ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

ঢাকা দক্ষিণের নগরপিতা তাপস, উত্তরে ফের আতিক

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০৩:০৭  
আপডেট :
 ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১১:১১

ঢাকা দক্ষিণের নগরপিতা তাপস, উত্তরে ফের আতিক

ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১ হাজার ১৫০টি কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকে তাপস পেয়েছেন ৪ লাখ ২৪ হাজার ৫৯৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন পেয়েছেন ২ লাখ ৩৬ হাজার ৫১২ ভোট।

অপরদিকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম। মোট ১ হাজার ৩১৮টি কেন্দ্রের সবকটির ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী তিনি পেয়েছেন ৪ লাখ ৪৭ হাজার ২১১ ভোট। বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী তাবিথ আউয়াল পেয়েছেন ২ লাখ ৬৪ হাজার ১৬১ ভোট।

শনিবার সারাদিন ভোট গ্রহণ শেষে রাতে প্রথমে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ফল প্রকাশ করা হয়। এরপর রাত প্রায় পৌনে ৩ টার দিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। ফলাফল ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশন।

দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনে ভোটের হার যথাক্রমে ২৯ শতাংশ ও ২৫ দশমিক ৩০ শতাংশ।

এদিকে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ এনে ভোটের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি। পাশাপাশি রোববার সকাল ছয়টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হরতালের ডাক দিয়েছে দলটি। শনিবার রাতে দলের নয়া পল্টনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিএনপির ডাকা হরতালকে সমর্থন দিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। তবে বিএনপি'র ডাকা হরতালকে প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ।

বিএনপির অভিযোগ, নির্বাচনের নামে তামাশা হয়েছে জাতির সঙ্গে। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি।

তবে প্রত্যাশা থাকলেও দুই সিটিতে ভোটারদের উপস্থিতি কম ছিলো। সকালে শীত থাকায় ধারণা করা হয়েছিল দুপুরের দিকে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে। কিন্তু দুপুর গড়িয়ে বিকালেও ভোট উপস্থিতি কাঙিক্ষত মাত্রায় লক্ষ্য করা যায়নি।

শনিবার সকাল ৮টায় ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি ও ডিএসসিসি) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়। যা চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

এদিন নির্বাচন কমিশনের অনুমোদিত যানবাহনের বাইরে যানচলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকায় ভোটের সময় ঢাকার চিত্র পাল্টে যায়। চিরচেনা যানজট কিংবা মানুষের ভিড় ছিল না। রাস্তা ছিল পুরো ফাঁকা।

এছাড়া ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৩৪ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার সাদেক খান রোডে দায়িত্ব পালনকালে একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের প্রতিবেদক মোস্তাফিজুর রহমান সুমনকে কুপিয়ে আহত করে দুর্বৃত্তরা। হামলায় আহত হয়েছেন আরো বেশ কয়েকজন সাংবাদিক।

অন্যদিকে ঢাকা উত্তরের ৫৪টি কেন্দ্রের মধ্যে ৪৩টিতে ধানের শীষের পোলিং এজেন্ট ঢুকতে না দেয়া বা মারধর করে বের করে দেয়ার অভিযোগও পাওয়া যায়। এছাড়া দক্ষিণেও বিভিন্ন কেন্দ্রে বিএনপির এজেন্টদের দেখা যায়নি।

এবারের সিটি নির্বাচনে ঢাকা উত্তরে মেয়র পদে প্রার্থী ছিলেন ৬ জন। কাউন্সিলর পদে ২৫১ জন এবং সংরক্ষিত আসনে ৭৭ জন নারী প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

উত্তর সিটিতে ওয়ার্ড ছিলো ৫৪টি। ঢাকা দক্ষিণে মেয়র পদের জন্য লড়ছেন ৭ জন। কাউন্সিলর পদে ৩৩৫ জন এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নারী প্রার্থী হয়েছিলেন ৮২ জন। দক্ষিণে ওয়ার্ড ছিলো ৭৫টি।

ঢাকায় ভোটার সংখ্যা ৫৪ লাখ ৬৩ হাজার ৪৬৭ জন। ঢাকা উত্তর সিটির ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১ হাজার ৩১৮। এসব কেন্দ্রে ভোট কক্ষের সংখ্যা ছিলো ৭ হাজার ৮৪৬টি। দক্ষিণ সিটিতে ১ হাজার ১৫০টি ভোটকেন্দ্র এবং ভোট কক্ষ ছিলো ৬ হাজার ৫৮৮টি।

এবার ঢাকা উত্তরে ৮২৬ আর দক্ষিণে ৭২১টি কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে ঘোষণা করা হয়েছিলো। এই কেন্দ্রগুলোতে বাড়তি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও নজরদারি ছিলো প্রশাসনের।

ভোটকে কেন্দ্র করে রাজধানী জুড়ে ছিলো কড়া নিরাপত্তা। যানবাহন চলাচলেও কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছিলো। ৩০ জানুয়ারি রাত ১২টা থেকে ২ ফেব্রুয়ারি সকাল ৬টা পর্যন্ত মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়।

সিটি নির্বাচন এবার নানান দিক থেকে ছিলো আলোচিত। প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীরা সমানতালে প্রচার চালিয়েছেন। ব্যাপক ধরনের ধরপাকড়, হামলার অভিযোগ অন্যবারের চেয়ে কম ছিলো।

বিএনপির দুই মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও ইশরাক হোসেনের গণসংযোগে হামলার ঘটনা ছাড়া বিএনপি থেকেও বড় কোনো অভিযোগ ছিলো না। দুই দলের কর্মীদের মধ্যেই উৎসবের আমেজ ছিলো।

সম্প্রতি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেছিলেন, এবারের নির্বাচনে তাদের বড় পাওয়া সবাইকে নিয়ে রাস্তায় বের হতে পারা।

প্রধান চার প্রতিদ্বন্দ্বী আতিকুল ইসলাম, তাবিথ আউয়াল, শেখ ফজলে নূর তাপস, ইশরাক হোসেন তাদের প্রচারে অকপটে স্বীকার করেছেন, ঢাকার অবস্থা খুব ভালো নয়। তারা ঢাকাকে বাঁচাতে চান।

এছাড়া গত বছরের ডেঙ্গু রোগের ভয়াবহতা নিয়ে চারজনই কথা বলেছেন। ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধে তারা মশা নিধনের কার্যক্রমকে নিজেদের ইশতেহারে প্রাধান্য দিয়েছেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/আর

  • সর্বশেষ
  • পঠিত