ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

রাবি শিক্ষার্থীকে জিম্মি করে বিশ হাজার টাকা আদায়

  রাবি প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০১৮, ১৬:০৭

রাবি শিক্ষার্থীকে জিম্মি করে বিশ হাজার টাকা আদায়

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক শিক্ষার্থীকে শিবির সন্দেহে জিম্মি করে পরিবারের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা আদায় করেছে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের এক নেতা ও আরেক শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে ভুক্তভোগীকে মেস থেকে ডেকে এনে হলের ১৯১ নাম্বর কক্ষে নিয়ে ঘন্টাব্যাপী মারধর করে।

ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর নাম ওমর ফারুক। তার বাড়ি ঠাকুরগাঁও জেলায়। সে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। অপরদিকে, জড়িতরা হলেন একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাঈম এবং ফার্সী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শাফিউর রহমান । শাফিউর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক।

ভুক্তভোগী ওমর ফারুক বলেন, নাঈম বেশ কয়েকদিন ধরে আমাকে উত্যক্ত করছিলো। বড় ভাইদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিবে বলে একাধিকবার ফোন দেয় এবং বুধবার আমাকে নিয়ে আসার জন্য মেসে যায়। পরে বৃহস্পতিবার তার সঙ্গে গেলে সে আমাকে সোহরাওয়ার্দী হলের ১৯১ নম্বর কক্ষে শাফির কাছে নিয়ে যায়। এ সময় তারা আমার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ঢুকে আমি শিবির করি বলে দাবি করে। আমি অস্বীকার করলে তারা আমাকে চড়-থাপ্পড় ও লোহার পাইপ দিয়ে মারতে থাকে। পঞ্চাশ হাজার টাকা দিলে তারা সিনিয়র নেতাদের কিছু জানাবে না বলে জানায়। আমি যতবার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানাই তারা ততবার আমাকে মারধর করে। পরে তারা আমার পরিবারের কাছে ফোন করে টাকা চাইলে আমার বড় ভাই বিকাশের মাধ্যমে বিশ হাজার টাকা দিতে রাজি হয়। টাকা পেয়ে তারা আমাকে ছেড়ে দেয় এবং বিষয়টি কাউকে জানালে আমাকে দেখে নেবে বলে হুমকিও দেয়।

পরে বিষয়টি আমার জেলা সমিতির সভাপতি সোহানুর রহমানকে জানালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে এ বিষয়ে অবহিত করেন। পরে রাত ১১টার দিকে বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে জানালে তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেন ও বিশ হাজার টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দেন।

বিষয়টি স্বীকার করে শাফি বলেন, ফারুকের গতিবিধি ও আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় আমরা তাকে শিবির সন্দেহে আটক করি। তবে টাকা নেওয়ার সঙ্গে আমি জড়িত নই। টাকা নাঈম নিয়েছে। তবে এ বিষয়ে নাঈমের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

সোহানুর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি শোনার সঙ্গে সঙ্গে আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরকে বিষয়টি জানাই। কিন্তু সন্ধ্যা পেরিয়ে মধ্যরাত হয়ে গেলেও প্রক্টর কোন ব্যবস্থা নেননি।

জানতে চাইলে গোলাম কিবরিয়া ও ফয়সাল আহমেদ বলেন, বিষয়টি শোনার সঙ্গে সঙ্গে আমরা হলে গিয়েছিলাম। টাকা আদায়ের বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত হতে পেরেছি। জড়িত দুইজনের মধ্যে যার কাছে টাকা সে পলাতক। আমরা একজনকে ধরেছি। তার মাধ্যমে শুক্রবার রাতের মধ্যেই ফারুককে টাকা ফিরিয়ে দেবো এবং ফারুকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবো। তারা বলেন, এ ধরনের অপরাধের জন্য আমরা শাফিকে শোকজ করেছি এবং আগামী সাতদিনের মধ্যে জবাব দিতে বলেছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, শনিবার রাতে একজন ছেলে আমাকে ফোন করে বিষয়টি জানালো। এরপর আমি পুলিশ প্রশাসন ও গোয়েন্দাদের জানিয়েছি। পরে জানতে পারলাম রুনু গিয়ে নাকি বিষয়টি সমাধান করে দিয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনএম

  • সর্বশেষ
  • পঠিত