ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

ছাত্রীকে যৌন হয়রানি: শিক্ষকের শাস্তি চেয়ে বাবার আবেদন

  ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২১ জুলাই ২০১৮, ১৭:০২  
আপডেট :
 ২১ জুলাই ২০১৮, ১৭:০৫

ছাত্রীকে যৌন হয়রানি: শিক্ষকের শাস্তি চেয়ে বাবার আবেদন

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার সরকারের বিরুদ্ধে বিভাগের এক ছাত্রীকে হুমকি ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে বিচারের দাবি জানিয়েছেন ওই ছাত্রীর বাবা।

গত ১৪ জুলাই ওই শিক্ষার্থীর বাবা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর বিভাগের শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার সরকারের বিচার ও প্রয়োজনীয় কঠোর পদক্ষেপ গ্রহনের দাবি জানিয়ে একটি লিখিত আবেদন করেন।

শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এস এম আব্দুল লতিফ এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। একইসাথে বিচারের দাবি জানিয়ে লিখিত ওই আবেদনের কপি হাতে এসেছে বাংলাদেশ জার্নালের কাছে।

ওই শিক্ষার্থীর বাবা লিখিত ওই আবেদনে উল্লেখ করেন, ‘আমি গত ৪ জুলাই আমার মেয়ের এক বান্ধবীর ফোন কলে জানতে পারি যে, আমার মেয়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে যত্রতত্র ছুটাছুটি করছে এবং আবোল তাবোল কথা বলতেছে। এ অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক পরিচয় দিয়ে আরো একজন ফোন করে মেয়ের অসুস্থতার সংবাদ দিয়ে তাকে কুষ্টিয়া হতে নিয়ে আসার জন্য বলে। আমি ওই সময় আমার গ্রামের বাড়ি ফেনীতে ছিলাম। আমার শারীরিক অসুস্থতার কারনে এবং ফেনী হতে কুষ্টিয়া অনেক দূর বিধায় জরুরী ভিত্তিতে আমার মেয়েকে নিয়ে আসার জন্য ঢাকা হতে আমার ছেলেকে কুষ্টিয়া পাঠাই।’

লিখিত আবেদনে তিনি আরো উল্লেখ করেন, ‘আমার ছেলে কুষ্টিয়া যাওয়ার পর জানতে পারে যে, আমার মেয়ের মানষিক ভারসাম্য হারানোর মূল কারণ হলো ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষক সঞ্জয় কুমার সরকার তাকে মানসিক নির্যাতন এবং প্রাণনাশের হুমকিসহ আরো খারাপ ধরনের আচরণ করেছে। শিক্ষক সঞ্জয় কুমার মৌখিক পরীক্ষায় শান্তাকে চরম ভাবে মানসিক হেনেস্তা করেছে।’

মেয়েকে যৌন উত্যক্ত করার অভিযোগ এনে ওই আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, ‘কিছুদিন আগে বাড়িতে এসে আমার বড় মেয়ের কাছে ওই শিক্ষকের খারাপ চরিত্র সম্পর্কে ভুক্তভোগী মেয়ে অভিযোগ করেছিল। সে বলেছিল তাকেসহ অন্যান্য বিভাগের অনেক মেয়েকে তিনি যৌন উত্যক্ত করেন। শিক্ষক সঞ্জয় কুমারের অসৎ চরিত্র এবং কুপ্রবৃত্তির প্রতিবাদ করায় সে আমার মেয়েকে মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণকালে তার সঙ্গে হিংস্র স্বভাবের আচরণ করে এবং লিখিত পরীক্ষায় তাকে অকৃতিকার্য করে। শিক্ষক সঞ্জয় কুমারের পশু সুলভ আচরণে আমার এতিম ‘মা’ হারা মেয়েটি হাসপাতালের বেডে যত্রতত্র যথারীতি প্রলেপ বকে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।’

এছাড়া মেয়ের বর্তমান অবস্থা ও ওই শিক্ষকের বিচারের দাবি জানিয়ে তিনি আরো উল্লেখ করেন, ‘আমার মেয়ে বারংবার শিক্ষক সঞ্জয় কুমারের হুমকির কথা এবং তার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার কথা মনে করে মানসিক ভাবে ঠিক থাকতে পারতেছে না। শিক্ষক সঞ্জয় কুমারের অপরাধ বিভিন্ন জাতীয় ও দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। আমি অসুস্থ পিতা উক্ত অপরাধের সঠিক বিচার এবং প্রয়োজনীয় কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ এর জন্য আবেদন করছি। যাতে আমার মেয়ের মতো আর কোন মেয়ের মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে হাসপাতালের বেডে মাথা ঠুকে মরতে না হয়।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন উর রশিদ আসকারী কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার পরই আমরা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছিলাম। লিখিত আবেদনটি পাওয়ার পর সেটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপিড়ন ও প্রতিরোধ সেলের নিকট পাঠানো হয়েছে। তারাই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করবে।’

প্রসঙ্গত, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার সরকার নিজ বিভাগের এক ছাত্রীকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি ও মানসিক নির্যাতন করে আসছিলেন। বেশ কিছুদিন ধরে হুমকি ও মানসিক নির্যাতনের ফলে ছাত্রীটি গত ৫ জুলাই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। বর্তমানে সে পরিবারের হেফাজতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে।

আরো পড়ুন: শিক্ষকের হয়রানিতে মানসিক বিপর্যস্ত ছাত্রী ছাত্রী হেনস্তাকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত