ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

ভারতের ৫টি রোমাঞ্চকর ট্রেকিং জোন

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ১৮ এপ্রিল ২০১৮, ১১:১৯  
আপডেট :
 ১৮ এপ্রিল ২০১৮, ১১:৫৩

ভারতের ৫টি রোমাঞ্চকর ট্রেকিং জোন

ভ্রমণপিপাসু মানুষদের শখের তালিকায় অনেক রকম কার্যক্রম থাকে। ট্রেকিং তার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় আর প্রচুর মানুষ প্রতিনিয়তই এই কাজটি আনন্দের সাথে করে থাকেন। বাংলাদেশের ট্রেকিং জোন সম্পর্কে আমাদের মোটামুটি আইডিয়া থাকলেও পাশের দেশ ভারতে রক্ত শীতল করা, সৌন্দর্যের পসরা সাজিয়ে রাখা এমন অনেক রোমাঞ্চকর ট্রেকিং জোন আছে যা আমরা জানি না। এসব ট্রেকিং জোন যেতে খুব বেশি টাকা না লাগলেও বুকে সাহস আর শারীরিক ফিটনেস লাগে প্রচুর। এখানে ট্রেকিং জোনগুলো বাজেট আর সহনীয়তার মাত্রার উপর নির্ভর করে সাজানো হয়েছে।

১. ছাদার-দ্য ফ্রোজেন রিভার ট্রেক:

এতদিনে সবাই মানালি, লাদাখ, পেংগানন লেকের বদৌলতে হিমাচলের অনেকখানি সম্পর্কেই জানি। লাদাখের জংস্কার এলাকায় জংস্কার ট্রেইল নামের এক উইন্টার ট্রেইল আছে। উইন্টার ট্রেইল বলা হয় এই জন্য যে মূলত শীতকালেই এর পানি জমে গিয়ে আসল সৌন্দর্য্য প্রকাশ পায়। মাইনাস ৩৫ থেকে ৪০ ডিগ্রিতে করতে হবে এই দূর্ধষ ট্রেকিং। মোটামুটি ফ্ল্যাট এই ট্রেকিংয়ে হাঁটতে তেমন কষ্ট হবে না, কষ্টটা হবে শীতের তীব্রতায়। কাশ্মীরের সীমান্তে তীব্র শীতে ১১,১২৩ ফিট উঠে যেতে হবে অনায়াসে। সাথে বরফ জমা নদী তো থাকছেই। প্রায় ১০ দিনের ট্রেকিং রুট এটা। এই ট্রেকিংয়ে যেতে হলে আপনাকে হতে হবে পোশাকের ব্যাপারে কৌশলী আর শারীরিকভাবে একদম ফিট। এখানে যাওয়ার সেরা সময় হচ্ছে জানুয়ারী থেকে ফেব্রুয়ারি। খরচ পড়তে পারে ৩০-৩৫ হাজার টাকা, যদি আপনি কোনো প্রকার আকাশযাত্রা না করেন।

২. রূপকুণ্ড ট্রেক, উত্তরখণ্ড:

ভারতের উত্তরাঞ্চলের আরেকটি জনপ্রিয় ট্রেকিং জোন এই রুপকুণ্ড ট্রেকিং জোন। প্রায় ১৬,৫০০ ফিট উচ্চতায় মাউন্ট ত্রিশুলের কোলে জায়গা পাওয়া রূপকুণ্ড লেক হচ্ছে এই ট্রেকের মূল আকর্ষণ। দিল্লি থেকে শ্রীনগর পার হয়ে প্রায় ৪৭৮ কি.মি দূরের মান্ডোলির লোহাজং থেকে শুরু করতে হয় এই ট্রেক। প্রথম দিন লোহাজং পাস হয়ে একে একে বেদনি নদী, দিদনা গ্রাম, আলি বুগয়াল, ঘোড়া লোতানি, ভাগ্যবসা পার হয়ে মোটামোটি ৫৩ কি.মি ট্রেকিং শেষে ৮ম দিনে আপনি পৌছে যাবেন রূপকুণ্ড লেকে। এই ট্রেকে বাজেট ট্রাভেলারদের খরচ হতে পারে ১৫ হাজার টাকার মতো।

