ভুলে ভরা স্মার্টকার্ড, চরম ভোগান্তি
রূপগঞ্জ প্রতইনিধি
প্রকাশ : ২৭ জানুয়ারি ২০২০, ১৬:৪৫
'নামেই শুধু স্মার্ট কার্ড। কাজের বেলায় এনালগ কার্ড। স্বামীর নামের জায়গায় বাপের নাম, বানানে অসংখ্য ভুল। প্রায় সবই তথ্যই ওলটপালট। এগুলো আবার সংশোধন করতে দাও টাকা! মজাতো আমলা কামলাদেরই। আমাদেরতো হয়রানির শেষ নেই'। এভাবেই ক্ষোভের সাথে কথাগুলো বলছিলেন এক ভুক্তভোগী গৃহবধূ নাজনীন সুলতানা মনি।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে অনেকেই অভিযোগ করে বলছেন, ভুলে ভরা জাতীয় স্মার্টকার্ড। কারো কার্ডে নিজের নাম, কারো কার্ডে বাবার নাম। আবার কারো কারো কার্ডে দুইটাই ভুল। অনেকের কার্ডে ঠিকানা ভুল। অনেক কার্ডে ইংরেজি লিখতে ভুল। মোটকথা জাতীয় পরিচয়পত্র নামে স্মার্ট কার্ডগুলো একেবারেই ভুলে ভরা।
এই কার্ড নিয়ে মানুষের ভোগান্তির আর শেষ নাই। কিভাবে এর সংশোধন হবে এ নিয়ে মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। এ ভুলের জন্য দায়ী কারা? উত্তরে বলা যায় যারা লেখালেখির কাজ করেছে তারাই ভুল করেছে। তাহলে জনগণের কি হবে? এমনটাই প্রশ্ন করছেন অনেকে।
গত রোববার নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের মুজিবুর রহমান ভুইয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গোলাকান্দাইর ইউনিয়ন ১নং ওয়ার্ডের ভোটারদের হাতে তুলে দেয়া হয় জাতীয় পরিচয়পত্র নামের এই স্মার্ট কার্ড। তখনই দেখা যায় এ ধরণের ভুলের চিত্র। কার্ডের ভুল নিয়ে চলে নানা সমস্যার কথা।
নারায়ণগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার অফিসের অফিসার মোঃ কফিল উদ্দিন বলেন, যে সকল স্মার্টকার্ডে নাম, বাবার নাম বা ঠিকানা ভুল হয়েছে তাদের ভোগান্তির শেষ নেই। সংশোধনের ব্যাপারে কথা হলে জানা যায়, এই কার্ডে ভুল সংশোধন করতে হলে নির্বাচন অফিসে গিয়ে ফরম পূরণ করে জমা দিয়ে সংশোধন করতে হবে।
সচেতন মহল বলছে, গ্রামের সহজ সরল মানুষ এই স্মার্টকার্ড কিভাবে কোথায় গিয়ে সংশোধন করতে হবে আদৌ তারা জানে না।
আমলাবকালী এলাকার রুপালী বেগম জানান, তার বাবার নাম মোঃ হাবিবুর রহমান খাঁন, সেখানে লেখা হয়েছে আঃ রহমান খান। তার এসএসসি সার্টিফিকেটে বাবার নাম দেয়া আছে মোঃ হাবিবুর রহমান খাঁন।
গোলাকান্দাইল মধ্যপাড়া এলাকার সুমন মজুমদার জানান, তার জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুলে লেখা হয়েছে শুমন মজুমদার। তার এই ভুলের কারণে বিদেশে (ভারত) চিকিৎসা করতে গিয়ে পড়তে হয়েছ বিপদে। এসময় ডাক্তার তার নাম ভুল থাকায় চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র লিখতে রাজি হয়নি।
মাধবদী এলাকার পারভেজ মিয়া বলেন, তার ইংরেজি নাম ভুল করা হয়েছে। সে নিজেই তার নাম লিখে দিয়েছে, সেখানে তথ্য সংগ্রহকারীরা কেমন করে তার নামে ভুল করে? এমন প্রশ্ন করে পারভেজ।
শুধু পারভেজ বা রুপালীই নয় জাতীয় পরিচয়পত্রের মধ্যে এরকম শত শত নাম ভুল করে রেখেছে বলে জানিয়েছেন অনেকেই।
পারভেজ বলেন, যারা ভোটার তালিকা বা তর্থ সংগ্রহ করেছেন তারা অশিক্ষিত ও অর্ধশিক্ষিত লোক ছিল। যে কারণে এত ভুলের শিকার হয়েছে সাধারণ ভোটাররা। শিক্ষিত লোক দিয়ে ভোটার তালিকা বা তথ্য সংগ্রহের কাজ করার দাবি জানান তিনি।
এছাড়াও তিনি আরো বলেন, ইতিমধ্যে যেসকল স্মার্টকার্ডে ভুল করা হয়েছে সে সকল কার্ডগুলো সহজভাবে সংশোধন করা হোক।
বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে
