মুশফিক-মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে লড়ছে বাংলাদেশ
স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ : ২৭ জানুয়ারি ২০১৮, ১৭:৫৭
টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় চাপে পড়া বাংলাদেশ প্রতিরোধ গড়েছে মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে। দুই জনের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে এগোচ্ছে বাংলাদেশ।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ১৯.২ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৬৬ রান।
শিরোপার লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ২২ রানেই তিন উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে টাইগাররা। আঙুলের চোটে হাসপাতালে সাকিব। ত্রিদেশীয় সিরিজের এই হাইভোল্টেজ ফাইনালে ব্যাট করতে পারবেন না দলের সহ-অধিনায়ক। তাই তামিমের দিকেই তাকিয়ে ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু দলীয় ১১ রানে চামিরার বলে ধনঞ্জয়ার ক্যাচ হয়ে সাজঘরে ফিরেছেন তিনি। নবম ওভারে ১০ রান করে আরেক ওপেনার মোহাম্মদ মিথুনও ফিরেছেন সাজঘরে।
মিথুনের বিদায়ের পর দলীয় স্কোরকার্ডে ৫ রান যোগ হতেই বাংলাদেশকে বিপদে ফেলে ফিরলেন সাব্বিরও। চামিরার বলে গুনারত্নের ক্যাচ হয়ে সাব্বিরের ব্যক্তিগত রান ২।
এর আগে ফাইনালে বাংলাদেশের বোলিং তোপে ২২১ রানেই গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কার ইনিংস। প্রথমবারের মত ত্রিদেশীয় সিরিজের ট্রফি পেতে বাংলাদেশকে তুলতে হবে ২২২ রান।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে লঙ্কান অধিনায়ক দিনেশ চান্দিমাল। ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের তৃতীয় ওভারে লঙ্কান ওপেনার গুনাথিলাকাকে সাজঘরের পথ দেখান মিরাজ। তামিমের তালুবন্দি হওয়ার আগে এই ওপেনার করেন ৬ রান। দলীয় ৮ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় লঙ্কানরা। এরপর রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছিলেন লঙ্কান ব্যাটসম্যান কুশাল মেন্ডিস। মেহেদী হাসানের করা আগের ওভারে তিনটি ছক্কা ও একটি চার মেরে বিধ্বংসী রুপ ধারণ করেছিলেন তিনি। পরের ওভারেই আক্রমণাত্মক এই ব্যাটসম্যানকে সাজঘরের পথ দেখিয়েছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা।
এরপর দুর্দান্ত এক বাউন্সারে ব্যক্তিগত ৪২ রানে ডিকভেলাকে সাজঘরে পাঠিয়েছেন সাইফউদ্দিন। ইনিংসের ২৩.৫ ওভারে সাইফউদ্দিনের বাউন্স গতির ডেলিভারি ডিকভেলার ব্যাট স্পর্শ করে শূন্যে উঠতেই তালুবন্দী করলেন সাব্বির রহমান।
দুর্দান্ত খেলতে থাকা উপুল থারাঙ্গাকে ৫৬ রানে ফেরালেন কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান। আগের বলে রিভিউ নিয়ে বেচে যাওয়া থারাঙ্গাকে পরের বলেই ফেরান তিনি। যখনই থারাঙ্গার ব্যাটে বড় রানের স্বপ্ন দেখে শ্রীলঙ্কা। ঠিক তখনই তাকে ফেরালেন মোস্তাফিজ।
উপুল থারাঙ্গার উইকেট নিয়ে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে দ্রুততম ৫০ উইকেটের মাইলফলক ছুঁয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান।
২৭তম ম্যাচে উইকেটের ফিফটি পূর্ণ করলেন মুস্তাফিজ। এর আগে ৩২ ওয়ানডেতে উইকেটের ফিফটি ছুঁয়েছিলেন বাঁহাতি স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক। বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে দ্রুততম হলেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শীর্ষ ছয়ে রয়েছেন মুস্তাফিজ।
থারাঙ্গার পর মাত্র ৫ রানের ব্যবধানে রুবেল হোসেনের বলে তামিমের হাতে বন্দী হলেন থিসারা পেরেরা। এরপর আবারো শিকার তুলে নেন রুবেল। তার বলে দলীয় ১৮২ রানে এলবিতে ৬ রানে আউট হয়ে সাজঘরে ফিরে যান আসেলা গুনারত্নে। ৪৫ রান করা দিনেশ চান্দিমাল বোল্ড হন রুবেলের বলে। দলীয় ২০৯ রানে আউট হওয়ার আগে তার ইনিংসে ছিল একটি ওভার বাউন্ডারি।
৮ রানের ব্যবধানে ব্যক্তিগত ১৭ রানে মোস্তাফিজের বলে মিঠুনের ক্যাচে ফিরতে হয় আকিলা ধনাঞ্জয়াকে। এরপর দলীয় ২১৯ রানে রুবেলের বলেই বোল্ড হন শেহান মাদুশাঙ্কা। আউট হওয়ার আগে দলের রানের সাথে ৭ রান যোগ করেন তিনি। ইনিংসের শেষ বলে রান আউট হন সুরাঙ্গা লাকমল, আউট হওয়ার আগে ২ রান করেন এই লঙ্কান। এতে সবকয়টি উইকেট হারিয়ে লঙ্কানদের সংগ্রহ ২২১ রান।
বাংলাদেশের হয়ে ৪ উইকেট নিয়েছেন রুবেল হোসেন। দুটি নিয়েছেন মুস্তাফিজ ও ১টি করে উইকেট শিকার করেছেন মাশরাফি,মিরাজ ও সাইফউদ্দিন।
এই শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামেই গত ৯ বছরে তিনটি ফাইনাল হেরেছে বাংলাদেশ। অধরা থেকে গেছে একটি ট্রফি জয়ের স্বপ্ন। এবার বাংলাদেশ ক্রিকেটের সেই অপূর্ণতা ঘোচাতে চান মাশরাফি বিন মুর্তজা।
২০০৯ সালে জিম্বাবুয়ে ও শ্রীলঙ্কাকে নিয়ে এরকম একটি ত্রিদেশীয় সিরিজেই প্রথমবারের মতো মিরপুরে ফাইনাল খেলে বাংলাদেশ। সেই ম্যাচে ১৫২ রানের পুঁজি নিয়েও শ্রীলঙ্কার ৬ রানে ৫ উইকেট তুলে নিয়েছিল বাংলাদেশ। তবু কুমার সাঙ্গাকারার ফিফটি আর শেষ দিকে মুত্তিয়া মুরালিধরনের ঝড়ো ইনিংসে ২ উইকেটে হেরে যায় বাংলাদেশ।
এরপর ২০১২ এশিয়া কাপের ফাইনালে পাকিস্তানে কাছে ২ রানে হারের বেদনা। ২০১৬ এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টির ফাইনালে ভারতের কাছে হার ৮ উইকেটে। তিনটি ম্যাচেই ছিলেন মাশরাফি। শেষটায় ছিলেন অধিনায়ক। আরেকটি ফাইনালকে অধিনায়ক মনে করেন আরও একটি সুযোগ।
বাংলাদেশ দল:
তামিম ইকবাল, মোহাম্মদ মিঠুন, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহীম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সাব্বির রহমান, মেহেদী হাসান মিরাজ, মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), সাইফউদ্দিন, রুবেল হোসেন ও মোস্তাফিজুর রহমান।
শ্রীলঙ্কা দল:
উপল থারাঙ্গা, দানুশকা গুনাথিলকা, কুশল মেন্ডিস, দিনেশ চান্দিমাল, নিরোশান ডিকভেলা, আসেলা গুনারত্নে, থিসারা পেরেরা, আকিলা ধনঞ্জয়া, শিহান মদুশঙ্কা, দুশমন্থ চামিরা, সুরঙ্গা লাকমল।