৩. পাংগারচুলা পিক ট্রেক:

উওরখণ্ডের আরেকটি জনপ্রিয় ট্রেক পাংগারচুলা পিক ট্রেক। কুয়ারি পাস ক্রস করার মাধ্যমে মোটামুটি ৪,৭০০ মিটার অর্থাৎ ১৪,৭০০ ফিট উপরে উঠে যেতে হয় ঠিক ৬-৭ দিনে। জসীমাঠের চামোলি জেলা থেকে শুরু করতে হয় এই ট্রেক। ভাগ্য যদি ভালো থাকে তবে সাদা বরফের গায়ে হিমালয়ান ভালুক আর চিতাবাঘের পায়ের চিহ্ন পেলেও পেতে পারেন! বসন্তে পাংগারচুলা পিক আপনাকে স্বাগতম জানাবে শত শত রোডোডেন্ড্রন দিয়ে।

কেউ যদি চায় পাংগারচুলা পিক সামিট না করে ৪,২০০ মিটার উপরে মিনি পাংগারচুলা পিকও সামিট করতে পারবে। এই ট্রেকে আরো পাবেন চোখ জুড়ানো মাউন্ট চৌখাম্বা, দুনাগিরি, হাতি পর্বত আর ঘোড়ি পর্বত। বসন্তে রোডোডেনড্রন ফুটলেও শীতকালই হচ্ছে পাংগারচুলা যাওয়ার সব চেয়ে ভাল।

৪. সান্দাকফু ট্রেক:

চমকপ্রদ ট্রেকিং অভিজ্ঞতা যদি পেতে চান তবে সান্দাকফু ট্রেকের বিকল্প নেই। মোটামুটি ৩ দিনের ওঠা আর ১ দিনে নামা নিয়ে এই ট্রেক ৪ দিনে শেষ হয়ে যাবে। সান্দাকফুর মূল আকর্ষণ হলো সেখান থেকে হিমালয়ান রেঞ্জ দেখা যায় খুব স্পষ্টভাবে। সান্দাকফু যেতে হলে প্রথমে দার্জিলিং যেতে হয়, দার্জিলিং থেকে মানেভঞ্জন। মানেভঞ্জন থেকে শুরু হয় মূল ট্রেক। নেপাল আর ভারতের বর্ডার ধরে কখনো কংক্রিটের রাস্তা বা কখনো পাথুরে স্টিপ পথ আবার কখনো টানা সিড়ি বেয়ে প্রথম দিন উঠে যেতে হয় তুমলিংয়ে। তুমলিং থেকে পরের দিন কালাপোখরী আর তার পরের দিন সান্দাকফু। মানেভঞ্জন থেকে মোট ৩৭ কি.মি ট্রেক শেষে দেখা মিলবে সান্দাকফু পিকের।। সড়কপথে দার্জিলিং হয়ে গেলে খরচ পড়বে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা।

৫. নাগ তিব্ব ট্রেক:

উত্তরখণ্ডের আরেকটি সহজ ট্রেক নাগ তিব্ব ট্রেক। এই ট্রেকের আরেক নাম সারপেন্টস পিক ট্রেক। প্রায় ৯,৯১৫ ফিটের দ্রাঘিমাংশের এই ট্রেক সাধারণত ২ দিনের হয়। হেঁটে পার করতে হয় মাত্র ১৫ কি.মি পথ। দিল্লি থেকে দেহরাদুন যেতে হবে প্রথমে। দেহরাদুন থেকে শুরু হয় এই ট্রেক। প্রথম দিন দেহরাদূন থেকে পান্তওয়ারি হয়ে নাগ তিব্ব বেস ক্যাম্পে যেতে হয়। প্রায় ৮৫ কি.মি গাড়িতে আর পরের ৮ কি.মি ট্রেক করে বেস ক্যাম্পে পৌঁছাতে হয়। প্রথম দিনেই এই ট্রেকের ৭০ শতাংশ সম্পন্ন করা সম্ভব।

আরএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত