ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

ভুয়া সমিতি দিয়ে টাকা আত্মসাৎ, প্রতারক গ্রেপ্তার

  ধামরাই প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০৪:৫৮

ভুয়া সমিতি দিয়ে টাকা আত্মসাৎ, প্রতারক গ্রেপ্তার

ধামরাইয়ে ভুয়া নাম দিয়ে সমিতি করে প্রতারণার মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে তাহের আলী (৩৭) ওরফে বাদশা মন্ডল নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করা হয়েছে।

সাভার উপজেলা আওয়াামী লীগের সভাপতি হাসিনা দৌলার নাম ব্যবহার করে ‘গাজী গ্রুপের ব্যবসায়ী সঞ্চয় সমিতির’ নাম দিয়ে একটি ভুয়া প্রতিষ্ঠান খোলে এ প্রতারণা করা হয়।

মাত্র দুই সপ্তাহে গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রায় ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় তাহের আলী। তাকে পুলিশে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী। এসময় তার কাছ থেকে নগদ ১ লাখ ৮১ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। তাকে ১ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।

আটক তাহের আলী (৩৭) ওরফে বাদশা মন্ডল আশুলিয়া থানার ডেন্ডাবর এলাকার তাইজুদ্দিনের ছেলে।

ভুক্তভোগী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পৌরসভার বড় চন্দ্রাইলের মইনাল হোসেনের ভবন ভাড়া নিয়ে গাজী গ্রুপে ব্যবসায়ী সঞ্চয় সমিতির নামে একটি কার্যালয় খোলে তাহের আলী মন্ডল। চতুর বাদশা মন্ডল তার কার্যালয়ের কক্ষে স্থানীয় সংসদ সদস্য বেনজীর আহমদ ও সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মিসেস হাসিনা দৌলার ছবি টানিয়ে রেখেছে। সে কৌশলে স্থানীয় ১৩ জন নারীকে মাঠকর্মী হিসেবে মৌখিক নিয়োাগ দেয়। তাদের প্রত্যেকের বেতন ধরা হয় ১৩ হাজার টাকা।

মাঠকর্মীদের প্রথমে গাজী গ্রুপের ব্যবসায়ী সঞ্চয় সমিতির ভিজিটিং কার্ড বানিয়ে বিভিন্ন এলাকায় দোকানে সরবরাহ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। ওই ভিজিটিং কার্ডে হাসিনা দৌলাকে সংস্থার সভাপতি দেখানো হয়েছে। এরপর ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রথমে একশত টাকা ভর্তি ফি আদায় করা হয়। পরে প্রতি গ্রাহককে এক লাখ টাকা ঋণ দেওয়ার শর্তে তাদের কাছ থেকে প্রতি লাখে ১০ হাজার টাকা অগ্রিম সঞ্চয় গ্রহণ করেন মাঠকর্মীরা। মাঠকর্মীরা সব সঞ্চয় তাহের আলীর কাছে জমা দেয়। এভাবে ১২ দিনে প্রায় ১০ লাখ টাকা গ্রাহকদের কাছ থেকে সঞ্চয় টাকা আত্মসাৎ করে অভিযুক্ত।

এর মধ্যে বৃহস্পতিবার স্থানীয় কাউন্সিলর মালেকা বেগম ভিজিটিং কার্ডে হাসিনা দৌলার নাম দেখতে পেয়ে বিষয়টি নিয়ে তার সন্দেহ হয়। পরে মালেকা বেগম হাসিনা দৌলার কাছে ফোন করে জানতে পারেন এটা ভুয়া। তখন তাৎক্ষণিকভাবে বাদশা মন্ডলকে আটক করে পুলিশের কাছে দেয় স্থানীয়রা। খবর পেয়ে অর্ধশত গ্রাহক ও মাঠকর্মী ধামরাই থানায় জড়ো হয়।

পরে নদী রানী নামের এক মাঠকর্মী বাদশামন্ডলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

মাঠকর্মী উপজেলার কাকনাইল গ্রামের নিপা মন্ডল, মাহবুবা, বালিয়া পূর্ব পাড়ার রেবেকা আক্তার, মঙ্গলবাড়ি গ্রামের সুরভি আক্তার, কেলিয়া গ্রামের তানিয়া আক্তারসহ কয়েকজন মাঠকর্মী বলেন, ‘আমাদের প্রতি মাসে ১৩ হাজার টাকা বেতন দেওয়ার কথা বলে নিয়োগ দেয় বাদশা মন্ডল। গ্রাহক সংগ্রহ করে ভর্তি ও ঋণ দেওয়ার শর্তে গ্রাহকদের সঞ্চয় প্রায় ১০ লাখ টাকা জমা দেওয়া হয় টার কাছে।

নয়ার হাটের ব্যবসায়ী জিহাদ আলীর কাছ থেকে ৩০ হাজার, মানিক হালদারের কাছ থেকে ৮ হাজার, আমবাগানের মিজানুর সিকদারের কাছ থেকে ২০ হাজারসহ আরও অনেকের কাছ থেকে এভাবে টাকা নেওয়া হয়েছে। তারা জানান, কার্যালয়ে হাসিনা দৌলারছবি, ভিজিটিং কার্ডে এবং সঞ্চয় ও ঋণদান পাশবহিতে হাসিনা দৌলার নাম দেখে স্বাভাবিকভাবে বিশ্বাস করতে হয়েছে যে এটা কোন ভুয়া সংস্থা হবেনা।

মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা ধামরাই থানার এসআই আবুল খায়ের মিয়া বলেন, গাজী গ্রুপের নাম ও হাসিনা দৌলার নাম ব্যবহার করে প্রতারক বাদশা মন্ডল গ্রাহকদের কাছ থেকে ৭ লাখ ৭৭ হাজার টাকা আত্মসাৎ করার ঘটনায় মামলা হয়েছে। তাকে ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হলে। আদালত একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/আর

  • সর্বশেষ
  • পঠিত