ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

আমার হাতে গড়া ছাত্রনেতাদের চলে যাওয়া দুঃখজনক: প্রধানমন্ত্রী

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ১৯ জানুয়ারি ২০২০, ২১:৪৯  
আপডেট :
 ১৯ জানুয়ারি ২০২০, ২১:৫৪

ছাত্রনেতাদের চলে যাওয়া দুঃখজনক
সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

দেশে উন্নতি হচ্ছে কিন্তু আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে বিশেষ করে পঁচাত্তরের পর বিরাট অবদান রেখে গেছেন সেই সমস্ত ছাত্র নেতারা চলে (মারা) যচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রোববার জাতীয় সংসদে চলমান একাদশ জাতীয় সংসদের সদস্য আব্দুল মান্নানের মৃত্যুতে আনীত শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার হাতে গড়া ছাত্রনেতারা যারা সামনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দেবে, আওয়ামী লীগকে এগিয়ে নিয়ে যাবে, ভবিষ্যতে আমরা যখন থাকব না, এরাই আওয়ামী লীগকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আমার কষ্ট হয় যখন আমার চোখের সামনে ওরা চলে যায় যা সত্যিই খুব দুঃখজনক।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মনে একটা কষ্ট নিয়ে আজ দাঁড়াতে হল। পরপর তিনজন সংসদ সদস্য আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। আমি ১৯৮১ সালে ফিরে আসার পর মান্নানকে ছাত্রনেতা হিসেবে পেয়েছিলাম। ১৯৮৩ সালে তাকে ছাত্রলীগের সভাপতি করি। ছাত্রলীগের সভাপতি করার একটা ঘটনা আছে। যাদের ছাত্রলীগের সভাপতি করা হতো আমি তাদের ইন্টারভিউ নিতাম, একা একা।

সংসদ নেতা বলেন, অনেকের ইন্টারভিউ নিতে গিয়ে যখন মান্নানকে বলছি যদি তোমাকে আমি না বানাই, তাহলে তুমি কী করবে? অনেকে হাউমাউ করে কেঁদে দিত। কিন্তু একটি ছেলেকে পেয়েছিলাম সে বলে দিয়েছিল না বানালে কিছু করার নেই, আমি আপনার সঙ্গে রাজনীতি করে যাব। আমি সিদ্ধান্ত নিলাম তাকেই বানাব। ওই সময়টা ছাত্রলীগের খুব খারাপ সময় ছিল। অনেকেই ছাত্রলীগ ছেড়ে চলে গিয়েছিল ১৯৮২ সালে। সে কারণে ছাত্রলীগকে সুসংগঠিত করার খুব দরকার ছিল এবং তার সেই সাংগঠনিক দক্ষতা ছিল। সে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছিল।

তিনি বলেন, পরবর্তী সময়ে তাকে আওয়ামী লীগে নিয়ে আসি, আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক ছিল। বগুড়ার মতো জায়গায় ওকে নমিনেশন দিলাম। খুব কঠিন জায়গা ছিল, এলাকাটা দুর্গম এবং রাস্তাঘাট ছিল না। খুবই অনুন্নত একটি জায়গা। সেখানে তাকে যখন নমিনেশন দিলাম, মান্নান সেখানে থেকে জিতে আসল, পর পর তিনবার সেখান থেকে সংসদ সদস্য।

স্মৃতিচারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ঠিক মৃত্যুর দুইদিন আগে আমার সঙ্গে অনেক কথা বলল। আমাদের সেন্ট্রাল কমিটিতে নানক আসছে, ও আসতে পারেনি। বোধহয় মনে একটু দুঃখ ছিল। আমি বললাম আমি তো তোমাদের কাউকে ফেলে দেইনি। তুমি আওয়ামী লীগে ছিলে এবং তোমাকে আমি নমিনেশন দিয়েছি, সংসদ সদস্য হয়েছ। কথা বলার সময় দেখলাম তার শরীরটা একটু খারাপ। আমি ওকে বললাম তোমার শরীর মনে হয় ভালো না, তুমি একটু ভালোভাবে চিকিৎসা কর। ঠিক তারপরই হাসপাতালে ভর্তি।

তিনি বলেন, হাসপাতালে ভর্তির পর আমি প্রতিদিন একবার ডাক্তার সৌরভের সঙ্গে কথা বলতাম, যেদিন মারা গেল তার আগের দিন রাত ৯টার সময় ডাক্তার সৌরভের সঙ্গে কথা বললাম। প্রতিদিন সৌরভের সঙ্গে কথা বলে ওর স্বাস্থ্যের খোঁজ-খবর নিতাম। ওইদিনই ডাক্তার বললেন আপা ওর শরীরের অবস্থা ভালো না। ওকে আমরা কিছু করতে পারব বলে মনে হয় না। শরীরটা খুবই খারাপ। এমন অবস্থা ছিল যে, আমি বলেছিলাম ওকে যদি বাইরে পাঠানো যায়, ডাক্তার বলল যে বাইরে পাঠানোর অবস্থা নেই। পরদিন সকাল বেলায় মৃত্যুর খবর। এটি সব থেকে দুঃখজনক।

আলোচনার পর শোক প্রস্তাবটি সংসদে গৃহীত হয়। প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও এ সময় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মো. নাসিম, মতিয়া চৌধুরী, কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, সাবেক মন্ত্রী শাহজাহান খান, গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমদ পলক, ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীর, উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ, মৃণাল কান্তি দাস, মোসলেম উদ্দিন, নজরুল ইসলাম বাবু, আনোয়ার আবেদীন খান, তাজুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির মশিউর রহমান রাঙ্গা, পীর ফজলুর রহমান, জাতীয় এক্যফ্রন্টের সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ।

বাংলাদেশ জার্নাল/এইচকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত