বিলাসবহুল দোকানে কোটি ডলার খরচ করা নারীটি কে?
যুক্তরাজ্যে দুর্নীতি বিরোধী নতুন একটি আইনের কারণে বেরিয়ে আসছে অনেক কাহিনী। ৫৫ বছর বয়সী ওই নারীকে এখন ব্যাখ্যা করতে হচ্ছে কিভাবে এতো অর্থ তিনি পেলেন।
এই নারী আজারবাইজানের রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের একজন কর্মকর্তার স্ত্রী যিনি লন্ডনের বিখ্যাত বিলাসবহুল দোকান হ্যারডসে একুশ মিলিয়ন বা দু কোটি দশ লাখ ডলারের কেনাকাটা করেছেন গত এক দশকে। এমনকি তিনি ওই দোকান ও বার্কশায়ারের একটি গলফ ক্লাবও কিনে নিয়েছিলেন।
যুক্তরাজ্যের নতুন আইনের কারণে অপ্রকাশিত সম্পদ গোপন করা অনেকটা কঠিন হয়ে পড়েছে।
এ ঘটনায় জামিরা হাজিয়েভাকেও বলা হয়েছে তার এতো অর্থ কিভাবে হলো সেটি ব্যাখ্যা করতে হবে। আর সেটি করতে না পারলে সম্পদ হারানোর ঝুঁকিতে পড়তে পারেন তিনি।
এখন তিনি লড়াই করছেন লন্ডনে তার দেড় কোটি ডলারের বাড়ি রক্ষার জন্য। এর মধ্যেই তার নাম গোপন থাকবে কি-না সে লড়াইয়ে তিনি হেরে গেছেন।
হাজিয়েভ দম্পতির পরিচয়
জাহাঙ্গীর হাজিয়েভ ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংক অফ আজারবাইজানের সাবেক চেয়ারম্যান। ২০১৬ সালে জালিয়াতির দায়ে তার পনের বছরের জেল হয়েছিলো। একই সাথে তাকে প্রায় চার কোটি ডলার ফেরত দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছিলো।
সাত বছর আগে ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডের একটি কোম্পানিকে এ দম্পতির পক্ষ থেকে একটি বড় বাড়ির জন্য দেড় কোটি ডলার পরিশোধ করা হয়েছিলো।
আর ২০১৩ সালে বার্কশায়ারের গলফ ক্লাব কেনার জন্য হাজিয়েভার কোম্পানি থেকে এক কোটি ডলার দেয়া হয়েছিলো। সম্পদশালী বিনিয়োগকারী হিসেবেই এ দম্পতিকে বসবাসের অনুমতি দিয়েছিলো ব্রিটিশ হোম অফিস।
যুক্তরাজ্যে কত সম্পদ এনেছেন এই দম্পতি?
মূলত গত জুলাইয়ে আদালতে শুনানির সময় জামিরা হাজিয়েভার অর্থ সম্পর্কে নানা তথ্য বেরিয়ে পড়ে। গত দশ বছরে তিনি শুধু হ্যারডসেই ব্যয় করেছেন দু কোটি ডলারেরও বেশি। এজন্য তাকে দৈনিক প্রায় পাঁচ হাজার ডলার ব্যয় করতে হয়েছে।
এর বাইরে বিলাসবহুল গহনার দোকানে ব্যয় করেছেন এক লাখ ত্রিশ হাজার ডলার। তার প্রায় পঁয়ত্রিশটি ক্রেডিট কার্ড রয়েছে, যার সবগুলোই তার স্বামীর ব্যাংক থেকে করা।
সরকারি তথ্য থেকে জানা যায়, জামিরা প্রায় সাড়ে চার কোটি ডলার দিয়ে একটি জেট আর হ্যারডসের নিজস্ব পার্কিং থেকে দুটি পার্কিং এরিয়াও কিনে নিয়েছেন। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।
স্বামী ও নিজেকে নির্দোষ দাবি করে ওই নারী বলেছেন, তারা বড় অন্যায়ের শিকার।
তিনি আদালতে বলেন, তার স্বামী একজন ব্যবসায়ী এবং ব্যাংকের চেয়ারম্যান হওয়ার আগেই ব্যবসা করে সম্পদশালী হয়েছেন তিনি।
যদিও ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি আদালতে জানিয়েছে তার স্বামী হাজিয়েভ ১৯৯৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তা ছিলেন।
সূত্র: বিবিসি বাংলা