ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১১ মিনিট আগে
শিরোনাম

ভাতের বদলে কাদা খান এই বৃদ্ধ...

ভাতের বদলে কাদা খান এই বৃদ্ধ...

ভাত রুটি না হলেও চলবে। কিন্তু দিনে এক কেজি কাদা তাকে খেতেই হবে। বলছিলাম কারু পাশোয়ানের কথা। ৯৯ বছরে এসেও ছাড়তে পারেননি এই বদাভ্যাসটি। অথচ কারণ জানলে একে আর বদাভ্যাস বলবে না কেউ।

বৃদ্ধ কারু পাশোয়ানের বাড়ি ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের সাহেবগঞ্জে। ১১ বছর বয়স থেকেই কাদা খাওয়া শুরু। এখন তো এই বিচিত্র খাদ্যাভ্যাসই তাকে বিখ্যাত করে তুলেছে গোটা দেশ জুড়ে। তার কাদা খাওয়া দেখতে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসে কত মানুষ!

কিন্তু নিজের এই অভ্যাস নিয়ে একটুও গর্বিত নন কারু পাশোয়ান। কেননা এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বড় কষ্টের একটি কারণ। সেই কারণ যখন তিনি প্রকাশ করেন তখন বেরিয়ে পড়ে সে দেশের অন্তঃসার শূন্য এক আর্থ সামাজিক ব্যবস্থা। যে দেশে বুলেট ট্রেনের পরিকল্পনা হয় সেদেশের মানুষ এখনও ক্ষিদে মেটাতে কাদা খান।

এ প্রসঙ্গে কারু পাশোয়ান বলেন, ‘এখন আমার কাদা খাওয়া অনেকের কাছে মজার বিষয়। এটা দেখার জন্য কত লোকজন ছুটে আসে। একটা সময় ছিল যখন খাবার না পেয়ে ক্ষিদের জ্বালায় পেট ভরাতে কাদা খেতে বাধ্য হয়েছিলাম। যে সময় শিশুরা খেলাধুলো করে কাটায়, সেই শৈশব আমি কাটিয়েছি খাবারের খোঁজে।’

অভাবের সংসারে খাওয়ার মুখ থাকে অনেক। তাই একটুকরো রুটি ভাইবোনের মুখে তুলে দিতেন ১১ বছরের কারু। আর নিজের পেট ভরাতেন কাদা খেয়ে। যত বড় হয়েছেন দারিদ্রের চাপ তত বেড়েছে। তার নিজেরও বড় সংসার, ১০ ছেলে মেয়ে। তাদের মুখের ভাত তুলে দিতে গিয়ে আর নিজের খাওয়ার কিছু থাকত না। এক সময় হতাশায় আত্মহত্যা করার কথাও ভেবেছেন কতদিন। তাড়াতাড়ি মরার জন্যই আরও বেশি করে কাদা খেতে শুরু করেন। কাদা খাওয়াটা একসময় নেশার পরিণত হয়। এখন আর কাদা না খেয়ে থাকতে পারেন না।

কারুর ভাষায়, ‘এখন তো সংসারে আর অভাব নেই। পেট ভরে ভাত খেতে পাই। কিন্তু রোজ এক কেজি কাদা না খেলে ঘুম হয় না। ভাতের থেকেও কাদা আমার পেট ভরায় বেশি। তৃপ্তিও দেয়।’

কারুর বড় ছেলে সিয়া রাম পাশোয়ান জানিয়েছেন, পরিবারের লোকেরা তাকে অনেকবার এর থেকে বিরত করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু পারেননি। যেভাবেই হোক মাঠ ঘাটে ঘুরে কাদার টুকরো তুলে খেয়ে ফেলেন। কিন্তু এতে তার কোনো ক্ষতি হয়নি। ৯৯ বছর বয়সে পৌঁছেও দিব্যি সুস্থ রয়েছেন কারু পাশোয়ান। এই বিরল খাদ্যাভ্যাসের জন্য ২০১৫ সালে ভারতের এক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় তাকে বিশেষ সম্মানে সম্মানিত করেছে।

সূত্র: ইন্টারনেট

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত