ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

সিসিক নির্বাচন

সরে দাঁড়ালেন বিএনপির ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী

  সিলেট প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৯ জুলাই ২০১৮, ১৫:২৭  
আপডেট :
 ১৯ জুলাই ২০১৮, ১৫:৪৮

সরে দাঁড়ালেন বিএনপির ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী

রাজনীতিতে যে ফাইনাল কিংবা শেষকথা বলতে কিছু নেই তা আবারো প্রমাণ করলেন মেয়র প্রার্থী বদরুজ্জামান সেলিম। গতরাত পর্যন্ত প্রার্থীতা নিয়ে নিজের অবস্থানে অটল থাকার পর অবশেষে দুপুরে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীকে সমর্থন জানিয়ে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন বদরুজ্জামান সেলিম।

বৃহস্পতিবার আড়াইটার দিকে আরিফের বাসায় বসেই বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে তিনি এ ঘোষণা দেন।

এর আগে সকাল থেকেই কানাঘুষা চলছিল যে, নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন বিএনপির ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী বদরুজ্জামান সেলিম। বিএনপির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রও বিষয়টি নিশ্চিত করেছিল। আর এর অংশ হিসেবে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা দুপুরের দিকে সেলিমকে আরিফের বাসায় নিয়ে আসেন। তারপর তাকে নিয়ে দলের নীতিনির্ধারকদের দীর্ঘ বৈঠক শেষে প্রার্থীতা থেকে সরে আসার ঘোষণা দেন সেলিম।

এ সময় বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান এবং কেন্দ্রীয় সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীসহ বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে বুধবার রাত পর্যন্ত প্রার্থীতা প্রত্যাহারের বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের অনুরোধে বরাবরই ‘না’ বলে আসছিলেন বিএনপির (বহিষ্কৃত) বিদ্রোহী প্রার্থী বদরুজ্জামান সেলিম।

গত রাতে আলাপকালে বদরুজ্জামান সেলিম বলেন, ‘আমান উল্লাহ আমান এবং নাজিম উদ্দিন আলমের সাথে আমার দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। রাজনৈতিক সম্পর্কের পাশাপাশি তাদের সাথে আমার পারিবারিক সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। তারা সিলেটে এসেছেন তাই রাতের খাবার খেতে আমার বাসায় আসেন। এসময় আরিফুল হক চৌধুরীও উপস্থিত হন। আলাপকালে তারা আমাকে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু আমি সেটি করতে পারব না বলে তাদের জানিয়ে দিয়েছি। আমি নির্বাচন করছি, এটাই ফাইনাল।’

তবে রাজনীতিতে যে ফাইনাল কিংবা শেষ কথা বলতে কিছু নেই তা আবারো প্রমাণিত হল বদরুজ্জামান সেলিমের বেলায়।

সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বদরুজ্জামান সেলিমের প্রার্থীতা নিয়ে শুরু থেকে এপর্যন্ত বিএনপিতে বেশ জল ঘোলা হয়। কোনো ঔষধেই যেন কাজ হচ্ছিলো না। এর আগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সেলিমের কাছে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের অনুরোধ নিয়ে আসলে শেষ পর্যন্ত দেখাই করতে পারেন নি। সর্বশেষ আগের ব্যর্থতা চাঁপা দিয়ে সফল হলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান এবং কেন্দ্রীয় সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম।

এর আগে সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে সিলেট বিএনপিতে চলমান টানাপোড়েনের মাঝে বিএনপি মনোনিত প্রার্থী আরিফুল হকের প্রচারণার কাজে সিলেটে এসে বুধবার রাতে বদরুজ্জামান সেলিমের বাসায় যান বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। এসময় তারা সেলিমের মায়ের সাথে কুশল বিনিময় করেন এবং বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। আলোচনার একপর্যায়ে নির্বাচন নিয়ে কথা উঠলে সেলিমকে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন কেন্দ্রীয় নেতারা। তারা বলেন- ‘তুমি দলের লোক, তোমাকে দলে ফিরিয়ে আনতেই আমরা এসেছি।’

এসময় বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীও সেলিমের বাসায় উপস্থিত হন। তখন তিনিও বদরুজ্জামান সেলিমকে নির্বাচনের ব্যপারে অনুরোধ করেন। কিন্তু, সেলিম নির্বাচনের ব্যপারে তাদেরকে কোন সিদ্ধান্ত জানাননি।

এরপর সেলিমের বাসায় একসাথে রাতের খাবার খেয়ে ১২টার দিকে বেরিয়ে আসেন আরিফসহ বিএনপি নেতারা। তবে সবকিছুর পর সেলিম নির্বাচন করছেনই এবং এটাই তার ফাইনাল সিদ্ধান্ত বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু সেলিমের রাতের মন্তব্য সকালে পাল্টে যায়।

এদিকে আরিফের বাসায় সেলিমের অবস্থান নেয়ার পাশাপাশি সিলেট বিএনপির সকল পর্যায়ের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী সেখানে উপস্থিত হন।

অপরদিকে আরিফের বাসার দিকে যখন বিএনপি নেতাকর্মীদের স্রোত তখন বাসার সামনে অবস্থান নেয় পুলিশ। সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কোতয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ আরিফের বাসার সামনে অবস্থান করছে বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, বিগত দিনগুলোতে বদরুজ্জামান সেলিম আরিফের ব্যাপারে বিভিন্নরকম অভিযোগ তুলে আসছিলেন। আরিফুল হক চৌধুরীকে দলের জন্য ক্ষতিকারক, দলের সুবিধাভোগী হিসেবেও উল্লেখ করেন। আরিফকে দেয়া দলের মনোনয়ন মেনে নিতে পারেননি বদরুজ্জামান সেলিম। এজন্য নাগরিক কমিটির ব্যানারে মেয়রপদে প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত