ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ মিনিট আগে
শিরোনাম

কুমার বিশ্বজিতের চোখে নির্মাতা সৈকত নাসির

  কামরুল ইসলাম

প্রকাশ : ১৪ আগস্ট ২০১৮, ১৯:৫৫  
আপডেট :
 ১৪ আগস্ট ২০১৮, ২০:১৪

কুমার বিশ্বজিতের চোখে নির্মাতা সৈকত নাসির

সৈকত নাসির। দেশীয় শোবিজের অন্যতম আলোচিত তরুণ নির্মাতা। ‘দেশা: দ্য লিডার’ ছবি নির্মাণ করে ব্যাপক প্রশংসিত হন। অর্জন করে নেন শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এরপর নিজের দ্বিতীয় ছবি ‘পাষাণ’-এর নির্মাণ নিয়েও আলোচিত হন সৈকত।

চলচ্চিত্রের বাইরে সৈকত নাসির মিউজিক ভিডিও নির্মাণ করেও সাফল্য পেয়েছেন। নান্দনিক নির্মাণ দিয়ে দর্শক ও সমালোচকমহলে নিজের আলাদা অবস্থান তৈরি করে নিয়েছেন। তার নির্মিত বেশ কিছু মিউজিক ভিডিও অন্তর্জালে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। সৈকত নাসিরের নির্মাণে মুগ্ধ হয়ে তাকে রীতিমত ‘ম্যাজিকম্যান’ উপাধি দিয়েছেন জনপ্রিয় গায়ক আসিফ আকবর।

এদিকে কিংবদন্তি শিল্পী কুমার বিশ্বজিতের সঙ্গেও কাজ করেছেন নির্মাতা সৈকত নাসির। চিরসবুজ কণ্ঠের এই গায়কের দুটি গানের মিউজিক ভিডিও নির্মাণ করেছেন সৈকত নাসির। এর মধ্যে ‘আমি যেন কেউ তোর হই’ শীর্ষক মিউজিক ভিডিওটি প্রকাশ হয়েছে। আর ‘বৃষ্টি এলেই আসো তুমি’ রয়েছে প্রকাশের অপেক্ষায়।

পরপর দুটি মিউজিক ভিডিওতে একসঙ্গে কাজের ফলে নির্মাতা সৈকত নাসিরকে কাছ থেকে জেনেছেন কুমার বিশ্বজিৎ। সেই জানা থেকেই সৈকত নাসির সম্পর্কে নিজের মন্তব্য জানিয়েছেন বাংলাদেশ জার্নালের কাছে।

কুমার বিশ্বজিৎ বলেন, সৈকত নাসিরের সঙ্গে প্রথম কাজ করার পরই তার সম্পর্কে আমার ধারণা বদলে যায়। সে এতো যত্ন নিয়ে কাজ করে, এটা তার সঙ্গে কাজ না করলে জানা হতো না। আমি অনেককেই দেখেছি যে, যারা কোনোরকমে কাজ শেষ করে টাকাটা নিয়ে যায়। কিন্তু তার মধ্যে একটা খুঁতখুঁতে একটা ব্যাপার রয়েছে। কাজটাকে একদম নিখুঁতভাবে শেষ করতে পছন্দ করে। সৃজনশীল মাধ্যমে এই ধরণের মানুষ খুব বেশি দরকার।

‘বৃষ্টি এলেই আসো তুমি’ গানের দৃশ্যে কুমার বিশ্বজিৎ

কুমার বিশ্বজিৎ একজন বরেণ্য শিল্পী, অন্যদিকে সৈকত নাসির একজন তরুণ নির্মাতা। ফলে কাজের সময় এই জেনারেশন গ্যাপটা কীভাবে কাটিয়েছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে কুমার বিশ্বজিৎ বলেন, কাজের সময় আমি সেরকম কোনো দেয়াল রাখিনি। কারণ সৃষ্টিশীল কাজে প্রত্যেকের কাজই গুরুত্বপূর্ণ। এটা সম্মিলিত প্রচেষ্টা। তাই কাজটাকেই প্রাধান্য দেয়া উচিৎ। যেমন ‘বৃষ্টি এলেই আসো তুমি’ গানের গীতিকার রবিউল ইসলাম জীবন আমার অনেক ছোট, সুর ও সংগীত পরিচালনা করেছে অটামনাল মুন, সেও আমার বয়সে অনেক ছোট। এখন ভালো একটা কাজের জন্য তো এসব ভাবলে হবে না। কাজের ক্ষেত্রে প্রফেশনাল হওয়াই উত্তম।

