ঢাকা, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

এমপিওভুক্তির ক্ষেত্রে স্থবিরতা ও অস্বচ্ছতা কাম্য নহে

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ২২ ডিসেম্বর ২০১৭, ১১:৫৪  
আপডেট :
 ২২ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৫:৩৭

এমপিওভুক্তির ক্ষেত্রে স্থবিরতা ও অস্বচ্ছতা কাম্য নহে

মান্থলি পে-অর্ডার তথা এমপিওভুক্তির আশায় ঝুলিয়া রহিয়াছে সাড়ে ৫ হাজার প্রতিষ্ঠানের ৭৫ হাজার শিক্ষকের ভাগ্য। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, সরকার ২০১০ সালে সর্বশেষ এক হাজার ৬২৪ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করিয়াছিল। ইহার পূর্বে এমপিওভুক্তির কার্যক্রম বন্ধ ছিল ছয় বত্সর। এইদিকে ২০১৩ সাল হইতে নূতন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনুমোদনের সময় শর্ত জুড়িয়া দেওয়া হইতেছে যে, এমপিও সুবিধা দাবি করা যাইবে না। আবার, ২০১১ সালে এক হাজার বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা এমপিওভুক্তি করিবার ঘোষণা দেওয়া হইলেও তাহা বাস্তবায়িত হয় নাই।

শিক্ষক সংগঠনগুলির দেওয়া তথ্যানুযায়ী, ২০১০ সালে এমপিওবিহীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিল আট হাজার। আর শিক্ষক এক লক্ষ ২০ হাজার। কিন্তু আর্থিক সুবিধা না পাইবার কারণে গত সাত বত্সরে বন্ধ হইয়া গিয়াছে দুই সহস্রাধিক স্কুল। জানা যায়, এমপিওভুক্ত হইবার জন্য যেইসকল শর্ত রহিয়াছে, তাহার সবই পূরণ করা আছে পাঁচ হাজার ২৪২টি প্রতিষ্ঠানের। তাহা সত্ত্বেও এমপিওভুক্তি না হওয়ায় এইসকল প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ৭৫ হাজারের বেশি শিক্ষক ও কর্মচারী ভুগিতেছেন চরম হতাশায়।

আরো পড়ুন: নীতিমালা না মেনে এমপিওভুক্তি চলছেই

গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যমতে, শিক্ষামন্ত্রীও মনে করেন যে এমপিওভুক্তির অবশ্যই প্রয়োজন রহিয়াছে। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে যাহারা এমপিওভুক্তির যোগ্য। কিন্তু অর্থ সংকটের কারণে এই কার্যক্রম স্থবির হইয়া আছে। জানা যায়, চলতি অর্থবত্সরের পরিকল্পনার মধ্যে নূতন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির কথা থাকিলেও ইহার জন্য বাজেটে কোনো বরাদ্দ নাই। প্রশ্ন উঠিতে পারে যে, সরকার আর কত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং আর কত শিক্ষককে এমপিওভুক্ত করিবেন? প্রকৃতপক্ষে এমপিও প্রদানের মাধ্যমে সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের উদ্যোগকেই ত্বরান্বিত করিয়া থাকে। সাধারণত এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই জাতীয়করণের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার লাভ করিয়া থাকে। এই প্রতিষ্ঠানগুলি প্রথমে ব্যক্তি বা জনগণের চাঁদা বা অনুদানের ভিত্তিতে গড়িয়া উঠিলেও একটা পর্যায়ে ভবন নির্মাণ হইতে শুরু করিয়া বিভিন্ন শিক্ষা উপকরণ বিতরণ এবং শিক্ষকদের এমপিও প্রদান ইত্যাদি ক্ষেত্রে সরকারি অর্থপ্রবাহ বৃদ্ধি পায়।

আরো পড়ুন: এমপিওভুক্তির আশায় ৭৫ হাজার শিক্ষক, সাড়ে ৫ হাজার প্রতিষ্ঠান

দেশে ২৭ সহস্রাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত। জনসংখ্যার বিবেচনায় এই সংখ্যা কম নহে বটে, কিন্তু মুশকিল হইল প্রায় সবসময়ই রাজনৈতিক বিবেচনায় এমপিওভুক্তি দেওয়া হইয়াছে। স্থান নির্বাচনের সময় প্রকৃত প্রয়োজনের চাইতে ব্যক্তির ইচ্ছা-অনিচ্ছাই প্রাধান্য পাইয়াছে বহু ক্ষেত্রে। ফলে বিগত এক দশকে এমন বহু এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়িয়া উঠিয়াছে যেখানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা সামান্যই, কোথাও কোথাও শিক্ষার্থীর সংখ্যা শিক্ষকের চাহিতেও কম দেখা যায়। অথচ অনেক জায়গায় প্রয়োজনীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না থাকিবার কারণে বিপুল সংখ্যক সম্ভাবনাময় ছেলেমেয়ের শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত হইয়া পড়িয়াছে।

তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঁচ হাজার ৫৯০টি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রহিয়াছে, যেইগুলি প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা না করিয়াই অনুমোদন দেওয়া হইয়াছে। আবার প্রয়োজনীয় স্থানে তিন হাজার ৭০৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন দেওয়া হয় নাই। শুধু এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের নূতন শিক্ষকের এমপিওভুক্তি নহে, সারা বৎসরই কমবেশি নূতন নূতন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেরও এমপিওভুক্তি অব্যাহত রাখা প্রয়োজন। আর এইক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিবেচনা নহে, প্রাধান্য দিতে হইবে প্রকৃত এমপিওভুক্তির দাবিদার প্রতিষ্ঠানকে।

আরো পড়ুন: এমপিওভুক্তি : পরিকল্পনায় আছে বরাদ্দ নেই

আরো পড়ুন: এমপিওভুক্তির প্রক্রিয়া

আরো পড়ুন: শিল্পপতির উদ্দ্যোগে বেতন পাচ্ছেন ৪৩৩ শিক্ষক-কর্মচারী

  • সর্বশেষ
  • পঠিত