ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

লোভে পড়ে কোটি টাকা প্রতারণার শিকার ব্যাংকার

লোভে পড়ে কোটি টাকা প্রতারণার শিকার ব্যাংকার

কৌশলের কোনো শেষ নেই। কোন কোন কৌশলে অবলম্বন করলে উদ্দেশ্য হাসিল হবে সবই প্রয়োগ করা হয়। আর এতে সাফল্যও আসে। হাতিয়ে নেয়া হয় আড়াই কোটি টাকা। আর সেই প্রতারক চক্রের সদস্যরা হলেন বিদেশি।

ইতিমধ্যে কুয়েতি ফস্তো, এমেলিয়া মাওয়াবো ও হারমান মার্টিনকে আটক করেছে র‌্যাব। রাজধানীর উত্তরা থেকে বৃহস্পতিবার র‌্যাব-১ এর একটি দল তাদের আটক করে। এদের মধ্যে দুজন ক্যামেরুনের নাগরিক, অন্যজন আফ্রিকান হলেও কোন দেশের তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আটকের সময় তাদের কাছ থেকে প্রায় ৬৫ লাখ টাকার সমপরিমাণ ইউরো এবং বিদেশি মদ উদ্ধার করা হয়।

শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান জানান, আটকরা আন্তর্জাতিক প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি জানান, এক মাস আগে রোজার্স নামে এক ব্যক্তি নিজেকে জার্মানির নাগরিক পরিচয় দিয়ে ওই ব্যাংক কর্মকর্তাকে ফোন করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে ১১ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে চান।

এর কয়েকদিন পর বোস্তাভো স্টিভস নামে ওই চক্রের আরেক সদস্য ব্যাংক কর্মকর্তাকে ফোন করেন। বলেন গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেলে ক্যামেরুনের নাগরিক ফস্তোর সঙ্গে দেখা করতে। পরিচয়ের পর তাদের মধ্যে একাধিকবার বৈঠক হয়। কীভাবে টাকা বাংলাদেশে আনা যায়, কোন খাতে বিনিয়োগ করা যায়, এসব বিষয়ে।

একপর্যায়ে ফস্তো থাকা-খাওয়ার জন্য ওই ব্যাংক কর্মকর্তার কাছে চার হাজার ডলার চান। বড় বিনিয়োগের লোভে ওই ব্যাংক কর্মকর্তা তাকে চার হাজার ডলার দেন। এরপর থেকে দেখা হলে ফস্তো গাড়ি দেখিয়ে রাষ্ট্রদূত গাড়ি পাঠিয়েছেন, মিটিং আছে, অনেক ব্যস্ত এসব বলে ওই ব্যাংক কর্মকর্তার বিশ্বাস অর্জন করেন।

মুফতি মাহমুদ খান জানান, কিছুদিন পর ফস্তো ওই ব্যাংক কর্মকর্তার কাছে আড়াই লাখ ইউরো চান। বিনিময়ে ডলার ও অতিরিক্ত ২০ লাখ টাকা দেয়া হবে বলে জানান। এরপর ৩১ অক্টোবর ফস্তো তার আরেক সহযোগীকে নিয়ে ওই ব্যাংক কর্মকর্তার বাসায় যান। খাওয়া শেষে ইউরোগুলো দেখতে চান।

এসময় ওই ব্যাংক কর্মকর্তা কাগজের প্যাকেটে মোড়ানো ইউরো বের করে দেখান। তখন ফুতসুর সহযোগী একটা বোতল বের করে তার সামনে ফেলে দেন। এতে ওই ব্যাংক কর্মকর্তার গায়ে কিছুটা তরল পড়ে ঝাঁঝালো একটা গ্যাস বের হয়। এটা বিষাক্ত জানিয়ে তারা ওই ব্যাংক কর্মকর্তাকে ফ্রেশ হয়ে আসতে বলেন। তিনি ফ্রেশ হতে গেলে কাগজের প্যাকেট থেকে ইউরো সরিয়ে সেখানে সাদা কাগজ রেখে দেন ফস্তো। বের হওয়ার সময় বলেন তারা ডলার আনেননি। তাই পরেরদিন এসে ডলার দিয়ে ইউরো নিয়ে যাবেন। কিন্তু পরের দিন ফস্তোর ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এতে ব্যাংক কর্মকর্তার সন্দেহ হয়। বাসায় গিয়ে প্যাকেট খুলে দেখেন সেখানে ইউরো নেই, সাদা কাগজ ভরা।

জেডএইচ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত