ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

বাবা মেয়ে হত্যার পেছনে পরকীয়া: আরজিনার প্রেমিক আটক

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৩ নভেম্বর ২০১৭, ১৪:৫৩

বাবা মেয়ে হত্যার পেছনে পরকীয়া: আরজিনার প্রেমিক আটক

রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় বাবা-মেয়ে খুনের ঘটনায় নিহতের স্ত্রী আরজিনার পরকীয়া প্রেমিক প্রধান সন্দেহভাজন ও দায়েরকৃত মামলার আসামি শাহিন মল্লিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বাড্ডা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাখাওয়াত হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পুলিশ বলছে, এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে রয়েছে পরকীয়া প্রেম।

বাড্ডা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাখাওয়াত হোসেন বলেন, শুক্রবার সকালে খুলনা থেকে শাহিনকে গ্রেফতার করা হয়। নিহত জামিলের ভাই শেখ শামীম হোসেন বাদী হয়ে নিহতের স্ত্রী আরজিনা বেগম ও তার পরকীয়া প্রেমিক শাহিন মল্লিককে আসামি করে বাড্ডা থানায় এ মামলা করেন। মামলা নং ৪। বৃহস্পতিবার রাতেই ৩০২/৩৪ ধারায় মামলাটি নথিভুক্ত হয়।

মামলা নথিভুক্ত হবার পর নিহতের স্ত্রী আরজিনা বেগমকে গ্রেফতার দেখানো হয়। এরপর থেকেই শাহিন মল্লিককে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। শাহিন মল্লিক পেশায় রং মিস্ত্রি। মামলায় পরকীয়ার বিষয়টি উঠে এসেছে। নিহতের পরিবারও একই দাবি করেছে। স্ত্রী আরজিনা ও তার প্রেমিক শাহিনের যোগসাজশে জোড়া খুন হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছে পুলিশ।

ঢাকা মহানগর পুলিশের বাড্ডা জোনের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার আশরাফুল কবির বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে আর্জিনার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে শুক্রবার ভোরে খুলনার বটিয়াঘাটা থানা এলাকা থেকে শাহীন ও তার স্ত্রী মাসুমা বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়। উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার সকাল ৬টার দিকে রাজধানীর উত্তর বাড্ডার ময়নারবাগের ৩০৬ পাঠান ভিলার ৩ তলার ভাড়া বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় জামিল (৩৮) ও তার মেয়ের নুসরাতের মরদেহ।

পুলিশ জানায়, জামিলের বাড়ি গোপালগঞ্জ সদরের করপাড়া ইউনিয়নের বনপাড়া গ্রামে। পাঠান ভিলার ৩ তলায় দুটি কক্ষে ভাড়া থাকতেন বেসরকারি একটি অফিসের গাড়ি চালক জামিল। গত কোরবানীর ঈদের পর স্ত্রী আরজিনা (৩০), মেয়ে নুসরাত (৭) ও ছেলে আলফিকে(৩) নিয়ে ওই বাসায় উঠেন জামিল।

বৃহস্পতিবার ভোরে ওই বাসার একটি ঘর থেকে ৩৮ বছর বয়সী জামিল ও তার নয় বছর বয়সী মেয়ে নুসরাত জাহানের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকের ধারণা, ভারী কিছু দিয়ে মাথায় আঘাত করে জামিলকে হত্যা করা হয়। আর নুসরাতকে হত্যা করা হয় শ্বাস রোধ করে।

পুলিশ বৃহস্পতিবার সকালে ওই বাসায় গিয়ে খাটের ওপর জামিল ও নুসরাতের লাশ পায়। জামিলের স্ত্রী আর্জিনা তখন তাদের পাঁচ বছর বয়সী ছেলেকে নিয়ে সিঁড়িতে বসে ছিলেন।

জামিলের পরিচিত গাড়ি চালক তুহিন হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার সকালে ওই বাসায় গেলে আর্জিনা তাকে বলেছিলেন, রাতে ‘কয়েকজন এসে’ তার স্বামী আর মেয়েকে খুন করে গেছে। কিন্তু তাজা রক্ত দেখে তুহিনের মনে হয়েছিল, তা ‘বড় জোর ঘণ্টাখানেক আগের’।

লাশ উদ্ধারের পরপরই পুলিশ আর্জিনাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়। কিন্তু ওই বাসায় সাবলেট থাকা শাহীন ও মাসুমার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না বৃহস্পতিবার সকাল থেকে।

পুলিশ কর্মকর্তা আশরাফুল কবির বলেন, “জিজ্ঞাসাবাদে আর্জিনা জানায়, আগে তারা যে বাসার দ্বিতীয় তলায় ভাড়া থাকত, সেখানে তৃতীয় তলায় থাকত শাহীনরা। তখনই তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। চার মাস আগে বাসা বদলের সময় আর্জিনাই কৌশল করে শাহীনদের সাবলেট নিয়ে আসে।” পরকীয়া প্রেমের জের ধরেই বৃহস্পতিবার ভোর রাতে জামিলকে হত্যা করা হয় বলে জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার আশরাফুল কবিরের ভাষ্য।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত