ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

বিএনপির আন্দোলন: পর্যবেক্ষণে আওয়ামী লীগ

  শামীম সিদ্দিকী

প্রকাশ : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ২১:০৩  
আপডেট :
 ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ২১:০৭

বিএনপির আন্দোলন: পর্যবেক্ষণে আওয়ামী লীগ

খালেদা জিয়ার মুক্তির নামে বিএনপির কর্মসূচিগুলো পর্যবেক্ষণ করছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আদালতের দেয়া রায় নিয়ে বিএনপির নেতাদের নানারকম মন্তব্য আদালত অবমাননা হচ্ছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে সভা-সমাবেশ করার নামে মাঠ গরমের রাজনীতি বেশীদূর এগুতে দিবে না সরকার ও সরকারী দল আওয়ামী লীগ।

সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে বসে বিএনপিকে দেয়া যে কোন পরামর্শই সন্দেহের চোখে দেখছে ক্ষমতাসীন দল। লন্ডন থেকে তার দেয়া পরামর্শ ষড়যন্ত্রেরই অংশ বলে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের একাধিক নেতা মনে করছেন। দল চালানোর নামে তারেক রহমানের দেয়া নির্দেশনার যে কোন কর্মসূচি দেশের স্বাভাবিক পরিবেশ বিনষ্ট করতে পারে এমন কিছু ঘোষণা করে বিএনপি সামনের দিকে এগুতে চাইলে তা কঠোর হস্তে দমন করবে প্রশাসন। আর সন্ত্রাসী কর্মকান্ড রুখতে ক্ষমতাসীন দল থাকবে প্রশাসনের পাশে। আওয়ামী লীগের কয়েকজন নীতিনির্ধারনী পর্যায়ের নেতার সঙ্গে আলাপকালে বিএনপির কর্মসূচি নিয়ে সরকারী দল হিসেবে তাদের লক্ষ্য কি তা জানতে চাইলে নেতারা তাদের মনোভাবের কথা এভাবেই প্রকাশ করেনে। নেতারা মনে করেন খালেদা জিয়ার দুর্নীতির সাজা নিয়ে জেলে গেছেন এখানে আওয়ামী লীগের কি করার আছে। এ নিয়ে বিএনপির হুমকি-ধামকিতে আওয়ামী লীগের কিছু আসে-যায় না। এটি তো আদালতের বিষয়। আওয়ামী লীগ আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কাজ করছে। প্রার্থী বাছাইয়ের কাজও চলছে। নির্বাচনী সভা-সমাবেশ করছে। ভোটারদের কাছে যাচ্ছে। বিএনপিরও উচিত নির্বাচন নিয়ে জনগণের কাছে যাওয়া, সংঘাতের দিকে নয়।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা মামলাগুলো গত তত্ত্বাবধায়কের আমলে শুরু হয়েছে। দুদক এ মামলা করেছে। এর মধ্যে বর্তমান সরকারের কোন অংশগ্রহণ নেই। শাস্তি হলে বিচার বিভাগ সরকারের অধীন আর শাস্তি না হলে বিচার বিভাগ স্বাধীন। তাদের এ সমস্ত কথাবার্তায় মনে হয় তারা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত নয়। তবে আওয়ামী লীগ যেকোন মুহূর্তে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত আছে। তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম জিয়া আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী করতে পারবেন কি না তা আদলতের এখতিয়ার। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলাটি সেনা সমর্থিত তত্বাবধায়ক সরকারের সময় করা হয়েছিল। বর্তমান সরকারের সময় শুধু মাত্র মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। আর আদালত এ বিচার কাজ সম্পন্ন করেছে। এ মামলার বিচার কার্যক্রমের সঙ্গে সরকারের কোন সম্পৃক্ততা নেই।

আওয়ামী লীগের একাধিক সাংগঠনিক সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপি জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে নানারকম অপপ্রচারের চালিয়ে যাচ্ছে। তারপরও সরকারের উন্নয়ন কাজ তো থেমে থাকেনি। অব্যহতভাবেই চলছে সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ। নেতারা মনে করেন রাজনীতিতে ব্যর্থ বিএনপি ষড়যন্ত্রের পথই বেছে নিচ্ছে। তারা অতীতেও তাই করেছে। এই বিএনপি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ভুন্ডলের ষড়যন্ত্রও করতে পারে। আওয়ামী লীগ তা করতে দেবে না। দলীয় সুত্রগুলো জানায় ক্ষমতাসীন দলের তৃণমুল থেকে কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীদের দৃষ্টি এখন আগামী সংসদ নির্বাচনে কে কোন আসনের টিকেট পাচ্ছেন। দলীয় মনোনয়ন কার কপালে জুটছে। বিএনপির আন্দোলনের দিকে নয়। বর্তমানে ক্ষমতাসীন দলের ভেতরে-বাইরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের গরম হাওয়া বইছে।দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে শুরু করে তৃনমুলের কার্য়ালয়গুলোতেও নির্বাচনী হাওয়া বইছে। এসব জায়গায় বিএনপির হুমকি-ধামকি পাওা পাচ্ছে না।

দলীয় সুত্র আরো জানায়, আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীতে আরো একটি বড় সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ। এ সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট চাইবেন। এছাড়াও বেশ কিছু উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিক্তিপ্রস্তুর স্থাপন করবেন। কাজেই একইদিন ঢাকায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির সমাবেশ করাটা সন্দেহজনক হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিষয়টি প্রশাসনের উপর ছেড়ে দেয়া হয়েছে। দলের একাধিক নেতাকর্মী জানায় রাজনীতি নিয়ে বিএনপি যদি আবারো ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো জ্বালাও, পোড়াও পরিস্থিতি সৃষ্টি করে তাহলে সরকার কঠোর ব্যবস্থা নিবে।

এদিকে প্রশাসন সুত্রে জানা যায়, আগামী সংসদ নির্বাচনের কমপক্ষে ছয় মাস আগেই নির্বাচনী মাঠ প্রশাসনের পরিবেশ প্রশাসনের অনুকুলে রাখতে তারা এখন থেকেই কাজ শুরু করেছেন। আইনশৃংলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কঠোর নজরদারী করছে।

এসআইএস/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত