ছবিতে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা
বছরের শুরুতে নতুন চমক নিয়ে হাজির আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ডিআইটিএফ)-২০২০। এবারের মেলায় বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। কমেছে স্টল সংখ্যা, বেড়েছে টিকেটের মূল্য। পরিবর্তন আনা হয়েছে সাজ-সজ্জায়, গেট সাজানো হয়েছে নতুন ডিজাইনে।
১ জানুয়ারিতে শুরু হওয়া এ মেলার কার্যক্রম চলবে আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। বরাবরের মতো এবারও শেরেবাংলা নগরে শুরু হয়েছে এ মেলা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার সকাল ১০টায় ২৫তম এ বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন করেন।
সাতদিন পেরিয়ে গেলেও তেমন জমে উঠেনি জমে ওঠেনি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা।
৩২ একর জমির ওপর নতুন রূপে সাজানো হয়েছে এবারের বাণিজ্য মেলা। গেট সাজানো হয়েছে জাতীয় স্মৃতিসৌধের আদলে। সঙ্গে রয়েছে পদ্মা সেতুর মডেল।
কিন্তু এতো কিছুর পরেও ক্রেতা-দর্শনার্থী টানতে পারছে না এ মেলা।
গতবারের চেয়ে এবারের মেলায় প্রবেশমূল্য বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি কমানো হয়েছে স্টলের সংখ্যা। এবার মোট স্টল বসবে ৪৮৩টি।
এখনও চলছে অনেক স্টলের নির্মাণ কাজ।
গতবার মোট স্টল ছিল ৬৩০টি। অর্থাৎ স্টল কমেছে ১৫৯টি। এবারের স্টলগুলোর মধ্যে ১১২টি প্যাভেলিয়ন, ১২৮টি মিনি প্যাভেলিয়ন এবং ২৪৩টি বিভিন্ন ক্যাটাগরির স্টল রয়েছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় ক্রেতা-দর্শনার্থীর সংখ্যা কম থাকায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা অলস সময় পার করছেন।
বিকেলের দিকে কিছু ক্রেতা-দর্শনার্থীর দেখা মিললে তা আগেরবারের তুলনায় অনেক কম।
কথা হয় স্টলগুলোর দায়িত্বরত কর্মচারীদের সাথে। তারা জানান, তেমন একটা সাড়া মিলছে না ক্রেতা-দর্শনার্থীদের। বিক্রি হচ্ছে একদমই কম।
যদিও মেলার শুরুর দিয়ে মানুষের আনাগোনা কম থাকে, তাও এবার বরাবরের তুলনায় ক্রেতার সংখ্যা অনেক কম।
ইন্ডিয়ান প্যাভিলিয়নে দায়িত্বে থাকা আরমান বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, আমি তিন বছর ধরে মেলায় কাজ করি। শুরুর দিকে ক্রেতার সংখ্যা কম থাকে এটা ঠিক তবে এবার ক্রেতা-দর্শনার্থী সংখ্যা অন্যবারের তুলনায় অনেক কম।
গত বছরের সঙ্গে তুলনা করলে আমি বলব এবার ক্রেতা-দর্শনার্থীর সংখ্যা চার ভাগের এক ভাগে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের স্টলে মোটামুটি ক্রেতা-দর্শনার্থী আসছেন। কিছু বিক্রিও হচ্ছে। কিন্তু এর পরিমাণ খুবই কম।
গত বছর মেলার প্রথম সপ্তাহে যে বিক্রি করেছিলাম এবার তার পাঁচ ভাগের এক ভাগও বিক্রি করতে পারিনি।
অন্য একটি স্টলের কর্মচারী রবিন বলেন, মেলা শুরু থেকেই আমরা স্টলের পণ্য সাজিয়ে রেখেছি। কিন্তু ক্রেতা পাচ্ছি না।
হাতেগোনা কয়েকটি পণ্য বিক্রি হয়েছে। তবে আমরা আশা ছাড়িনি।
আগামী সপ্তাহ থেকেই বিক্রি বাড়বে বলে আশা করছি। বাণিজ্য মেলার মূল বিক্রি হয় শেষ দিন। এর মধ্যে ছুটির দিনগুলোতে ভালো ক্রেতার দেখা মেলে।
কর্তৃপক্ষ জানায় এ বছর মেলায় ভারত, পাকিস্তান, ভুটান, নেপাল, মালদ্বীপ, সিঙ্গাপুর, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, হংকং, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইরান, তুরস্ক, মরিশাস, ভিয়েতনাম, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও অস্ট্রেলিয়া মোট ২১টি দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। খাবারের দোকানগুলোর জন্য খাবারের দাম নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে।
কোনো দোকানে অতিরিক্ত দাম নেয়া হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এছাড়া মেলার মাঠে চালু থাকবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম।
মেলায় খোলা থাকবে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত। অনলাইনে মেলার যাবতীয় তথ্য জানতে পারবেন ক্রেতা-দর্শনার্থীরা।
মেলায় আসা দর্শনার্থীদের জন্য গতবারের তুলনায় এবার সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হয়েছে।
পাশাপাশি মনোরঞ্জন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার জন্য এবার দু’টি ফোয়ারা, ইকোপার্ক, বিশ্রামাগার, মা ও শিশু কেন্দ্র, ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার ও শিশু পার্ক রাখা হয়েছে। শিশু পার্কে খেলার জন্য স্বল্পমূল্যে টিকেট কেনা যাবে।
বাংলাদেশ জার্নাল/এইচকে