এই প্রজন্মের অনেকের সঙ্গেই কাজের অভিজ্ঞতা হয়েছে কুমার বিশ্বজিতের। তাদের সঙ্গে সৈকত নাসিরের তুলনা করে তিনি বলেন, সৈকত অনেকের চেয়েই ব্যতিক্রম। এই ব্যতিক্রমটা ইতিবাচক ক্ষেত্রে। সে অসম্ভব গুণী একজন মানুষ। সে একটা কাজ যখন শুরু করে, তার আগেই পুরো পরিকল্পনা একদম ছকে এঁকে নেয়। প্রত্যেকটা দৃশ্য সে আলাদাভাবে প্ল্যান করে নেয়। এমনকি শুটিংয়ের পুরো লাইনআপ একটা ভিডিওচিত্রের মাধ্যমে বুঝিয়ে দেয়। এই যে পারস্পরিক আলোচনা, এটা তো প্রায় উঠেই গেছে আমাদের ইন্ডাস্ট্রি থেকে। আমাদের গানের ক্ষেত্রেও এখন এমন অবস্থা। একটা সৃষ্টিশীল কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার আলোচনা-পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। মানসিকভাবে প্রস্তুতি নেয়ার একটা ব্যাপার আছে। এগুলো একটা সময় ছিলো। কিন্তু এখন সবকিছু ঠিক করে রাখে, শুধু গিয়ে ভয়েস দিয়ে চলে আসতে হয়।

সৈকত নাসির আপন ছোট ভাইয়ের মতো উল্লেখ করে কুমার বিশ্বজিৎ বলেন, একটা কাজ করতে গেলে পরস্পরের মধ্যে কোনো দূরত্ব রাখা উচিৎ না। দূরত্ব থাকলে কাজটা ঠিকমতো করা যায় না। একটা আত্মিক সম্পর্ক থাকলে উভয়ের মধ্য পর্যালোচনা করে উত্তম সিদ্ধান্তটা নেয়া যায়। সৈকত আমার কাছ থেকে বিভিন্ন পরামর্শ-মতামত নিচ্ছে, আমিও তাকে আমার মতো করে বলছি। এই যে বোঝাপড়া, এটা খুব দরকার। আমার মনে হয়, এই গানটা শুধু আমার জন্য না, সৈকতের জন্যও একটা বিশেষ কাজ হতে চলেছে।

‘বৃষ্টি এলেই আসো তুমি’ গানটি সেমি-ক্ল্যাসিক্যাল। বর্তমানে যেসব গান জনপ্রিয়তা পাচ্ছে, তার থেকে ভিন্ন ধাঁচের। তাই এটি দর্শক-শ্রোতারা গ্রহণ করবে কিনা জানতে চাইলে কুমার বিশ্বজিৎ বলেন, এই গানটা একটা ভিন্ন স্বাদের গান। মানুষ গ্রহণ করবে কিনা, সেটা ভাগ্যের ব্যাপার। কিন্তু কাজ করার পর যে একটা তৃপ্তির বিষয় আছে, সেটা এই গানে পেয়েছি। আমরা প্রত্যেকেই গানটি নিয়ে ভীষণ সন্তুষ্ট। আমরা আমদের জায়গা থেকে সর্বোচ্চটা দিয়েছি। যদি দর্শক গ্রহণ করে, তাহলে আমাদের পরিশ্রম সার্থক হবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/কেআই/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত