ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

জেএসসি-জেডিসিতে নম্বর-বিষয় কমানোর প্রস্তাবে একমত মন্ত্রণালয়

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ২০ মে ২০১৮, ২১:৩৮  
আপডেট :
 ২০ মে ২০১৮, ২১:৪৬

জেএসসি-জেডিসিতে নম্বর-বিষয় কমানোর প্রস্তাবে একমত মন্ত্রণালয়

জেএসসি (জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট) ও জেডিসি (জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট) পরীক্ষায় ২০০ নম্বর কমানোর বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে নম্বর ও বিষয় কমানোর বিষয়ে শিক্ষা বোর্ডগুলোর চেয়ারম্যানদের প্রস্তাবের সঙ্গে একমত হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটির (এনসিসিসি) সভায়। এ জন্য ২৭ মে এনসিসিসির সভা ডাকা হয়েছে।

রোববার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিবের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এমসিকিউ (নৈর্ব্যক্তিক) আগের মতোই রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে আগামী রোববার ফের জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটির (এনসিসি) সভা ডাকা হয়েছে।

সভার বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, ‘২০০ নম্বর পরীক্ষা কমানোর বিষয়ে আন্তঃশিক্ষাবোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক উপকমিটির প্রস্তাবের সঙ্গে আমরা একমত হয়েছি। বিতর্ক এড়াতে এনসিসির মিটিং ডাকা হয়েছে। মিটিংএ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে এ বছর থেকেই এমসিকিউ তুলে দেওয়ার পক্ষে। শিক্ষাবর্ষের পাঁচ মাস চলে যাওয়ায় এমসিকিউ বহাল রাখার পক্ষে অন্যরা মত দিয়েছেন। এনসিসি বৈঠকে এ নিয়েও আলোচনা হবে।’

গত ৮ মার্চ আন্তঃশিক্ষাবোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক উপকমিটির সভায় জেএসসি ও জেডিসিতে বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ে ১০০ নম্বর করে পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তাব করা হয়। আর ঐচ্ছিক বিষয়ে (গার্হস্থ্য অর্থনীতি/কৃষি) পরীক্ষা না নিয়ে শ্রেণিকক্ষে ধারাবাহিক মূল্যায়ন করার প্রস্তাব করেন বিভিন্ন বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকরা। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে রোববার সভা ডাকে মন্ত্রণালয়।

সভায় মন্ত্রণালয়ের কলেজ, মাধ্যমিক ও মাদ্রাসা শাখার অতিরিক্ত সচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মহাপরিচালক, ঢাকা শিক্ষাবোর্ড, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, জাতীয় শিক্ষক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি, ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকসহ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় সভাপতিত্ব করেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন। ৮ মে শিক্ষা বোর্ডগুলোর চেয়ারম্যানরা এই দুই পরীক্ষায় নম্বর ও বিষয় কমানোর প্রস্তাব করেছিলেন। এখন এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানতে শিক্ষার্থীদের আরও এক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে।

সভা সূত্রে জানা গেছে, বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ে ৫০ নম্বর করে কমালে পরীক্ষায় নম্বর বণ্টন কীভাবে হবে। এমসিকিউ কত নম্বরের হবে। এনিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হলেও কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেননি। তবে চলতি বছরের পরীক্ষায় এমসিকিউ রাখার বিষয়ে সচিব ছাড়া সবাই একমত হয়েছেন। প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছর ধরে ফাঁস হওয়া প্রশ্নের সবগুলোই ছিল এমসিকিউ। চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় ১২টি বিষয়ের ৩৬০ নম্বর এমসিকিউ প্রশ্নফাঁসের প্রমাণ পেয়েছে আন্তঃমন্ত্রণালয় তদন্ত কমিটি। কমিটি প্রশ্নফাঁসের চারটি কারণ চিহ্নিত করেছে। এর মধ্যে এমসিকিউ অন্যতম। এছাড় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারাও এমসিকিউ তুলে দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন। এ প্রেক্ষিতে গত ৩ মে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ আগামী জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষায় বড় ধরনের সংস্কার ও পরিবর্তন আনার ঘোষণা দিয়েছিলেন। মন্ত্রীর ঘোষণা ১৭ দিন পার হয়ে গেলেও প্রায় ৩০ লাখ পরীক্ষার্থী সঠিক সিদ্ধান্ত জানতে পারেনি। তার উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় রয়েছেন।

আন্তঃশিক্ষাবোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক উপ কমিটির প্রস্তাব এনসিসিতে পাস হলে এ বছর জেএসসি ও জেডিসিতে সাতটি বিষয়ের পরীক্ষা হবে। বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। ঐচ্ছিক বিষয় (গার্হস্থ্য অর্থনীতি বা কৃষি) শ্রেণিকক্ষে ধারাবাহিক মূল্যায়ন করা হবে। অর্থাৎ ২০০ নম্বরের পরীক্ষা কমবে। শিক্ষার্থীদের জিপিএ নির্ধারণের ক্ষেত্রে এর কোনো প্রভাব থাকবে না।

গত বছর জেএসসি ও জেডিসিতে ১৩টি বিষয়ের মধ্যে তিনটি বিষয়ের পরীক্ষা তুলে দেওয়া হয়। বিষয়গুলো হচ্ছে চারু ও কারুকলা, শারীরিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্য এবং কর্ম ও জীবনমুখী শিক্ষা। এই তিনটি বিষয়ে গত বছর থেকে শ্রেণিকক্ষে ৫০ নম্বরের ধারাবাহিক মূল্যায়ন হচ্ছে। গত বছর জেএসসিতে বাংলা প্রথম পত্র ১০০, দ্বিতীয়পত্র ৫০, ইংরেজি প্রথমপত্র ১০০, দ্বিতীয়পত্র ৫০, গণিত এবং বিজ্ঞান, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এবং ধর্ম, গার্হস্থ্য অর্থনীতি/কৃষি বিষয়ে ১০০ করে ৮০০ নম্বর এবং তথ্য প্রযুক্তি ৫০ নম্বরসহ মোট ৮৫০ নম্বরের পরীক্ষা হয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত