ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : কিছুক্ষণ আগে
শিরোনাম

নির্বাচনী জোয়ারের আঘাত বিয়ে বাড়িতে

নির্বাচনী জোয়ারের আঘাত বিয়ে বাড়িতে

ভোটের জোয়ারে থমকে যাচ্ছে গ্রাম-বাংলার বিয়ে! আদালতের নির্দেশে জটিলতা কেটে গেল পঞ্চায়েত নির্বাচনের, তবে বিয়ের সমস্যাটা থেকেই গেল।

চৈত্র মাসে হিন্দুদের বিয়ের লগ্ন থাকে না। ফাল্গুনের পর বৈশাখকেই বেছে নেওয়া হয় বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠানের জন্য। কারণ জ্যৈষ্ঠ মাসেও বিয়ে হয় না। আর আষাঢ়কে গ্রামের মানুষ বিয়ে বাড়ির জন্য খানিকটা এড়িয়েই যায়। কারণ বৃষ্টি-বাদলায় রাস্তাঘাট কাদা হয়ে গেলে সমস্যায় পড়তে হয়। কিন্তু এবার ভোট সমস্যায় ফেলেছে বৈশাখের বিবাহ অনুষ্ঠানে।

কারণ, ভারতের রাজ্য সরকার ইঙ্গিত দিয়েছিল এবার পঞ্চায়েত নির্বাচন হতে পারে জুন থেকে আগস্টের মধ্যে। কিন্তু, দেশটির নির্বাচন কমিশন প্রায় হঠাৎ করেই গত ৩১ মার্চ তিন দফায় ১,৩,৫ মে ভোট ঘোষণা করে। ওই ঘোষণাতে মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল ৯ এপ্রিল। নির্বাচন কমিশন একদিন বাড়িয়ে দেওয়ার বিজ্ঞপ্তি জারির পরেও তা বাতিল করাতেই সমস্যা বাঁধে। বিরোধীদের অভিযোগে ভিত্তিতে আদালত স্থগিতাদেশ দেয়। বর্তমানে সেই জটিলতা কেটে গিয়েছে। কিন্তু কমিশন যে এখনও ভোটের নতুন নির্ঘণ্ট ঘোষণা করতে পারেনি। শুধুমাত্র আদালতের নির্দেশে মনোনয়নের দিন বাড়িয়ে স্ক্রুটিনি ও প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৮ এপ্রিল জানিয়েছে।

নির্বাচনবিধি অনুযায়ী প্রত্যাহারের পর থেকে ২১ দিনের ফারাক থাকতে হবে। এদিকে এই বৈশাখের প্রথম দিকে বিয়ের লগ্ন ছিল ৫ ও ৬। এই তারিখে বিয়ে নিয়ে কোন সমস্যা হয়নি। সমস্যা হয়েছে ১২, ১৩, ১৪, ১৫ বৈশাখের বিয়ের লগ্ন নিয়ে। কারণ ১ মে অর্থাৎ ১৭ বৈশাখ আগের ঘোষণা অনুযায়ী ভোট থাকায় নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে গ্রাম-বাংলার মানুষ বৈশাখের মাঝামাঝি সময় থাকা লগ্নগুলিতে বিয়ের অনুষ্ঠান রাখেনি। অধিকাংশ পাত্র–পাত্রীর পরিবারই ২৭, ২৮ বৈশাখের লগ্নতে বিয়ের দিন ধার্য করে। কিন্তু ওই লগ্নের দিনগুলিতেও সমস্যায় ফেলেছে এই পঞ্চায়েত ভোট। কারণ প্রার্থী প্রত্যাহারের শেষ দিন থেকে বিধি মোতাবেক ২১ দিন হিসাব করলে ওই লগ্নের কাছাকাছিতেই ভোট হবে।

তাই পুরুলিয়ার আড়শার বামুনডিহা গ্রামের বাসিন্দা অঙ্কুর সর্দার বলেন, ‘‘আমার ছেলের বিয়ের দিন ভোটের আগের ঘোষণার কথাকে মাথায় রেখে ২৮ বৈশাখ ঠিক করেছিলাম৷ কিন্তু এবার শুনছি ওই লগ্নের সময়ই ভোট হবে৷ ফলে, গাড়ি পাওয়া যাবে না৷ চারদিকে ভোটের আবহ থাকবে৷ খুব সমস্যায় পড়তে হবে মনে হচ্ছে৷’’

এখন যে ওই লগ্ন থেকে সরে আসবে তাও উপায় নেই, ওই সময় বিয়ের দিন ঠিক করা একাধিক পরিবারের। কারণ কার্ড ছাপানো থেকে বিয়ের প্রস্তুতি- প্যান্ডেল, লাইট, ক্যাটারারকে বরাত দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর যদি ওই তারিখ একান্তই বদলাতেই হয় তাহলে আষাঢ় মাস ছাড়া উপায় নেই।

জয়পুরের বাসিন্দা শ্রীপতি মাহাতোর কথায়, ‘‘আগের ভোটের ঘোষণাকে মাথায় রেখে ২৭ বৈশাখ মেয়ের বিয়ে ঠিক করি। এখন শুনছি ওই সময়ই ভোট হবে। কি যে করব বুঝতে পারছি না।’’

জেডআই

  • সর্বশেষ
  • পঠিত