ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

বয়স এখন বোঝা, তাই মরতে চান শতবর্ষী বৃদ্ধ!

বয়স এখন বোঝা, তাই মরতে চান শতবর্ষী বৃদ্ধ!

‘মরিতে চাহি না আমি সুন্দর ভুবনে/ মানবের মাঝে আমি বাঁচিবারে চাই’। শুধু কবিগুরু নন, সব মানুষই বেশি দিন বেঁচে থাকতে চায়। দীর্ঘ জীবন লাভের আশায় মানুষ কত কিছুই না করে! স্বাস্থ্য সম্মত জীবন-যাপন থেকে শুরু করে অনেক কিছুই থাকে সে প্রচেষ্টার মধ্যে। কিন্তু এমন কোনো মানুষও কি আছেন যিনি আর বাঁচতে চান না, নিজেই নিজের মৃত্যু কামনা করে? দীর্ঘ জীবন থেকেও পরিত্রাণ পেতে চান?

হ্যা, এমন একজনের খোঁজ পাওয়া গেছে। তিনি হচ্ছেন অস্ট্রেলিয়ার বিজ্ঞানী ডেভিড গুডঅল। তার বয়স এখন ১০৪। গুডঅল আর বেঁচে থাকতে চান না। সেজন্য স্বেচ্ছামৃত্যু বেছে নিতে তিনি সুইজারল্যান্ড যাচ্ছেন। বয়স ১০৪ বছর হলেও তিনি এখনো শারীরিকভাবে সুস্থ আছেন। কিন্তু তিনি মনে করছেন, এ বয়সে তার কোন স্বাধীনতা নেই। অন্যের উপর তাকে নির্ভর করতে হয়।

গত বছর জন্মদিনের পালনের সময় গুডঅল বলেন, ‘ এ বয়স পর্যন্ত পৌঁছানোর জন্য আমি নিজেই অনুতপ্ত হচ্ছি। আমি ভালো নেই। আমি মারা যেতে চাই।’

কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার একটি মাত্র রাজ্য ছাড়া অন্য কোথাও স্বেচ্ছামৃত্যুর বিধান নেই। এ বিষয়টিকে খুব বেদনাদায়ক বলে মনে করছেন বৃদ্ধ গুডঅল। সেজন্য স্বেচ্ছামৃত্যুর জন্য তিনি সুইজারল্যান্ডের একটি ক্লিনিকে যাচ্ছেন।

লন্ডনে জন্ম নেয়া গুডঅল অস্ট্রেলিয়ার পার্থ শহরে একটি ছোট অ্যাপার্টমেন্টে থাকতেন। ১৯৭৯ সালে তিনি পূর্ণকালীন কাজ থেকে অবসর নেন। কিন্তু এরপরও তিনি মাঠ পর্যায়ের গবেষণার সাথে ব্যাপকভাবে জড়িত ছিলেন। তিনি অস্ট্রেলিয়ার এডিথ কাওয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে বিনা বেতনে গবেষণা করতেন।

বয়স বেশি হয়ে যাবার কারণে তার বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া এবং কাজ করার ক্ষেত্রে নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে বাসায় বসে কাজ করার কথা বলেছিলেন। কিন্তু ১০২ বছর বয়সী গুডঅল তখন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এ ধরনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। মামলার রায় তার পক্ষে আসে। গত ৭০ বছরে তিনি শতাধিক গবেষণা প্রবন্ধ লিখেছেন।

বেশি বয়স হয়ে যাবার কারণে গুডঅলকে গাড়ি চালানো ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে। তিনি একসময় থিয়েটারের সাথেও জড়িত ছিলেন। কিন্তু বয়সের কারণে সেটিও তাকে ছাড়তে বাধ্য করা হয়।

গুডঅলের স্বেচ্ছামৃত্যু বেছে নেবার নেবার পেছনে আরেকটি কারণ আছে। গত বছর তিনি তার অ্যাপার্টমেন্টে পড়ে যান। এরপর দুইদিন পর্যন্ত তিনি নিখোঁজ ছিলেন। তারপর চিকিৎসকরা বলেছেন, এমন অবস্থায় তার সেবা দেবার জন্য ২৪ঘণ্টা একজনকে থাকতে হবে নতুবা তাকে একটি নার্সিং কেয়ারে স্থানান্তর করতে হবে।

কিন্তু তিনি সেটা চাননি। গুডঅলের সাথে তাঁর পুরনো বন্ধুদের এখন আর দেখা হয়না। কেননা চলাচল সীমিত হয়ে গেছে তার। তাই এমন অবস্থায় বেঁচে থাকার কোন অর্থ খুঁজে পাচ্ছেন না তিনি। তার মৃত্যুর সময় ঘনিষ্ঠ আত্নীয়রা পাশে থাকবেন। তবে কবে নাগাদ তিনি স্বেচ্ছামৃত্যু গ্রহণ করছেন তার কোনো নির্দিষ্ট তারিখ এখনও জানা যায়নি।

সূত্র: বিবিসি

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত