ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

কোন প্রক্রিয়ায় নিয়োগ দেবে এনটিআরসিএ?

  আশরাফুল ইসলাম মাসুম

প্রকাশ : ২২ জুন ২০১৮, ১৭:১৩

কোন প্রক্রিয়ায় নিয়োগ দেবে এনটিআরসিএ?

যুগের নিজস্ব চাহিদা আছে। তাই যে কোনো উপায়েই হোক সময়ের সাথে পুরনো অনেক কিছুই পরিবর্তন হয়ে যায়। মানুষকেই এগিয়ে এসে সেই পরিবর্তন ঘটাতে হয়। দেরিতে হলেও কেউ না কেউ এগিয়ে আসেই। প্রয়োজন, চাহিদা, বঞ্চনা ইত্যাদিই বলে দেয় কি করতে হবে। সেই সূত্র ধরেই কোটা সংস্কার আন্দোলন, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করার আন্দোলন।

এসব হওয়ারই ছিলো, হতোই, হবেই। সব কিছুই সংস্কার হয়ে একটা ভারসাম্যের অবস্থায় থাকুক, এগিয়ে যাক দেশ। বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে অনেক কিছুরই সংস্কার প্রয়োজন। তবে কখন যে কোন অসংগতির দিকে ফোকাস যাবে আগে থেকে বলা যায়না। যেমনঃ ইদানীং মাদক নিয়ন্ত্রণের প্রতি ফোকাস সারা দেশজুড়ে। তবে সবকিছুই চট করে জাতীয় ইস্যুতে আসতে পারেনা। যাই হোক এতো কিছু বলে আমি অবশ্য আরেকটি আপাত ক্ষুদ্র বিষয়ের দিকে ফোকাস করার চেষ্টা করছি যা এখনো জাতীয় ইস্যু হয়ে উঠতে পারেনি। এক কথায় এটি হলো বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগের হালচাল।

সারা দেশে অসংখ্য এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আমাদের অনেকেই এরকম স্কুল, কলেজে পড়াশোনা করেছি। সরকারের পক্ষ থেকেই এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীর বেতন ভাতা দেয়া হলেও পদ্ধতিটি একটু ভিন্ন। পুরোপুরি সরকারি সুযোগ সুবিধা পায়না তারা। তবে সরকারের এদিকে নজর একেবারেই নেই তা নয়। পর্যায়ক্রমে এসব প্রতিষ্ঠান জাতীয়করনের প্রক্রিয়া ধীরগতিতে হলেও চলছে। একসময় এসব প্রতিষ্ঠান হয়তো পুরোপুরি সরকারি হয়েই যাবে। এসব প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ প্রক্রিয়াও ছিলো প্রশ্নবিদ্ধ। লোকাল কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ বাণিজ্য চলতো প্রকাশ্যে। বর্তমানে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। নিয়োগের ক্ষমতা কমিটির হাত থেকে নিয়ে দেয়া হয়েছে এনটিআরসিএ (বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ) নামক সরকারি প্রতিষ্ঠানের হাতে।

অবশ্য এরপরেও পুরোপুরি স্বচ্ছতা আসেনি। নানা অনিয়ম দুর্ণীতির অভিযোগ আছে তাদের বিরুদ্ধেও। এখন পর্যন্ত তারা ২০১৬ সালে শুধু একটি নিয়োগ সম্পন্ন করতে পেরেছে। কিন্তু এর পরপরই একদল নিয়োগ প্রার্থী সংক্ষুব্ধ হয়ে আদালতে রিট পিটিশন দায়ের করে তাদের বিরুদ্ধে।

কিছুদিন পূর্বে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের মাধ্যমে তার একটি মীমাংসা হয়ে গেছে। এরমধ্যে আর কোনো নিয়োগ সম্পন্ন হয়নি। তবে এখন সামনে একটি নিয়োগের সম্ভাবনা চলে এসেছে। কিন্তু প্রার্থীদের মধ্যে চলছে নানা জল্পনা কল্পনা। আদালতের রায়ের বাস্তবায়ন করে ঠিক কোন প্রক্রিয়ায় নিয়োগ দেবে এনটিআরসিএ তা এখনো পরিস্কার নয় কারো কাছে। কতৃপক্ষও এখনো মুখ খোলেনি। তবে রায়টি পড়ে আমার কাছে আগামী নিয়োগ প্রক্রিয়ার সম্ভাব্য পদ্ধতি যেমন হতে পারে বলে মনে হয়েছে তা বর্ণনা করেছি।

এসব প্রতিষ্ঠানের বেতন ভাতা বর্তমানে খারাপ নয়। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় পাশ করা ছাত্র ছাত্রীও এসব প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। যদিও কিছুদিন পূর্বে এসব প্রতিষ্ঠানের চাকরি তেমন আকাঙ্ক্ষিত ছিলোনা উচ্চশিক্ষিত প্রার্থীদের কাছে। যাই হোক ফোকাস করার কারণ হলো এনটিআরসিএ র এই শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া এখনো অনেক প্রশ্নবিদ্ধ থেকে যাবে। আন্দোলন সংগ্রাম লেগেই থাকবে। সহসাই সমাধান হয়ে একটি স্থায়ী অবস্থায় আসবে বলে মনে হচ্ছেনা। কাজেই বিশিষ্ট শিক্ষাবিদদের এবং কতৃপক্ষের এদিকে একটু নজর দেয়া প্রয়োজন।

বিষয়টির সাথে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা এবং লক্ষাধিক লোকের জীবিকার প্রশ্ন জড়িত। যাই হোক খুব সম্প্রতি যে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে যাচ্ছে তার সম্ভাব্য পদ্ধতি নিয়ে আমার ধারণা ব্যক্ত করেছি। কেউ চাইলে চোখ বুলাতে পারেন।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত