ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২২ মিনিট আগে
শিরোনাম

শিক্ষক-শিক্ষার্থীর ভালোবাসার রসায়ন

  মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার

প্রকাশ : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১২:২৫

শিক্ষক-শিক্ষার্থীর ভালোবাসার রসায়ন

ভালোবাসার যথাযথ ও মমতাময় চর্চার অভাবে বাংলাদেশে উন্নয়ন বিঘ্নিত হচ্ছে। রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও সমঝোতার প্রকট ঘাটতি দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনকে আজ ভালোবাসাহীন মরুভূমিতে পরিণত করেছে। সেখানে পরস্পরের প্রতি একটুও ভালোবাসা নেই। আছে কেবল শত্রুতা, ঘৃণা, নিষ্ঠুরতা এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে বাগে পেলে পঙ্গু, নিষ্ক্রিয় ও নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার প্রবণতা। কেবল রাজনীতি নয়, ভালোবাসার অভাব স্পষ্ট হচ্ছে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে। ফলে বন্ধুর সঙ্গে বন্ধুর, কর্মীর সঙ্গে সহকর্মীর, মালিকের সঙ্গে শ্রমিকের, পিতামাতার সঙ্গে সন্তানের, ওস্তাদের সঙ্গে শিষ্যের, শিক্ষকের সঙ্গে শিক্ষার্থীর ভালোবাসার সম্পর্কে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে ভালোবাসার সম্পর্ক দুর্বল এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে (যেমন রাজনীতিতে) বিষাক্ত হয়ে উঠেছে। দারিদ্র্য বিমোচনে বিদেশ থেকে ঋণ এনে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে দারিদ্র্য হ্রাস করা যায়; কিন্তু দাতা সংস্থাগুলো এমন কোনো ঋণ দেয় না যা দিয়ে ভালোবাসার ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব।

ভালোবাসার শক্তিই টিকিয়ে রাখে পারিবার ও সামাজিক বন্ধন। বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে বাংলাদেশে ভালোবাসা নিয়ে এমন অনেক কিছু হয় যাতে ভালোবাসা আরও সংকুচিত হয়ে পড়ে। এ দিবসে এ দেশে কেবল তরুণ-তরুণীর প্রেম-ভালোবাসা নিয়ে মাতামাতি করা হয়। ফুলের দোকানে বিক্রি বাড়ে। প্রেমিক-প্রেমিকারা পুষ্প বিনিময় করেন। বয়স্করা তাদের যৌবনের প্রেম-ভালোবাসার কাহিনী শোনান। কিন্তু এ এলাকা ছাড়া ভালোবাসার আরও যে হাজারও এলাকা রয়েছে সেসব এলাকায় ভালোবাসার সক্রিয়তা ও নিষ্ক্রিয়তা সম্পর্কে কদাচিৎ আলোকপাত করা হয়। সমাজের প্রতিটি সম্পর্ক ভালোবাসানির্ভর হলেও সব ক্ষেত্রে ভালোবাসার দুর্বলতাকে সবল করতে কোনো নির্দেশনা দেয়া হয় না। পরিবর্তে ভালোবাসার পবিত্রতায় নষ্ট করার কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। পত্রিকার ছোট প্রবন্ধে ভালোবাসার বহুমাত্রিকতার আলোচনা শেষ করা যাবে না। সেজন্য এ নিবন্ধে কেবল শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্কের ভালোবাসার রসায়নের স্বরূপ নিয়ে আলোচনা করা হবে।

শিক্ষক-শিক্ষার্থীর ভালোবাসার ওপর টিকে আছে শিক্ষাঙ্গন। সম্মানিত শিক্ষকরা হচ্ছেন মানুষ গড়ার কারিগর। শ্রেণীকক্ষে পাঠদানই তাদের প্রধান কাজ নয়; তারা শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন দেখান। ওপরে ওঠার স্বপ্ন। বড় হওয়ার স্বপ্ন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন। শিক্ষকদের আরেকটি কাজ আছে, সে কাজটি হল একাডেমিক গবেষণার মধ্য দিয়ে নতুন জ্ঞান সৃষ্টি ও সে জ্ঞান শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করা। শিক্ষকরা সব শিক্ষার্থীকে একই চোখে দেখবেন। তাদের একই রকমভাবে ভালোবাসবেন। সম্মানিত শিক্ষকরা যদি এসব কাজ আন্তরিকতার সঙ্গে করেন, তাহলে শিক্ষার্থীর সাধ্য নেই শিক্ষককে ভালো না বাসার। শিক্ষক যদি শিক্ষার্থীদের সুবিধা-অসুবিধা দেখেন, তাদের সবার প্রতি সমান আচরণ করেন, তাহলে শিক্ষার্থীরা শিক্ষককে ভালো না বেসে পারবে না। কিন্তু প্রশ্ন হল, সব শিক্ষক কি শিক্ষার্থীদের সমানভাবে ভালোবাসতে পারেন? তারা মনোযোগ দিয়ে তাদের সমস্যা শোনেন? তাদের জন্য সময় দিতে পারেন? না, অনেকেই তা পারেন না। কারণ তাদের অনেকে মূল কর্মক্ষেত্রের একাডেমিক দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন না করে বাড়তি উপার্জনের জন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ান। কনসালটেন্সিতে জড়িত হন। ফলে ছাত্রছাত্রীদের প্রতি প্রত্যাশিত মনোযোগ দিতে না পারায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীর ভালোবাসার ঘনত্ব কমে যায়।

সাম্প্রতিককালে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্কে ভালোবাসার ঘাটতি লক্ষ করা যায়। পত্রিকায় প্রকাশিত হয় শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রী লাঞ্ছিত হওয়ার খবর। শিক্ষক-শিক্ষার্থীর ভালোবাসার সম্পর্কে ঘাটতি সৃষ্টি হওয়ার আরেকটি কারণ হল শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের দলীয় রাজনীতিতে জড়িত হওয়া। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে অধিকাংশ শিক্ষকই এখন বর্ণের আবরণে দলীয় রাজনীতিতে যুক্ত। আর ক্যাম্পাসে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর রাজনীতি পৃথক না হওয়ায় সম্মানিত ভিসি মহোদয়কে অনেক সময় সমস্যা মোকাবেলায় নিজ দল সমর্থিত ছাত্র নেতাকর্মীদের ডাকতে হয়। ফলে এমন শিক্ষক সব শিক্ষার্থীর কাছ থেকে কীভাবে ভালোবাসা পাবেন? এতে স্বাভাবিকভাবেই শিক্ষক-শিক্ষার্থীর ভালোবাসার পরিধি সংকুচিত হয়ে পড়ে।

একাডেমিক দায়িত্বপালনে যত্নবান হলে, শিক্ষার্থীর প্রতি যথাযথ আচরণ করলে ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষককে অবশ্যই ভালোবাসবে। তারা তাকে শ্রদ্ধা করবে। অনেক সময় তাকে উপহার দেবে। তার একাডেমিক কাজে সহায়তা করবে। তবে এ বিষয়টি একতরফা হওয়া কাম্য নয়। শিক্ষার্থীও যদি তার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে, শিক্ষকের নির্দেশমতো লেখাপড়া ও অন্যান্য একাডেমিক কাজকর্ম করে, তাহলে শিক্ষকেরও উচিত ওই শিক্ষার্থীকে একাডেমিক পিতার মতো ভালোবাসা। ক্লাসে পড়ানো ছাড়াও তার সুবিধা-অসুবিধা দেখা। তাকে যতদূর সম্ভব সহায়তা করা। তা না হলে শিক্ষার্থীরা শিক্ষককে কেবল একতরফাভাবে ভালোবেসে গেলে সে ভালোবাসা টেকসই হবে না। শিক্ষক কেবল শিক্ষার্থীর ভালোবাসা গ্রহণ করবেন, বিনিময়ে তাকে ভালোবাসবেন না, তা হতে পারে না। ছাত্র শিক্ষককে ভালোবেসে তার বাগানের খেজুর গাছের রসের গুড় এনে দেবে, আম এনে দেবে, আর শিক্ষক কেবল একের পর এক তার উপহার গ্রহণ করবেন, তা কেমন করে হয়? বিনিময়ে শিক্ষককেও ছাত্রছাত্রীদের মাঝে-মধ্যে উপহার দিতে হবে। মনে রাখতে হবে, শিক্ষকের সামান্য উপহার শিক্ষার্থীর কাছে অনেক মূল্যবান হিসেবে গণ্য হয় এবং তারা তা শিক্ষকের ভালোবাসার নিদর্শন হিসেবে আজীবন মনে রাখে।

শিক্ষককে এ ব্যাপারে কৌশলী হতে হয়। তাকে যে শিক্ষার্থীকে ভালোবেসে মূল্যবান উপহার দিতে হবে এমন নয়। শিক্ষার্থীকে সময় দেয়া, তার সমস্যা মনোযোগ দিয়ে শোনা, তাকে লেখাপড়ায় কাউন্সেলিং করা, তাকে লেখালেখি ও গবেষণায় উৎসাহিত করা- এসবও উপহারের মতো। তবে এরপরও শিক্ষক যদি শিক্ষার্থীকে ভালোবেসে একটি সামান্য কলম বা সামান্য কোনো দ্রব্যাদি উপহার দেন, শিক্ষার্থীর কাছে সে সামান্য উপহারই অসামান্য হিসেবে বিবেচিত হয়। তিনি যদি শিক্ষার্থীকে ভালোবেসে লাঞ্চ বা ডিনার খাওয়ান, শিক্ষার্থী তা আজীবন মনে রাখে। আমার ৩৫ বছরের শিক্ষকতা জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বুঝেছি, শিক্ষক শিক্ষার্থীকে ভালোবাসলে ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষককে আজীবন ভালোবাসবে। শ্রদ্ধার আসনে রাখবে। কখনই ভুলতে পারবে না।

একাডেমিক কার্যক্রমের মধ্য দিয়েও কোনো শিক্ষক শিক্ষার্থীদের প্রতি তার ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে পারেন। শিক্ষার্থীর প্রতি শিক্ষকের সবচেয়ে বড় উপহার হল তাদের যথাযথ মনোযোগ দিয়ে ক্লাসে পড়ানো। এরপরও বিভিন্ন কৌশলে তাদের প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে তাদের মনে রেখাপাত করা যায়। প্রিয় শিক্ষার্থী ও সম্মানিত পাঠক আত্মপ্রচার না ভাবলে একটি সাম্প্রতিক উদাহরণ দেব। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগে টিউটোরিয়াল পরীক্ষা নেয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষকরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিজ গ্রুপের শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট দেন এবং শিক্ষার্থীরা সে অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিলে শিক্ষক মূল্যায়ন করে শিক্ষার্থীদের টিউটোরিয়াল নম্বর দেন। এ অ্যাসাইনমেন্ট মূল্যায়ন করে দেখে অনেক শিক্ষক ভুলত্রুটি শুধরে মতামত ও পরামর্শ লিখে অনেকে শিক্ষার্থীকে অ্যাসাইনমেন্টটি ফেরত দেন, আবার অনেকে অ্যাসাইনমেন্ট ফেরত না দিয়েই শিক্ষার্থীকে টিউটোরিয়াল নম্বর দেন। আমিও দু-এক বছর এমনটি করেছি। কোনো সম্মানিত শিক্ষক আবার লিখিত পরীক্ষার সঙ্গে মৌখিক পরীক্ষা নিয়েও টিউটোরিয়াল নম্বর দেন। আমি পড়ানোর বা টিউটোরিয়াল পরীক্ষা নেয়ার ক্ষেত্রে প্রায়ই নতুন এক্সপেরিমেন্ট করি। এখানে আমার টিউটোরিয়াল পরীক্ষা নেয়ার একটি সাম্প্রতিক নমুনা উল্লেখ করব। এ নমুনায় শিক্ষার্থীদের প্রতি শিক্ষকের ভালোবাসার স্পর্শ পাওয়া যাবে।

আমি চতুর্থ বর্ষ সম্মান শ্রেণিতে ‘পলিটিক্স অ্যান্ড করাপশন’ শিরোনামের একটি কোর্স পড়াই। এ বর্ষে আমার টিউটোরিয়াল গ্রুপের (‘খ’) ২৭ শিক্ষার্থীকে আমি ‘বাংলাদেশে দলীয় সরকারের অধীনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হতে পারে’ বিষয়ে একটি বিতর্ক সভা আয়োজনের অ্যাসাইনমেন্ট দিই। তাদের দুটি নদীর নামে (হালদা ও কর্ণফুলী) দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে দুটি দল গঠন করতে বলি। প্রতি দল থেকে তিনজন করে তার্কিক, যাদের একজন হবেন দলনেতা, ঠিক করতে বলি। কোন দল বিষয়বস্তুর পক্ষে বা বিপক্ষে বলবে তা-ও নির্ধারণ করতে বলি। তাদের মধ্য থেকেই একজন করে সভাপতি, অনুষ্ঠান উপস্থাপক, সময় পরিচালনাকারী এবং চারজন বিচারক নিয়োগ করতে বলি। প্রতি দলকে সম্মিলিতভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করে বিতর্ক সভার দিনক্ষণ ঠিক করে আমাকে যথাসময়ে ডাকতে বলি। শিক্ষার্থীরা আমাকে জিজ্ঞেস করেন, ‘স্যার, সবই আমাদের করতে হবে?’ আমি বললাম, হ্যাঁ সবই তোমরা করবে। তাদের পরবর্তী জিজ্ঞাসা- স্যার আপনি কী করবেন? আমার উত্তর, আমি পেছনের বেঞ্চে পর্যবেক্ষক হিসেবে বসে থাকব।

