ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

রাফায়েল নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে প্রশ্নের মুখে মোদি

রাফায়েল নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে প্রশ্নের মুখে মোদি

রাফায়েল মামলায় মোদি সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলে বৃহস্পতিবার প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত।

সরকারের কাছে সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্ন, ‘আগের চুক্তি বাতিল না করে প্রধানমন্ত্রী নতুন করে ৩৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার ঘোষণা করলেন কী করে? আদতে চুক্তি বাতিল হয়েছে ২০১৫ সালের জুন মাসে। অথচ প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন ওই বছরের ১০ এপ্রিল। কীভাবে?’

যুদ্ধবিমান তৈরির ক্ষেত্রে ‘অফসেট পাটর্নার’ (অনিল আম্বানির কোম্পানি) নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, সে বিষয়েও সরকারকে কাঠগড়ার তুলল সর্বোচ্চ আদালত।

প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ বলেন, সুখোই-৩০ ও এলসিএ নাসিক ও বেঙ্গালুরুতে তৈরি হচ্ছে। তাহলে বিদেশ থেকে কেন বিমান কেনার প্রয়োজন পড়ল?

এসব প্রশ্নের জবাবে বিমান বাহিনীর কর্মকর্তা বলেন, এখন যে বিমানগুলি ব্যবহার করা হয়, সেগুলি পুরনো প্রযুক্তির। আমরা অত্যাধুনিক বিমান চাই। তাই বিদেশ থেকে রাফায়েল আনা হচ্ছে।

রাফায়েল প্রস্তুতকারক সংস্থা ফ্রান্সের ডাসল্ট এভিয়েশন ভারতের কোন কোম্পানিকে অফসেট পার্টনার করবে, তা সরকারের জানার বিষয় নয়। অফসেট পার্টনার নির্বাচনে সরকারের কোনও ভূমিকাও নেই বলেই লিখিতভাবে আদালতে জানিয়েছে মোদি সরকার।

আর সেটি দেখেই প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈকে পাশে রেখে বিচারপতি কে এম জোসেফের মন্তব্য, ‘যুদ্ধবিমান কেনার বিষয়টি সম্পূর্ণ দেশের স্বার্থে। তাই কে সেই যুদ্ধবিমান তৈরির অফসেট পার্টনার, তার যোগ্যতা আছে কি না, তা সরকার জানবে না? তাছাড়া হ্যালের সঙ্গে চুক্তিতে যেভাবে মেক ইন ইন্ডিয়াকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছিল, সেটিও হল না!’

বিচারকের প্রশ্নের মুখে পড়ে শুনানিতে রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়েন কেন্দ্রের হয়ে সওয়াল করা দেশের অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল। তবে ভিড়ে ঠাসা শীর্ষ আদালতে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, আগে যে ১২৬টি রাফায়েল কেনার উদ্যোগ হয়েছিল, আর এখন যে ৩৬টি কেনা হচ্ছে, দু’টি ক্ষেত্রেই যুদ্ধবিমানের মূল বৈশিষ্ট্য এক। পাশাপাশি আরো জানান, ফান্স থেকে যে রাফায়েল কেনা হচ্ছে সেখানে কোনও সার্বভৌম গ্যারান্টি ফ্রান্সের নেই। যদিও বলেন, ফ্রান্স ডাসল্টের সঙ্গে এই চুক্তির ক্ষেত্রে শুধু একটি ‘লেটার অব কমর্ফোট’ জারি করেছে।

বৃহস্পতিবার টানা ৪ ঘণ্টা ৪০ মিনিট মামলা শুনে সিবিআই তদন্ত নিয়ে রায় রিজার্ভ রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট।

অন্যদিকে, বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন দুই আইনজীবী। পরে যুক্ত হন বিজেপির প্রাক্তন মন্ত্রী অরুণ শৌরি, যশবন্ত সিং সহ আম আদমি পার্টির এমপি সঞ্জয় সিং। সেই মামলার শুনানিতেই সরকারের এই সিদ্ধান্তের পিছনে প্রতিরক্ষা প্রক্রিয়ার নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখানোর অভিযোগ করে নিরপেক্ষ সংস্থাকে দিয়ে তদন্তের দাবি করেন আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ। দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে অ্যাটর্নি জেনারেলের যুক্তি, আগের চুক্তি সম্পন্ন হতে বিলম্ব হচ্ছিল। হ্যালের সঙ্গে ডাসল্টের সব বিষয়ে সহমত হচ্ছিল না। তাই ২০১৫ সালের মার্চ মাস থেকেই চুক্তি বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করে জুন মাসে তা চূড়ান্ত হয়।

তবে রাফায়েলের দাম নিয়ে এদিন বিচারপতির বেঞ্চ সরকারের কাছে বাড়তি কিছু জানতে চায়নি।

সূত্র: বর্তমান

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত