কেরানির চাকরির জন্য পিএইচডি-ইঞ্জিনিয়ারের দরখাস্ত
ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যে কেরানি পদের (ভিলেজ রেভিনিউ) চাকরির জন্য দরখাস্ত করেছেন পিএইডি, এমফিল এমনকি ইঞ্জনিয়াররা পর্যন্ত। যদিও এখানে কেবল উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের কাছ থেকে দরখাস্ত আহ্বান করা হয়েছিল।
এখানে মাত্র ৭শ পদের বিপরীতে দরখাস্ত পড়েছে ১০ লাখ। এদের মধ্যে ৩৭২ জন পিএইচডি, ৫৩৯ জন এমফিল ডিগ্রিধারী, দেড় লাখ পোস্ট গ্রাজুয়েট, ২ লাখের বেশি ইঞ্জিনিয়ার এবং ডিগ্রি পাসের সংখ্যা হচ্ছে ৪ লাখ। অথচ ওই পদের জন্য উচ্চ মাধ্যমিক পাসই ছিল যথেষ্ট।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন তেলেঙ্গানা স্টেট সার্ভিসেস কমিশন। এ ঘটনাকে ‘অভূতপূর্ব’হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অন্ধ্র প্রদেশ বা দক্ষিণ ভারতের অন্য কোনো রাজ্যে এমনটি হয় কিনা সে বিষয়ে আমার কোনো ধারণা নেই।’
ভিলেজ রেভিনিউ পদের জন্য সবমিলিয়ে ১০ লাখ ৫৮টি দরখাস্ত পড়েছে। এদের ৮০ ভাগই চাকরির পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। এর আগে ২০১১ সালে ওই একই পদে দরখাস্ত পড়েছিল ৬ লাখ।
রোববার অনুষ্ঠিত ওই পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন ইঞ্জিনিয়ার প্রশান্ত। তিনি বলেন, ‘কি করবো বলুন! আমি একজন ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ার। এই যুগে আমরা কেবল বিপিও পদেই চাকরি পেতে পারি। এখানে বেতন মাত্র ১৫ হাজার রুপি। তারপরও তো সরকারি চাকরি। এখানে চাকরির নিরাপত্তা আছে। পে স্কেল আছে। প্রাইভেট সেক্টরের কোনো চাকরিতে যোগ দিলে আমি এর দ্বিগুণ বেতন পাবো। কিন্তু সেখানে সরকারি চাকরির মত এত সুবিধা নাই।’
‘পরীক্ষা দিলেও আমি এই চাকরি পাবো কিনা তা জানিনা। কেননা এখানে খুব প্রতিযোগিতা হবে। কেননা আমাদের সঙ্গে অনেক পিএইডি, পোস্ট গ্রাজুয়েট ও আইনজীবীদের মত যোগ্যতা সম্পন্ন লোক রয়েছে। এখানে প্রতি পদের জন্য লড়ছে ১১শ প্রার্থী।’ বলছিলেন প্রশান্তের বন্ধু দুর্গা প্রসাদ।
তিনি পেশায় একজন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। তারা দুইজনই চলতি বছর ইঞ্জিনিয়ার পাস করেছেন। কিন্তু কোথাও চাকরি না পেয়ে এই কেরানি পদের জন্য চেষ্টা করছেন। এখন তারা ফুড ডেলিভারি এমনকি উবারের চালক হিসেবে কাজ করতেও রাজি আছেন। কেননা তারা মনে করেন, এখোনে মাত্র ১০ ঘণ্টা কাজ করেও তারা ভিলেজ রেভিনিউ পদের চেয়েও অনেক বেশি আয় করতে পারবেন।
সূত্র: এনডিটিভি
এমএ/