নির্দিষ্ট দিনের আগেই আমি শিক্ষার্থীদের না জানিয়ে বিতর্ক সভায় সংশ্লিষ্ট ১৩ জনের জন্য ‘সম্মানিত বিচারক’, সম্মানিত সভাপতি’ এভাবে সম্মান দিয়ে পরিচিতি লিখে গলায় ঝোলানো নামফলক তৈরি করি। সংশ্লিষ্ট ১৩ জনের জন্য যৎসামান্য খরচ করে পুরস্কারের ব্যবস্থা করি। এ পুরস্কার ছিল অল্পদামের বিভিন্ন কোম্পানির বিস্কুটের প্যাকেট, ম্যাংগো বার ইত্যাদি। কিন্তু সস্তা হলেও রঙিন র‌্যাপিং পেপারে ভালোবাসার ছোঁয়ায় মুড়িয়ে সেগুলোকে আকর্ষণীয় করা হয়। সুনির্দিষ্ট সময়ে শিক্ষার্থীরা বিতর্ক সভাটি সম্পন্ন করে। বিচারকদের নম্বর যোগ করার পর সম্মানিত সভাপতি ফলাফল ঘোষণা করেন। এখানে জয়-পরাজয় বড় বিষয় ছিল না। নিজেরা মিলে একটি বিতর্ক সভা আয়োজনের প্রশিক্ষণ এবং তাতে অংশগ্রহণের বিষয়টিই ছিল মুখ্য। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী সবকিছু সুসম্পন্ন হলে পর্যবেক্ষক হিসেবে সম্মানিত সভাপতি আমাকে দু’-তিন মিনিটের জন্য ফ্লোর দেন। পুরস্কারের কোনো বিষয় শিক্ষার্থীরা জানত না। আমি প্রিয় বিতার্কিকদের সামান্য পরামর্শ দিয়ে যখন তাদের পুরস্কৃত করি, তখন তারা আনন্দিত হয়ে আমার ভালোবাসা মোড়ানো সুদৃশ্য র‌্যাপিং পেপারে জড়ানো সস্তা পুরস্কারকে দুর্লভ সম্মান হিসেবে গ্রহণ করে। শিক্ষক যদি শিক্ষার্থীকে খুশিমনে ভালোবেসে ১০ টাকা দামের সস্তা পুরস্কারও দেন, শিক্ষার্থীরা সেটি মূল্যবান পুরস্কার হিসেবে গণ্য করে। আলোচ্য বিতর্ক সভার পুরস্কার দিয়ে আমি এ বিষয়টি অনুধাবন করেছি। শিক্ষার্থীদের প্রতি শিক্ষকের নির্ভেজাল ভালোবাসা থাকলে সামান্য ২০০ থেকে ৩০০ টাকা খরচ করেও শিক্ষার্থীদের হাজার টাকার আনন্দ দিয়ে তাদের ভালোবাসা পাওয়া যায়, আলোচ্য বিতর্ক সভাটি ছিল তারই প্রমাণ। কাজেই শিক্ষার্থী শিক্ষককে, আর শিক্ষক শিক্ষার্থীকে ভালোবাসতে চাইলে তার জন্য অর্থের দরকার হয় না। প্রয়োজন পড়ে পারস্পরিক কল্যাণ কামনা, সহযোগিতা ও আন্তরিকতার। পারস্পরিক আন্তরিকতা ও শুভকামনাই শিক্ষক-শিক্ষার্থীর ভালোবাসার রসায়নকে মিষ্টি উষ্ণতায় জড়িয়ে রাখে। আর শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মধ্যে যদি এমন সম্পর্ক গড়ে তোলা যায়, তাহলে শিক্ষাজীবন শেষ হয়ে গেলেও শিক্ষক-শিক্ষার্থীর ভালোবাসা অব্যাহত থাকে। শিক্ষক যদি তার ছাত্রছাত্রীদের ভালোবাসেন, তাহলে শিক্ষার্থীরা যত দূরেই যাক না কেন, তাদের সাধ্য নেই শিক্ষককে ভুলে যাওয়ার; তাকে ভালো না বাসার।

ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার : অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান, রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত