ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষকদের সমস্যার সমাধান কোন পথে?

  মো. মঈনুদ্দিন চৌধুরী

প্রকাশ : ২৭ মার্চ ২০১৮, ০৩:৫২  
আপডেট :
 ২৭ মার্চ ২০১৮, ০৩:৫৩

এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষকদের সমস্যার সমাধান কোন পথে?

বাংলাদেশে শিক্ষার সার্বিক উন্নয়নে এমপিওভুক্ত শিক্ষক তথা এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবদান প্রায় ৯৪%। তবে প্রশ্ন হল, ৯৪% শিক্ষক সম্প্রদায় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে সরকার তথা রাষ্ট্রের অবদান কতটুকু? বাংলাদেশের বিভিন্ন সেক্টরে, এমনকি শিক্ষা সেক্টরের বিভিন্ন অংশে কম-বেশি গবেষণা হলেও এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক তথা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়ে গবেষকদের সুনির্দিষ্ট কোনো গবেষণা কর্ম সচরাচর দেখা যায় না। পত্র-পত্রিকায় মাঝেমধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবেদন কিংবা লেখালেখি হলেও কর্তৃপক্ষ এ ক্ষেত্রে নির্বিকার।

যে কোনো কর্মক্ষেত্রেই ব্যবস্থাপনার উচ্চস্তর, মধ্যস্তর ও নিুস্তরের কর্মীদের জন্য নিজ নিজ পদবি ও বেতন স্কেল অনুযায়ী বাৎসরিক ইনক্রিমেন্টসহ বিভিন্ন ধরনের ভাতার (যেমন বাড়িভাড়া ভাতা, চিকিৎসা ভাতা, উৎসব ভাতা, শিক্ষা ভাতা, বৈশাখী ভাতা ইত্যাদি) ব্যবস্থা থাকে।

সমগ্র চাকরিজীবনে টাইমস্কেলসহ কয়েক দফা পদোন্নতির ব্যবস্থা থাকে। কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্য, দেশের এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা) শিক্ষকদের জন্য মূল বেতন-ভাতা ১০০% ব্যতীত আর কিছু নেই বললেই চলে।

অর্থাৎ (প্রতিষ্ঠান প্রধান থেকে ঝাড়ুদার) বাড়ি ভাড়া ১ হাজার টাকা, চিকিৎসা ভাতা ৫০০ টাকা। কোনো ইনক্রিমেন্ট নেই। মাসিক থোক বরাদ্দ হিসেবে প্রতীকী একটি ইনক্রিমেন্ট ছিল, যা ৫% ইনক্রিমেন্ট দেয়ার কথা বলে কেড়ে নেয়া হয়েছে।

সমগ্র চাকরিজীবনে অনুপাত প্রথার শর্তে যদিও একটি পদোন্নতির ব্যবস্থা রয়েছে, কিন্তু তা সবার ভাগ্যে জোটে না। অর্থাৎ গল্পের আদুভাইয়ের মতো কেউ কেউ সপ্তম শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণীতে প্রমোশন পেলেও অন্যরা সপ্তম শ্রেণীতেই থেকে যান।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, কেউ কলেজের শিক্ষক হলে তাকে প্রভাষক হিসেবেই (সারাজীবন জেলখানায় থাকার মতো) তুষ্ট থাকতে হবে। অন্যদিকে কেউ সৌভাগ্যক্রমে সহকারী অধ্যাপক হতে পারলেও সহযোগী অধ্যাপক কিংবা অধ্যাপক হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

শিক্ষকরা মূল বেতনের ২৫% উৎসব ভাতা পেলেও কর্মচারীরা পাচ্ছেন ৫০%- এ কেমন বিবেচনা? স্বাধীনতার পর থেকে আজ অবধি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের আর্থিক ও অনার্থিক সুবিধার (প্রেষণা) বিষয়গুলো যেভাবে কচ্ছপগতিতে অগ্রসর হচ্ছে, এভাবে চলতে থাকলে আগামী ৫০ বছরেও শিক্ষকদের দৈন্যদশার নিরসন হবে না।

কেননা এমপিও শিক্ষকদের ধাপে ধাপে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদান করতে গেলে যুগের পর যুগ পেরিয়ে যাবে। এর ফলে শুধু শিক্ষার সার্বিক মানোন্নয়ন ব্যাহত হবে না, একইসঙ্গে উন্নত দেশে উত্তরণের জন্য বাংলাদেশের যে প্রয়াস- তা বাধাগ্রস্ত হবে।

লেখক: সহকারী অধ্যাপক, ব্যবস্থাপনা বিভাগ,শংকুচাইল ডিগ্রি কলেজ, বুড়িচং, কুমিল্লা।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত