ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : কিছুক্ষণ আগে
শিরোনাম

খাশোগিকে হত্যার কথা স্বীকার করলো সৌদি

খাশোগিকে হত্যার কথা স্বীকার করলো সৌদি

অবশেষে তুরস্কে গুম হওয়া সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করলো সৌদি সরকার। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে দুই উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত এবং আরো ১৮ সৌদি নাগরিককে আটক করেছে রিয়াদ।

এদিকে সৌদি সরকারের দায় স্বীকারের পর এক বিবৃতিতে এ ঘটনাকে ‘অনাকাঙ্খিত’ বলে বিবৃতি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একই সঙ্গে তিনি সৌদি আরবকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘মহান মিত্র’ হিসেবেও উল্লেখ করেছেন।

খাশোগি নিখোঁজ হওয়ার দীর্ঘ দুই সপ্তাহ পর এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করলো সৌদি সরকার।

শুক্রবার দেশটির রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত টেলিভিশনে প্রচারিত সংবাদে বলা হয়, ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে ‘এক সংঘর্ষে’ খাশোগি নিহত হয়েছেন।

এ ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে সৌদি আরবের উপ গোয়েন্দা প্রধান আহমাদ আল-আসিরি এবং যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমানের সিনিয়র সহকারী সৌদ আল-কাহতানিকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

এছাড়া খাশোগি হত্যাকাণ্ডের তদন্তের অংশ হিসেবে ১৮ সৌদি নাগরিককে আটক করা হয়েছে।

সৌদি বাদশাহ সালমান তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেসেপ তায়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার কিছুক্ষণ পর রাষ্ট্রীয় টিভির নিউজ বুলেটিনে এ ঘোষণা দেয়া হয়।

সৌদি আরবের সরকারি কৌঁসুলির বরাত দিয়ে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে খাশোগির সঙ্গে কয়েক ব্যক্তির ‘সংঘর্ষ’ হয় এবং এর জের ধরে তার মৃত্যু হয়েছে।

খাশোগি হত্যার দায়ে বরখাস্ত হওয়া সৌদ আল-কাহতানি সৌদি রাজপ্রাসাদের একজন প্রভাবশালী সদস্য এবং যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমানের সিনিয়র উপদেষ্টা। এ ছাড়া, মেজর জেনারেল আহমাদ আল-আসিরি ইয়েমেনের ওপর সৌদি আগ্রাসনের ব্যাপারে রাজতান্ত্রিক দেশটির শীর্ষ মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করছিলেন।

গত ২ অক্টোবর তালাক সংক্রান্ত নথিপত্র সংগ্রহের জন্য ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে গিয়েছিলেন ৫৯ বছর বয়সী খাশোগি। এরপর তাকে আর দেখা যায়নি।

তিনি নিখোঁজ হওয়ার পর থেকেই এ ঘটনায় সৌদি কর্মকর্তারা জড়িত রয়েছেন বলে দাবি করে আসছিল তুরস্ক। তারা আরো বলেছিল, সৌদি কনস্যুলেটের অভ্যন্তরেই তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।

কিন্তু তাদের এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছিল সৌদি আরব এবং তাদের মিত্র হিসেবে পরিচিত যুক্তরাষ্ট্র। এ নিয়ে কথা বলার জন্য চলতি সপ্তাহের গোড়ার দিকে রিয়াদ ছুটে যান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। তিনি পরে এ নিয়ে আঙ্কারা সফরকালে প্রেসিডেন্ট এরদেয়ানের সঙ্গেও কথা বলেন।

তবে খাশোগি নিখোঁজের ঘটনায় তুর্কি পুলিশের তদন্ত যত এগোচ্ছিল ততই সৌদি কর্মকর্তাদের ওপর সন্দেহ বাড়ছিলো। মঙ্গলবার তুরস্ক জানায়, ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেলেটের অভ্যন্তরে কেটে টুকরো টুকরো করে হত্যা করা হয় খাশোগিকে। এরপর একটি কালো ভ্যানে করে লাশ দূরে ফেলে দেয়া হয়।

এ নিয়ে দুই দফা সৌদি কনস্যুলেট এবং সৌদি কনসাল জেনারেলের বাসভবনে তল্লাশি চালায়। শুক্রবার তুর্কি তদন্তকারী দল খাশোগির দেহাবশেষের খোঁজে তারা বেলগ্রাড জঙ্গল ও ইয়ালোভা শহরের একটি স্থানে তল্লাশি চালায়।

এর আগে তারা সন্দেহভাজন ১৫ জনের মধ্যে নয় ব্যক্তির পরিচয়ও প্রকাশ করেছিল। যাদের অধিকাংশই সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ঘানিষ্ঠ বলে পরিচিত।

গত বৃহস্পতিবার তদন্তকারীদের কাছে এই হত্যাকাণ্ডের ওপর ১০ মিনিটের একটি অডিও টেপ আছে বলেও দাবি করেছিল তুরস্ক। তবে তাদের এ কথা বিশ্বাস করেননি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি তুরস্কের কাছে ওই অডিও রেকর্ড চেয়ে পাঠিয়েছিলেন।

এর আগে তিনি জামাল খাশোগির নিখোঁজ হওয়ার পেছনে ‘খুনি দুর্বৃত্তদের’ (রাফ কিলার) হাত রয়েছে বলেও মন্তব্য করেছিলেন। এসময় অভিযোগ ওঠে, সৌদি আরবকে আড়াল করতেই এসব কথা বলছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

শুক্রবার সৌদি আরব খাশোগি হত্যার দায় স্বীকার করার পর এ ঘটনাকে ‘অনাকাঙ্খিত’ বলে মন্তব্য করেছেন ট্রাম্প।

সূত্র: পার্সটুডে/বিবিসি

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত