ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

গর্জনেই সীমাবদ্ধ ‘অন্তর জ্বালা’!

  বিনোদন প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২০ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৭:৫১

গর্জনেই সীমাবদ্ধ ‘অন্তর জ্বালা’!

‘যত গর্জে তত বর্ষে না’- এই প্রবাদ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাস্তব হিসেবে প্রমাণিত হয়। তবে সিনেমার ক্ষেত্রে কথাটির খুব একটা মিল পাওয়া যায় না। কারণ প্রচারেই প্রসার অর্থাৎ সিনেমার ক্ষেত্রে সাধারণত আওয়াজ তৈরি করা অধিকাংশ সিনেমাই ভালো সাফল্য পায়। কিন্তু ‘অন্তর জ্বালা’র বিধি বাম। তাই হয়ত অনেক গর্জেও ভালো বর্ষণে ব্যর্থ হয়েছে ছবিটি।

গত ১৫ ডিসেম্বর মুক্তি পায় গুণী নির্মাতা মালেক আফসারি পরিচালিত ‘অন্তর জ্বালা’। মুক্তির আগে আওয়াজ কিংবা গর্জনের কমতি ছিলো না। চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে ছবির শিল্পী ও নির্মাতা বলেছেন, এই ছবি সুপারহিট হবে। তা না হলে তারা আর ছবিই করবেন না। শুধু তাই নয়, ‘অন্তর জ্বালা’ রেকর্ড সংখ্যক ১৭৫টি সিনেমা হলে মুক্তি পাচ্ছে বলেও জোর গলায় বলেন তারা। তবে মুক্তির পর জানা যায়, ১১০টি সিনেমা হল পেয়েছে ছবিটি।

নকলের অভিযোগে ‘অন্তর জ্বালা’ মুক্তির আগেই সমালোচনার টেবিলে উঠে আসে। তামিল ছবি ‘ভেইল’-এর হুবহু নকল বলে অভিযোগ পাওয়া যায় এই ছবির বিরুদ্ধে। ছবির প্রথম গান প্রকাশের পরই এই অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। এছাড়া ‘মধু কই কই বিষ খাওয়াইলা’ শীর্ষক একটি গানের অশ্লীল উপস্থাপনার কারণে চরম বিতর্কিত হয় ছবিটি। তারপরও ছবির নির্মাতার কারণে দর্শক আশায় বুক বাঁধেন।

অনেক আলোচনা আর বিতর্কের পর অবশেষে ১৫ ডিসেম্বর মুক্তি পায় ‘অন্তর জ্বালা’। ব্যাপক প্রচারণা থাকার কারণে মুক্তির প্রথম দু’দিন সিনেমা হলে খানিকটা দর্শক সমাগম দেখা গেলেও তৃতীয় দিন থেকে যেন চুপসে পড়ে ছবিটি। অধিকাংশ সিনেমা হলেই দর্শকশূন্যতা দেখা যায়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দর্শক খরার খবরটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

'অন্তর জ্বালা' চলাকালীন বলাকা হলের দৃশ্য

এদিকে রাজধানীর অন্যতম সিনেমা হল বলাকায় যেন মুখ থুবড়ে পড়েছে ‘অন্তর জ্বালা’। মুক্তির দু’দিন পর থেকে ছবিটি দেখার জন্য দর্শকের আগমন যেন অমাবস্যার চাঁদ হয়ে গেছে। সম্প্রতি শো চলাকালীন বলাকার ভেতরের কিছু স্থিরচিত্র অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে দেখা যায় হাতে গোনা কয়েক জন দর্শক নিয়েই চলছে ‘অন্তর জ্বালা’। ফলে দিনভর বেকারভাবেই বসে আছেন হলের টিকিট কাউন্টারের কর্মীরা। এছাড়া ফার্মগেটের আনন্দ সিনেমা হলেরও একই অবস্থা। চোখ মেলে তাকালে হলের সামনে দর্শকের দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। প্রথম দু’দিন মধুমিতা হলে মন্দের ভালো হিসেবে চললেও বর্তমানে সেই হলেও ‘অন্তর জ্বালা’র একই অবস্থা।

ব্যবসায়িকভাবে সাফল্যের মুখ না দেখলেও ‘অন্তর জ্বালা’ নিয়ে বেশ কিছু ইতিবাচক কথা শোনা যাচ্ছে। ছবিতে জায়েদ খানের অভিনয় অনেকের নজর কেড়েছে। পরীমনির ক্যারিয়ারের সেরা অভিনয় এই ছবিতে এবং নতুন করে জয় চৌধুরীও আলোচনায় এসেছেন এই ‘অন্তর জ্বালা’র মাধ্যমে। নির্মাণের বেশ কিছু দিক নিয়ে প্রশংসা পাওয়া গেলেও লোকেশন আর সিনেমাটোগ্রাফি নিয়ে সন্তুষ্ট নন দর্শক।

এদিকে এতো আওয়াজ আর প্রচারের পরও কী কারণে ‘অন্তর জ্বালা’র এমন অবস্থা? প্রাসঙ্গিকভাবে এই প্রশ্নটা চলে আসে। তবে উত্তরটাও ইন্ডাস্ট্রিতে উড়ে বেড়াচ্ছে। সিনেমাবোদ্ধারা বলছেন, দর্শক এখন আগের থেকে অনেক বেশি সচেতন ও রুচিশীল। ফলে নকল কিংবা অ্যাভারেজ মানের সিনেমা দিয়ে তাদের আকৃষ্ট করা দুঃসাধ্য। কেননা দিনশেষে সিনেমার মৌলিকতা, গল্প আর অভিনয়ই দর্শকের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়।

কেআই/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত