ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

হ্যারি-মেগানের বিয়ে: করের এক রাজকীয় অপচয়

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ১৯ মে ২০১৮, ১৯:১৯  
আপডেট :
 ১৯ মে ২০১৮, ১৯:২৩

হ্যারি-মেগানের বিয়ে: করের এক রাজকীয় অপচয়

বেশ কিছুদিন ধরেই বিশ্বজুড়ে বেশকিছু গুঞ্জন চলে আসছে ব্রিটেনের রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথের নাতি প্রিন্স হ্যারি ও মার্কিন টিভি সিরিয়াল ‘স্যুইটস’ এর অভিনেত্রী মেগান মার্কেলের বিয়ে নিয়ে। শনিবার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টায় তাদের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। রাজকীয় এই বিয়ের অনুষ্ঠানের একঝলক উপভোগ করতে উইন্ডসরের রাস্তায় উপস্থিত হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। তবে এই বিয়েকে ঘিরে উঠেছে বেহিসাবী ব্যয়ের অভিযোগ।

বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার পুরোটাই সম্পন্ন হবে রাজধানী থেকে ৩২ কিলোমিটার দূরে রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথের পছন্দের বাসভবন উইন্ডসর ক্যাসল-এ।

এই বিয়েতে আমন্ত্রণ করা হয়েছে দুই হাজারেরও বেশি জনপ্রতিনিধিকে। তবে, এই বিয়ের অনুষ্ঠানে মাত্রাধিক ব্যয়ে নাখোশ খোদ ব্রিটিশ নাগরিকদের একটি বিরাট অংশ। বিয়ে উপলক্ষ্যে নেয়া হয়েছে বিশেষ স্নাইপার দিয়ে ঘেরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা, পুলিশের চৌকস দল, সামরিক প্রযুক্তি এবং সিকিউরিটি ড্রোন। আর এই বাড়াবাড়ি রকমের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বিয়ের ব্যয় বেড়ে গেছে কয়েকগুণ।

ওয়েডিং প্ল্যানিং সার্ভিস 'ব্রাইডবুক' এবং মার্কিন গণমাধ্যম বিজনেস ইনসাইডার জানিয়েছে, এই বিয়ের জন্য ব্রিটিশ করদাতাদের গুণতে হচ্ছে ৪৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থাৎ প্রায় ৩৮১ কোটি টাকা।

এক জরিপে দেখা গেছে, এই ব্যয়ভার বহন করা হোক রাজপরিবারের পক্ষ থেকে, এমনটাই চান ৫৭ ভাগ ভুক্তভোগী।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ব্রিটিশ এক নারী বিমানকর্মী ফক্স নিউজকে বলেন, 'অর্থের কী বিপুল অপচয়, এ অর্থ জনগণের।'

তার মতে, 'পৃথিবীতে আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ঘটছে। অনেক কিছুই হচ্ছে যা এই বিয়ের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।'

তেইশ বছর বয়সী করিন লুক বলেন, 'তাদের আমোদ-ফূর্তির জন্য কেন আমাকে অর্থ দিতে হবে? এটা অনর্থক।'

তার বান্ধবী মার্থা হেনলি বলেন, 'দেশের বাইরের মানুষ মনে করছেন ব্রিটিশ জনগণ এই রাজপরিবারকে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। কিন্তু এটা কখনোই আমার কাছে কোনো বড় বিষয় নয়।'

এই বিয়ের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য নেই কোনো খাবারের ব্যবস্থা। এই বিষয়ে যথেষ্ট বিরক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র পিটার রুইগ। তিনি বলেন, 'আপনি বিশেষ সম্মানের সাথে অতিথিদের আমন্ত্রণ করলেন, কিন্তু তাদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করলেন না।'

জাঁকজমকপূর্ণ এই বিয়ে কিছু ভোগান্তিও এনে দিয়েছে জনজীবনে। বিশেষ করে সেইসব দরিদ্র মানুষ, রাত নামলে যাদেরকে ঘুমাতে হয় খোলা আকাশের নীচে।

শুক্রবার এই বিয়ের আগ মুহূর্তে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী উইন্ডসরের রাস্তায় ব্রিটেনে ক্রমবর্ধমান বাস্তুচ্যূতির বিষয়ে বিক্ষোভ করেন।

সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশ উইন্ডসর ক্যাসেলের আশপাশের এলাকা থেকে উচ্ছেদ করেছে বাস্তুহারা মানুষজনকে। যা নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে ব্রিটেনজুড়ে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ঘটনাকে আখ্যা দেয়া হয়েছে 'লজ্জাজনক' হিসেবে।

এছাড়া, ব্রিটেনজুড়ে বাড়ছে বাস্তুহারা মানুষের সংখ্যা। ২০১০ সালে কনসারভেটিভ দল ক্ষমতায় আসার পর এখন পর্যন্ত ব্রিটেনজুড়ে ১৩৪ শতাংশ বেড়েছে বাস্তুহারা মানুষের সংখ্যা।

এমন পরিস্থিতিতে প্রিন্স হ্যারি আর মেগান মার্কেলের এই জাঁকজমকপূর্ণ বিয়েকে ঘিরে স্বাভাবিকভাবেই ঘুরপাক খাচ্ছে বিভিন্ন সমালোচনা।

এসএস

  • সর্বশেষ
  • পঠিত