এমপিওভুক্তির দাবিতে আমরণ অনশনের আল্টিমেটাম
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৩ জুন ২০১৮, ২০:১৮ আপডেট : ২৩ জুন ২০১৮, ২০:২৫
এমপিওভুক্তির বিষয়ে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া না পেলে আগামী সোমবার (২৪ জুন) থেকে আমরণ অনশনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা।
শনিবার দুপরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে প্রতীকী অনশন কর্মসূচি পালন কালে নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার এ ঘোষণা দেন।
নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক কর্মচারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বিনয় ভূষণ রায় বলেন, আজকের প্রতীকী অনশন শেষে কাল সরকার কী করে, তা তারা দেখবেন। কালকের মধ্যে যদি কোনো সিদ্ধান্ত না পান, তাহলে তাঁরা আগামী সোমবার থেকে আমরণ অনশন শুরু করবেন।
আন্দোলনরত শিক্ষক-কর্মচারীরা জানান, ২০০৬ সাল থেকে তারা আন্দোলন করে আসছেন। সবশেষ গত ১০ জুন থেকে টানা আন্দোলন করছেন শিক্ষকরা। গত সোমবার থেকে রাতেও অবস্থান করছেন। এর আগে একই দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনশন কর্মসূচিতে নামে নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশন।
এর আগে গত ৩১ ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত অনশন করার পর প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে তারা অনশন ভঙ্গ করে ফিরে যান। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা তখন তাদের দাবি পূরণের প্রতিশ্রুতি দেন।
এরপর সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে বলা হয়েছে, নতুন অর্থবছরে নতুন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হবে। কিন্তু অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের যে বাজেট প্রস্তাব করেন, সেখানে তিনি নতুন এমপিওভুক্তির বিষয়ে সুস্পষ্ট কিছু বলেননি। ফলে ১০ জুন থেকে আবারো আন্দোলনে নামেন শিক্ষকরা।
এর প্রেক্ষিতে ১১ জুন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সচিবালয়ে এক অনুষ্ঠানে বলেন, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হবে। বাজেটে উল্লেখ না থাকলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, সেটা থেকেই এমপিওভুক্ত করা হবে।
প্রসঙ্গত, এবারের বাজেটে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই বিভাগের জন্য ৫৩ হাজার ৫৪ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। এটি প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে খাতওয়ারি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ। তবে বরাদ্দের ক্ষেত্রে প্রাথমিক বিদ্যালয়, কারিগরি বিদ্যালয় ও কলেজ নির্মাণসহ বিভিন্ন অবকাঠামোর ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষকরা বলছেন, শিক্ষামন্ত্রীর কাছ থেকে একাধিকবার আশার কথা শুনেছেন। কিন্তু তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় এখন মন্ত্রীর কোনো কথায় তারা আশ্বস্ত নন। শিক্ষামন্ত্রী অন্তত ২৭ বার তাদের আশা দিয়েছেন। এখন আর ওনার কথায় আশ্বস্ত হতে পারছেন না তারা। সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে ঘোষণা চান।
উল্লেখ্য, বর্তমানে সারাদেশে নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৫ হাজার ২৪২টি। এসব প্রতিষ্ঠানে এক দশকেরও বেশি সময় থেকে বিনা বেতনে পাঠদান করছেন— এমন শিক্ষকের সংখ্যা প্রায় ৮০ হাজার। ছয় বছর বন্ধ থাকার পর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সর্বশেষ ২০১০ সালে আওয়ামী লীগ সরকার এক হাজার ৬২৪টি বেসরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও কলেজকে এমপিওভুক্ত করে।
ডিপি/
