ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় এএসআই প্রত্যাহার

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৭ জানুয়ারি ২০২০, ২৩:২৩  
আপডেট :
 ২৭ জানুয়ারি ২০২০, ২৩:২৮

সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় এএসআই প্রত্যাহার

রাজধানীর পরীবাগে দুই সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) শাহবাগ থানার সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মামুন হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

ঘটনা তদন্তে রমনা বিভাগের উপকমিশনার সাজ্জাদুর রহমানকে নির্দেশ দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।

সোমবার বাংলাদেশ জার্নালকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান।

তিনি জানান, অভিযুক্ত এএসআই মামুনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার ডিএমপির কমিশনার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন বাংলা ট্রিবিউনের সাংবাদিক শেখ জাহাঙ্গীর আলম (৩০)।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, গত ২০ জানুয়ারি (সোমবার) সন্ধ্যায় মিন্টো রোডের ডিএমপি মিডিয়া সেন্টার থেকে মোটরসাইকেলযোগে পান্থপথে কর্মস্থল বাংলা ট্রিবিউন অফিসে যাচ্ছিলেন তিনি। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশের স্টাফ রিপোর্টার (ক্রাইম) সাজ্জাদ মাহমুদ খান ওরফে সাজ্জাদ হোসেন। তারা পরীবাগ লিংকরোড দিয়ে যাওয়ার সময় যানজটের মধ্যে আটকা পড়েন।

বিপরীত দিক থেকে মোটরসাইকেলযোগে আসা শাহবাগ থানার এএসআই মামুন হোসেন দ্রুতগতিতে জাহাঙ্গীর আলমের ডান পায়ে চাপা দেন। তারা এর প্রতিবাদ করলে এএসআই মামুন ইচ্ছাকৃতভাবে আরও দুই-তিনবার মোটরসাইকেলের পিকআপ বাড়িয়ে আবারও চাপা দিতে থাকেন এবং গালাগালি করতে থাকেন। তারা পুলিশ সদস্যের এই অপেশাদার আচরণের প্রতিবাদ করলে তাদের হত্যার হুমকি দেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।

জাহাঙ্গীর ও সাজ্জাদ জানান, প্রতিবাদ করায় এএসআই মামুন অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে হুমকি দিয়ে বলতে থাকেন, ‘আমি নামলে কিন্তু মারবো। তোকে পিষে ফেলবো। তাড়াতাড়ি গাড়ি সরা, নইলে মারবো।’ এই বলে, ‘বাস্টার্ড’ বলে গালিও দেন। এ সময় পথচারী এবং আশপাশের দোকানদাররা ঘটনাস্থলে জড়ো হয়। পরে তিনি জাহাঙ্গীরকে লাথি মেরে ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়েন।

পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার সাজ্জাদুর রহমান জানান, এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী অভিযুক্ত এএসআই মামুনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ভুয়া নম্বর প্লেট ব্যবহার করতেন তিনি

এদিকে এএসআই মামুনের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্যক্তিগত মোটরসাইকেলে জালিয়াতি করে ডিএমপি কমিশনারের নামে রেজিস্ট্রেশনকৃত মোটরসাইকেলের নম্বর প্লেট ব্যবহার করতেন তিনি। ঘটনার পর ওই নম্বর প্লেটের (ঢাকা মেট্রো হ-১২-৭৫০৫) সূত্র ধরে বিআরটিএতে অনুসন্ধান করে জানা যায়, গাড়িটি ডিএমপি কমিশনার মহোদয়ের নামে নিবন্ধন করা।

ডিএমপির ট্রাফিক পূর্ব বিভাগের এটিএসআই আলী আফজাল ওই মোটরসাইকেলটি ব্যবহার করেন। পরে যোগাযোগ করা হলে আলী আফজালের গাড়িটি রাজারবাগ ট্রাফিক ব্যারাকে পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে বলে জানা যায়।

এএসআই মামুনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এটিএসআই আলী আফজালের সরকারি মোটরসাইকেলের নম্বর প্লেটটি জালিয়াতি করে নিজের ব্যক্তিগত মোটরসাইকেলে ব্যবহারের কথা স্বীকার করেছেন।

ভূক্তভোগী দুই সাংবাদিক শেখ জাহাঙ্গীর আলম ও সাজ্জাদ মাহমুদ খান বলেন, ‘আমরা ন্যায় বিচারের জন্য কমিশনারের কাছে অভিযোগ দিয়েছি। একটি শৃঙ্খল বাহিনীর সদস্য হয়ে এএসআই মামুন যে ব্যবহার করেছে তা অপেশাদার। আমরা তার শাস্তির দাবি জানাই। যাতে ভবিষ্যতে কোনো পুলিশ সাধারণ মানুষের সঙ্গে এ ধরনের অপেশাদার আচরণ করতে না পারে।’

বাংলাদেশ জার্নাল/আর

  • সর্বশেষ
  • পঠিত