে লিলি আক্তারের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। এটি ছিল বাবুল হোসেনের তৃতীয় বিয়ে। বিয়ের পর থেকেই নানা অজুহাতে লিলি আক্তারকে নির্যাতন করতো তার স্বামী বাবুল হোসেন।

নির্যাতনের কারণে এর আগেও তার দুই স্ত্রী সংসার ছেড়ে পালিয়ে গেছে। তাদের সংসারে গোলাম মোস্তফা (৭) ও আয়েশা খাতুন (৪) নামে দুটি সন্তান রয়েছে। সন্দেহ করে দুই সন্তানের জননী লিলি আক্তারকে বাড়িতে আটকে রেখে বাড়ির দরজায় তালা দিয়ে বাইরে যেতো বাবুল হোসেন। এক সপ্তাহ আগেও স্ত্রীকে মারধর করে হাত ভেঙে দেয় বাবুল।

বুধবার গভীর রাতে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর মুখে কীটনাশক ঢেলে দেয় বলে অভিযোগ করেছেন লিলি আক্তারের পরিবারের লোকজন। ঘটনার পর মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে তা আত্মহত্যা বলে প্রচারের চেষ্টা করে বাবুল। কিন্তু পরিস্থিতি উত্যপ্ত হয়ে উঠলে পালিয়ে যায় সে।

খবর পেয়ে বোদা থানা পুলিশ ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা যায়।

নিহত গৃহবধূ লিলির মা জামেনা খাতুন জানান, আমার মেয়েকে কষ্ট করে কোলে পিঠে করে মানুষ করেছি। বাবুল বিনা কারণে আমার মেয়ের উপর সন্দেহ করতো। নানা অযুহাতে মারধর করতো। সে আমার মেয়েকে গলা টিপে হত্যা করে বিষ ঢেলে দিয়েছে। তার ছেলে গোলাম মোস্তফা এসব দেখেছে। আমি আমার মেয়ের হত্যার বিচার চাই।

লিলির ভাই জাহাঙ্গীর আলম জানান, এক সপ্তাহ আগেও বাবুল আমার বোনকে মারধর করেছে। এতে আমার বোনের হাত ভেঙে যায়। বিয়ের পর থেকেই ও আমার বোনের সাথে অমানবিক নির্যাতন করেছে। ওর নির্যাতনে আগেও দুই স্ত্রীও পালিয়ে গেছে। আমরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমরা চাই বাবুলকে গ্রেপ্তার করে যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়।

পঞ্চগড় জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ নাঈমুল হাছান জানান, ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে বোদা থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন প্রাপ্তি সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনএম

  • সর্বশেষ
  • পঠিত